পবিত্র বাইবেল

বাইবেল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া (BSI)
যোহন

যোহন অধ্যায় 16

1 এই সকল কথা তোমাদিগকে কহিলাম, যেন তোমরা বিঘ্ন না পাও। 2 লোকে তোমাদিগকে সমাজ হইতে বাহির করিয়া দিবে; এমন কি, সময় আসিতেছে, যখন যে কেহ তোমাদিগকে বধ করে, সে মনে করিবে, আমি ঈশ্বরের উদ্দেশে উপাসনা-বলি উৎসর্গ করিলাম। 3 তাহারা এই সকল করিবে, কারণ তাহারা না পিতাকে, না আমাকে জানিতে পারিয়াছে। 4 কিন্তু, আমি তোমাদিগকে এ সকল কহিলাম, যেন এই সকলের সময় যখন উপস্থিত হইবে, তখন তোমরা স্মরণ করিতে পার যে, আমি তোমাদিগকে এই সকল বলিয়াছি। প্রথম হইতে এই সমস্ত তোমাদিগকে বলি নাই, কারণ আমি তোমাদের সঙ্গেই ছিলাম। 5 কিন্তু যিনি আমাকে পাঠাইয়াছেন, তাঁহার নিকটে এখন যাইতেছি, আর তোমাদের মধ্যে কেহ আমাকে জিজ্ঞাসা করে না, কোথায় যাইতেছেন? 6 কিন্তু তোমাদিগকে এই সমস্ত কহিলাম, সেই জন্য তোমাদের হৃদয় দুঃখে পরিপূর্ণ হইয়াছে। 7 তথাপি আমি তোমাদিগকে সত্য বলিতেছি, আমার যাওয়া তোমাদের পক্ষে ভাল, কারণ আমি না গেলে, সেই সহায় তোমাদের নিকটে আসিবেন না; কিন্তু আমি যদি যাই, তবে তোমাদের নিকটে তাঁহাকে পাঠাইয়া দিব। 8 আর তিনি আসিয়া পাপের সম্বন্ধে, ধার্ম্মিকতার সম্বন্ধে ও বিচারের সম্বন্ধে, জগৎকে দোষী করিবেন। 9 পাপের সম্বন্ধে, কেননা তাহারা আমাতে বিশ্বাস করে না; 10 ধার্ম্মিকতার সম্বন্ধে, কেননা আমি পিতার নিকটে যাইতেছি, ও তোমরা আর আমাকে দেখিতে পাইতেছ না; 11 বিচারের সম্বন্ধে, কেননা এ জগতের অধিপতি বিচারিত হইয়াছে। 12 তোমাদিগকে বলিবার আমার আরও অনেক কথা আছে, কিন্তু তোমরা এখন সে সকল সহ্য করিতে পার না। 13 পরন্তু তিনি, সত্যের আত্মা, যখন আসিবেন, তখন পথ দেখাইয়া তোমাদিগকে সমস্ত সত্যে লইয়া যাইবেন; কারণ তিনি আপনা হইতে কিছু বলিবেন না, কিন্তু যাহা যাহা শুনেন, তাহাই বলিবেন, এবং আগামী ঘটনাও তোমাদিগকে জানাইবেন। 14 তিনি আমাকে মহিমান্বিত করিবেন; কেননা যাহা আমার, তাহাই লইয়া তোমাদিগকে জানাইবেন। 15 পিতার যাহা যাহা আছে, সকলই আমার; এই জন্য বলিলাম, যাহা আমার, তিনি তাহাই লইয়া থাকেন, ও তোমাদিগকে জানাইবেন। 16 অল্প কাল পরে তোমরা আমাকে আর দেখিতে পাইতেছ না; এবং আবার অল্প কাল পরে আমাকে দেখিতে পাইবে। 17 ইহাতে শিষ্যদের মধ্যে কয়েক জন পরস্পর বলাবলি করিতে লাগিলেন, উনি আমাদিগকে এ কি বলিতেছেন, ‘অল্প কাল পরে তোমরা আমাকে দেখিতে পাইতেছ না, এবং আবার অল্প কাল পরে আমাকে দেখিতে পাইবে,’ আর, ‘কারণ আমি পিতার নিকটে যাইতেছি’। 18 অতএব তাঁহারা কহিলেন, ইনি এ কি বলিতেছেন, ‘অল্প কাল’? ইনি কি বলেন, আমরা বুঝিতে পারি না। 19 যীশু জানিলেন যে, তাঁহারা তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিতে চাহিতেছেন; তাই তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, আমি যে বলিয়াছি, অল্প কাল পরে তোমরা আমাকে দেখিতে পাইতেছ না, এবং আবার অল্প কাল পরে আমাকে দেখিতে পাইবে, এই বিষয় কি পরস্পর জিজ্ঞাসা করিতেছ? 20 সত্য, সত্য, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, তোমরা ক্রন্দন ও বিলাপ করিবে, কিন্তু জগৎ আনন্দ করিবে; তোমরা দুঃখার্ত্ত হইবে, কিন্তু তোমাদের দুঃখ আনন্দে পরিণত হইবে। 21 প্রসবকালে নারী দুঃখ পায়, কারণ তাহার সময় উপস্থিত, কিন্তু সন্তান প্রসব করিলে পর, জগতে একটী মনুষ্য জন্মিল, এই আনন্দে তাহার ক্লেশ আর মনে থাকে না। 22 ভাল, তোমরাও এখন দুঃখ পাইতেছ, কিন্তু আমি তোমাদিগকে আবার দেখিব তাহাতে তোমাদের হৃদয় আনন্দিত হইবে, এবং তোমাদের সেই আনন্দ কেহ তোমাদের হইতে হরণ করে না। 23 আর সেই দিনে তোমরা আমাকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করিবে না। সত্য, সত্য, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, পিতার নিকটে যদি তোমরা কিছু যাচ্ঞা কর, তিনি আমার নামে তোমাদিগকে তাহা দিবেন। 24 এ পর্য্যন্ত তোমরা আমার নামে কিছু যাচ্ঞা কর নাই; যাচ্ঞা কর, তাহাতে পাইবে, যেন তোমাদের আনন্দ সম্পূর্ণ হয়। 25 আমি উপমা দ্বারা এই সকল বিষয় তোমাদিগকে বলিলাম; এমন সময় আসিতেছে, যখন তোমাদিগকে আর উপমা দ্বারা বলিব না, কিন্তু স্পষ্টরূপে পিতার বিষয় জানাইব। 26 সেই দিন তোমরা আমার নামেই যাচ্ঞা করিবে, আর আমি তোমাদিগকে বলিতেছি না যে, আমিই তোমাদের নিমিত্ত পিতাকে নিবেদন করিব; 27 কারণ পিতা আপনি তোমাদিগকে ভাল বাসেন, কেননা তোমরা আমাকে ভাল বাসিয়াছ, এবং বিশ্বাস করিয়াছ যে, আমি ঈশ্বরের নিকট হইতে বাহির হইয়া আসিয়াছি। 28 আমি পিতা হইতে বাহির হইয়াছি, এবং জগতে আসিয়াছি; আবার জগৎ পরিত্যাগ করিতেছি, এবং পিতার নিকটে যাইতেছি। 29 তাঁহার শিষ্যেরা বলিলেন, দেখুন, এখন আপনি স্পষ্টরূপে বলিতেছেন, কোন উপমা কথা বলিতেছেন না। 30 এখন আমরা জানি, আপনি সকলই জানেন, কেহ যে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, ইহা আপনার আবশ্যক করে না; ইহাতে আমরা বিশ্বাস করিতেছি যে, আপনি ঈশ্বরের নিকট হইতে বাহির হইয়া আসিয়াছেন। 31 যীশু তাঁহাদিগকে উত্তর করিলেন, এখন বিশ্বাস করিতেছ? 32 দেখ, এমন সময় আসিতেছে, বরং আসিয়াছে, যখন তোমরা ছিন্নভিন্ন হইয়া প্রত্যেকে আপন আপন স্থানে যাইবে, এবং আমাকে একাকী পরিত্যাগ করিবে; তথাপি আমি একাকী নহি, কারণ পিতা আমার সঙ্গে আছেন। 33 এই সমস্ত তোমাদিগকে বলিলাম, যেন তোমরা আমাতে শান্তি প্রাপ্ত হও। জগতে তোমরা ক্লেশ পাইতেছ; কিন্তু সাহস কর, আমিই জগৎকে জয় করিয়াছি।
1. এই সকল কথা তোমাদিগকে কহিলাম, যেন তোমরা বিঘ্ন না পাও। 2. লোকে তোমাদিগকে সমাজ হইতে বাহির করিয়া দিবে; এমন কি, সময় আসিতেছে, যখন যে কেহ তোমাদিগকে বধ করে, সে মনে করিবে, আমি ঈশ্বরের উদ্দেশে উপাসনা-বলি উৎসর্গ করিলাম। 3. তাহারা এই সকল করিবে, কারণ তাহারা না পিতাকে, না আমাকে জানিতে পারিয়াছে। 4. কিন্তু, আমি তোমাদিগকে এ সকল কহিলাম, যেন এই সকলের সময় যখন উপস্থিত হইবে, তখন তোমরা স্মরণ করিতে পার যে, আমি তোমাদিগকে এই সকল বলিয়াছি। প্রথম হইতে এই সমস্ত তোমাদিগকে বলি নাই, কারণ আমি তোমাদের সঙ্গেই ছিলাম। 5. কিন্তু যিনি আমাকে পাঠাইয়াছেন, তাঁহার নিকটে এখন যাইতেছি, আর তোমাদের মধ্যে কেহ আমাকে জিজ্ঞাসা করে না, কোথায় যাইতেছেন? 6. কিন্তু তোমাদিগকে এই সমস্ত কহিলাম, সেই জন্য তোমাদের হৃদয় দুঃখে পরিপূর্ণ হইয়াছে। 7. তথাপি আমি তোমাদিগকে সত্য বলিতেছি, আমার যাওয়া তোমাদের পক্ষে ভাল, কারণ আমি না গেলে, সেই সহায় তোমাদের নিকটে আসিবেন না; কিন্তু আমি যদি যাই, তবে তোমাদের নিকটে তাঁহাকে পাঠাইয়া দিব। 8. আর তিনি আসিয়া পাপের সম্বন্ধে, ধার্ম্মিকতার সম্বন্ধে ও বিচারের সম্বন্ধে, জগৎকে দোষী করিবেন। 9. পাপের সম্বন্ধে, কেননা তাহারা আমাতে বিশ্বাস করে না; 10. ধার্ম্মিকতার সম্বন্ধে, কেননা আমি পিতার নিকটে যাইতেছি, ও তোমরা আর আমাকে দেখিতে পাইতেছ না; 11. বিচারের সম্বন্ধে, কেননা এ জগতের অধিপতি বিচারিত হইয়াছে। 12. তোমাদিগকে বলিবার আমার আরও অনেক কথা আছে, কিন্তু তোমরা এখন সে সকল সহ্য করিতে পার না। 13. পরন্তু তিনি, সত্যের আত্মা, যখন আসিবেন, তখন পথ দেখাইয়া তোমাদিগকে সমস্ত সত্যে লইয়া যাইবেন; কারণ তিনি আপনা হইতে কিছু বলিবেন না, কিন্তু যাহা যাহা শুনেন, তাহাই বলিবেন, এবং আগামী ঘটনাও তোমাদিগকে জানাইবেন। 14. তিনি আমাকে মহিমান্বিত করিবেন; কেননা যাহা আমার, তাহাই লইয়া তোমাদিগকে জানাইবেন। 15. পিতার যাহা যাহা আছে, সকলই আমার; এই জন্য বলিলাম, যাহা আমার, তিনি তাহাই লইয়া থাকেন, ও তোমাদিগকে জানাইবেন। 16. অল্প কাল পরে তোমরা আমাকে আর দেখিতে পাইতেছ না; এবং আবার অল্প কাল পরে আমাকে দেখিতে পাইবে। 17. ইহাতে শিষ্যদের মধ্যে কয়েক জন পরস্পর বলাবলি করিতে লাগিলেন, উনি আমাদিগকে এ কি বলিতেছেন, ‘অল্প কাল পরে তোমরা আমাকে দেখিতে পাইতেছ না, এবং আবার অল্প কাল পরে আমাকে দেখিতে পাইবে,’ আর, ‘কারণ আমি পিতার নিকটে যাইতেছি’। 18. অতএব তাঁহারা কহিলেন, ইনি এ কি বলিতেছেন, ‘অল্প কাল’? ইনি কি বলেন, আমরা বুঝিতে পারি না। 19. যীশু জানিলেন যে, তাঁহারা তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিতে চাহিতেছেন; তাই তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, আমি যে বলিয়াছি, অল্প কাল পরে তোমরা আমাকে দেখিতে পাইতেছ না, এবং আবার অল্প কাল পরে আমাকে দেখিতে পাইবে, এই বিষয় কি পরস্পর জিজ্ঞাসা করিতেছ? 20. সত্য, সত্য, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, তোমরা ক্রন্দন ও বিলাপ করিবে, কিন্তু জগৎ আনন্দ করিবে; তোমরা দুঃখার্ত্ত হইবে, কিন্তু তোমাদের দুঃখ আনন্দে পরিণত হইবে। 21. প্রসবকালে নারী দুঃখ পায়, কারণ তাহার সময় উপস্থিত, কিন্তু সন্তান প্রসব করিলে পর, জগতে একটী মনুষ্য জন্মিল, এই আনন্দে তাহার ক্লেশ আর মনে থাকে না। 22. ভাল, তোমরাও এখন দুঃখ পাইতেছ, কিন্তু আমি তোমাদিগকে আবার দেখিব তাহাতে তোমাদের হৃদয় আনন্দিত হইবে, এবং তোমাদের সেই আনন্দ কেহ তোমাদের হইতে হরণ করে না। 23. আর সেই দিনে তোমরা আমাকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করিবে না। সত্য, সত্য, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, পিতার নিকটে যদি তোমরা কিছু যাচ্ঞা কর, তিনি আমার নামে তোমাদিগকে তাহা দিবেন। 24. এ পর্য্যন্ত তোমরা আমার নামে কিছু যাচ্ঞা কর নাই; যাচ্ঞা কর, তাহাতে পাইবে, যেন তোমাদের আনন্দ সম্পূর্ণ হয়। 25. আমি উপমা দ্বারা এই সকল বিষয় তোমাদিগকে বলিলাম; এমন সময় আসিতেছে, যখন তোমাদিগকে আর উপমা দ্বারা বলিব না, কিন্তু স্পষ্টরূপে পিতার বিষয় জানাইব। 26. সেই দিন তোমরা আমার নামেই যাচ্ঞা করিবে, আর আমি তোমাদিগকে বলিতেছি না যে, আমিই তোমাদের নিমিত্ত পিতাকে নিবেদন করিব; 27. কারণ পিতা আপনি তোমাদিগকে ভাল বাসেন, কেননা তোমরা আমাকে ভাল বাসিয়াছ, এবং বিশ্বাস করিয়াছ যে, আমি ঈশ্বরের নিকট হইতে বাহির হইয়া আসিয়াছি। 28. আমি পিতা হইতে বাহির হইয়াছি, এবং জগতে আসিয়াছি; আবার জগৎ পরিত্যাগ করিতেছি, এবং পিতার নিকটে যাইতেছি। 29. তাঁহার শিষ্যেরা বলিলেন, দেখুন, এখন আপনি স্পষ্টরূপে বলিতেছেন, কোন উপমা কথা বলিতেছেন না। 30. এখন আমরা জানি, আপনি সকলই জানেন, কেহ যে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, ইহা আপনার আবশ্যক করে না; ইহাতে আমরা বিশ্বাস করিতেছি যে, আপনি ঈশ্বরের নিকট হইতে বাহির হইয়া আসিয়াছেন। 31. যীশু তাঁহাদিগকে উত্তর করিলেন, এখন বিশ্বাস করিতেছ? 32. দেখ, এমন সময় আসিতেছে, বরং আসিয়াছে, যখন তোমরা ছিন্নভিন্ন হইয়া প্রত্যেকে আপন আপন স্থানে যাইবে, এবং আমাকে একাকী পরিত্যাগ করিবে; তথাপি আমি একাকী নহি, কারণ পিতা আমার সঙ্গে আছেন। 33. এই সমস্ত তোমাদিগকে বলিলাম, যেন তোমরা আমাতে শান্তি প্রাপ্ত হও। জগতে তোমরা ক্লেশ পাইতেছ; কিন্তু সাহস কর, আমিই জগৎকে জয় করিয়াছি।
  • যোহন অধ্যায় 1  
  • যোহন অধ্যায় 2  
  • যোহন অধ্যায় 3  
  • যোহন অধ্যায় 4  
  • যোহন অধ্যায় 5  
  • যোহন অধ্যায় 6  
  • যোহন অধ্যায় 7  
  • যোহন অধ্যায় 8  
  • যোহন অধ্যায় 9  
  • যোহন অধ্যায় 10  
  • যোহন অধ্যায় 11  
  • যোহন অধ্যায় 12  
  • যোহন অধ্যায় 13  
  • যোহন অধ্যায় 14  
  • যোহন অধ্যায় 15  
  • যোহন অধ্যায় 16  
  • যোহন অধ্যায় 17  
  • যোহন অধ্যায় 18  
  • যোহন অধ্যায় 19  
  • যোহন অধ্যায় 20  
  • যোহন অধ্যায় 21  
×

Alert

×

Bengali Letters Keypad References