এজেকিয়েল অধ্যায় 43
1. পরে তিনি আমাকে পূর্ব্বাভিমুখ দ্বারের নিকটে আনিলেন;
2. আর দেখ, পূর্ব্বদিক্ হইতে ইস্রায়েলের ঈশ্বরের প্রতাপ আসিল; তাঁহার শব্দ জলরাশির শব্দের ন্যায়, এবং তাঁহার প্রতাপে পৃথিবী দীপ্তিময় হইল।
3. আমি যে দৃশ্য দেখিয়াছিলাম, অর্থাৎ যখন নগরের বিনাশ করিতে আসিয়াছিলাম, তখন যে দৃশ্য দেখিয়াছিলাম, এ তদ্রূপ দৃশ্য, আর কবার নদীর তীরে যে দৃশ্য দেখিয়াছিলাম, তদ্রূপ দৃশ্য; তখন আমি উপুড় হইয়া পড়িলাম।
4. আর সদাপ্রভুর প্রতাপ পূর্ব্বাভিমুখ দ্বারের পথ দিয়া গৃহে প্রবেশ করিল।
5. পরে আত্মা আমাকে উঠাইয়া অন্তঃপ্রাঙ্গণে আনিলেন; আর দেখ, গৃহ সদাপ্রভুর প্রতাপে পরিপূর্ণ হইল।
6. আর আমি শুনিলাম, গৃহের মধ্য হইতে এক জন আমার কাছে কথা বলিতেছেন, তখন এক ব্যক্তি আমার পার্শ্বে দণ্ডায়মান হইলেন।
7. তিনি আমাকে কহিলেন, হে মনুষ্য-সন্তান, ইহা আমার সিংহাসনের স্থান, এবং ইহাই আমার পদতল রাখিবার স্থান, এই স্থানে ইস্রায়েল-সন্তানগণের মধ্যে আমি চিরকাল বাস করিব; এবং ইস্রায়েল-কুল, তাহারা বা তাহাদের রাজগণ, আপন আপন ব্যভিচার দ্বারা ও তাহাদের উচ্চস্থলীতে রাজগণের শব দ্বারা আমার পবিত্র নাম আর অশুচি করিবে না।
8. তাহারা আমার গোবরাটের কাছে তাহাদের গোবরাট, ও আমার চৌকাঠের পার্শ্বে তাহাদের চৌকাঠ দিত, এবং আমার ও তাহাদের মধ্যে কেবল এক ভিত্তি ছিল; আর তাহারা আপনাদের কৃত জঘন্য ক্রিয়া দ্বারা আমার পবিত্র নাম অশুচি করিত, এই নিমিত্ত আমি নিজ ক্রোধানলে তাহাদিগকে গ্রাস করিয়াছি।
9. এখন তাহারা আপনাদের ব্যভিচার ও আপনাদের রাজাদের শব আমা হইতে দূর করুক, তাহাতে আমি চিরকাল তাহাদের মধ্যে বাস করিব।
10. হে মনুষ্য-সন্তান, তুমি ইস্রায়েল-কুলকে এই গৃহের কথা জ্ঞাত কর, যেন তাহারা আপন আপন অপরাধের জন্য লজ্জিত হয়, আর তাহারা ইহার সকল স্থান পরিমাণ করুক।
11. যদি তাহারা আপনাদের কৃত সমস্ত কর্ম্ম প্রযুক্ত লজ্জিত হয়, তবে তুমি তাহাদিগকে গৃহের আকার, গঠন, নির্গমন-স্থান ও প্রবেশ-স্থান সকল, তাহার সমস্ত আকৃতি ও সমস্ত বিধি, তাহার সমস্ত আকৃতি ও সমস্ত ব্যবস্থা জ্ঞাত কর, আর তাহাদের সাক্ষাতে লিখ; এবং তাহারা তাহার সমস্ত আকৃতি ও সমস্ত বিধি রক্ষা করিয়া তদনুযায়ী কর্ম্ম করুক।
12. গৃহের ব্যবস্থা এই; পর্ব্বতের শিখরে চারিদিকে তাহার সমস্ত পরিসীমা অতি পবিত্র। দেখ, ইহাই সেই গৃহের ব্যবস্থা।
13. হস্তানুসারে যজ্ঞবেদির পরিমাণ সকল এই। প্রত্যেক হস্ত এক হস্ত চারি অঙ্গুলি পরিমিত। তাহার মূল এক হস্ত [উচ্চ] ও এক হস্ত প্রস্থ, এবং চারিদিকে তাহার প্রান্তে স্থিত নিকাল এক বিতস্তি পরিমিত; ইহা যজ্ঞবেদির তল।
14. আর ভূমিতে স্থিত মূল অবধি অধঃস্থ সোপানাকৃতি পর্য্যন্ত দুই হস্ত ও তাহার পরিসর এক হস্ত; আবার সেই ক্ষুদ্র সোপানাকৃতি অবধি বৃহৎ সোপানাকৃতি পর্য্যন্ত চারি হস্ত ও তাহার প্রস্থ এক হস্ত।
15. আর উপরিস্থ বেদি চারি হস্ত; এবং পুণ্যচুল্লী হইতে তাহার ঊর্দ্ধে চারি শৃঙ্গ হইবে।
16. আর সেই পুণ্যচুল্লী বারো হস্ত দীর্ঘ ও বারো হস্ত প্রস্থ, চারিদিকে সমান হইবে।
17. সোপানটী চারি পার্শ্বে চৌদ্দ হস্ত দীর্ঘ ও চৌদ্দ হস্ত প্রস্থ, এবং তাহার চারিদিকে স্থিত নিকাল অর্দ্ধ হস্ত পরিমিত, এবং তাহার মূল চারিদিকে এক হস্ত পরিমিত হইবে, এবং তাহার ধাপগুলি পূর্ব্বাভিমুখ হইবে।
18. পরে তিনি আমাকে কহিলেন, হে মনুষ্য-সন্তান, প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, সেই যজ্ঞবেদিতে হোমবলিদান ও রক্ত প্রক্ষেপ করণার্থে যে দিন তাহা প্রস্তুত করা যাইবে, সেই দিনের জন্য তৎসংক্রান্ত বিধি এই।
19. প্রভু সদাপ্রভু কহেন, সাদোক বংশজাত যে লেবীয় যাজকগণ আমার পরিচর্য্যা করিতে আমার নিকটে উপস্থিত হয়, তাহাদিগকে তুমি পাপার্থক বলিদানের জন্য এক যুবাবৃষ দিবে।
20. পরে তাহার রক্তের কিয়দংশ লইয়া বেদির চারি শৃঙ্গে, সোপানের চারি প্রান্তে ও চারিদিকে তাহার নিকালে সেচন করিয়া বেদি মুক্তপাপ করিবে, ও তাহার জন্য প্রায়শ্চিত্ত করিবে।
21. পরে তুমি ঐ পাপার্থক বৃষ লইয়া যাইবে, আর সে ধর্ম্মধামের বাহিরে গৃহের নিরূপিত স্থানে তাহা পোড়াইয়া দিবে।
22. আর তুমি দ্বিতীয় দিনে পাপার্থক বলিরূপে এক নির্দ্দোষ ছাগ উৎসর্গ করিবে; তাহাতে [যাজকেরা] বৃষ দ্বারা যেমন করিয়াছিল, তেমনি যজ্ঞবেদি মুক্তপাপ করিবে।
23. উহার মুক্তপাপ করণ সমাপ্ত হইলে পর তুমি নির্দ্দোষ এক যুবাবৃষ ও পালের নির্দ্দোষ এক মেষ উৎসর্গ করিবে।
24. তুমি তাহাদিগকে সদাপ্রভুর সম্মুখে উপস্থিত করিবে, এবং যাজকগণ তাহাদের উপরে লবণ ফেলিয়া দিয়া সদাপ্রভুর উদ্দেশে হোমার্থে তাহাদিগকে বলিদান করিবে।
25. সপ্তাহ কাল প্রতিদিন তুমি পাপার্থক বলিরূপে এক এক ছাগ উৎসর্গ করিবে; আর তাহারা নির্দ্দোষ এক যুবাবৃষ ও পালের এক মেষ উৎসর্গ করিবে।
26. সপ্তাহ কাল তাহারা যজ্ঞবেদির জন্য প্রায়শ্চিত্ত করিবে, তাহা শুচি করিবে ও সংস্কার দ্বারা পূত করিবে।
27. সেই সকল দিন অতীত হইলে পর অষ্টম দিন হইতে যাজকেরা সেই যজ্ঞবেদিতে তোমাদের হোমার্থক ও মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করিবে, তাহাতে আমি তোমাদিগকে গ্রাহ্য করিব; ইহা প্রভু সদাপ্রভু বলেন।