পবিত্র বাইবেল

বাইবেল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া (BSI)
লেবীয় পুস্তক

লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 25

1 আর সদাপ্রভু সীনয় পর্ব্বতে মোশিকে কহিলেন, 2 তুমি ইস্রায়েল-সন্তানগণকে কহ, তাহাদিগকে বল, আমি তোমাদিগকে যে দেশ দিব, তোমরা সেই দেশে প্রবেশ করিলে সদাপ্রভুর উদ্দেশে ভূমি বিশ্রাম ভোগ করিবে। 3 ছয় বৎসর কাল তুমি আপন ক্ষেত্রে বীজ বপন করিবে, ছয় বৎসর কাল আপন দ্রাক্ষালতা ঝুড়িবে, ও তাহার ফল সংগ্রহ করিবে। 4 কিন্তু সপ্তম বৎসর ভূমির বিশ্রামার্থক বিশ্রামকাল, সদাপ্রভুর উদ্দেশে বিশ্রামকাল হইবে; তুমি আপন ক্ষেত্রে বীজ বপন করিও না, ও আপন দ্রাক্ষালতা ঝুড়িও না; 5 তুমি আপন ক্ষেত্রের স্বতঃ উৎপন্ন শস্য কাটিবে না, ও আঝোড়া দ্রাক্ষালতার ফল সংগ্রহ করিবে না; উহা ভূমির বিশ্রামার্থক বৎসর হইবে। 6 আর ভূমির বিশ্রাম তোমাদের ভক্ষ্যের জন্য হইবে; ভূমির সমস্ত দ্রব্যই তোমার, তোমার দাসের ও দাসীর, তোমার বেতনজীবী ভৃত্যের ও তোমার সহবাসী বিদেশীর, 7 এবং তোমার পশুর ও তোমার দেশের বনপশুর ভক্ষ্যের জন্য হইবে। 8 আর তুমি আপনার জন্য সাত বিশ্রামবৎসর, সাত গুণ সাত বৎসর, গণনা করিবে; তাহাতে তোমার গণিত সেই সাত গুণ সাত বিশ্রামবৎসরে ঊনপঞ্চাশ বৎসর হইবে। 9 তখন সপ্তম মাসের দশম দিনে তুমি জয়ধ্বনির তুরীবাদ্য করিবে; প্রায়শ্চিত্তদিনে তোমাদের সমস্ত দেশে তূরী বাজাইবে। 10 আর তোমরা পঞ্চাশত্তম বৎসরকে পবিত্র করিবে, এবং সমস্ত দেশে তথাকার সমস্ত নিবাসীর কাছে মুক্তি ঘোষণা করিবে; উহা তোমাদের জন্য যোবেল *তূরীধ্বনির মহোৎসব হইবে; এবং তোমরা প্রতিজন আপন আপন অধিকারে ফিরিয়া যাইবে, ও প্রতিজন আপন আপন গোষ্ঠীর নিকটে ফিরিয়া যাইবে। 11 তোমাদের নিমিত্ত পঞ্চাশত্তম বৎসর যোবেল হইবে; তোমরা বীজ বুনিও না, স্বতঃ উৎপন্ন শস্য ছেদন করিও না, এবং আঝোড়া দ্রাক্ষালতার ফল সংগ্রহ করিও না। 12 কেননা উহাই যোবেল, উহা তোমাদের পক্ষে পবিত্র হইবে; তোমরা ক্ষেত্রোৎপন্ন শস্যাদি ভক্ষণ করিতে পারিবে। 13 ঐ যোবেল বৎসরে তোমরা প্রতিজন আপন আপন অধিকারে ফিরিয়া যাইবে। 14 যদি তুমি সজাতীয়ের নিকটে কোন কিছু বিক্রয় কর, কিম্বা আপন সজাতীয়ের হস্ত হইতে ক্রয় কর, তবে তোমরা পরস্পর অন্যায় করিও না। 15 তুমি যোবেলের পরে বৎসর-সংখ্যানুসারে সজাতীয় হইতে ক্রয় করিবে, এবং ফলোৎপত্তির বৎসর সংখ্যানুসারে তোমার কাছে সে বিক্রয় করিবে। 16 তুমি বৎসরের আধিক্য অনুসারে তাহার মূল্য অধিক করিবে, ও বৎসরের ন্যূনতা অনুসারে মূল্য ন্যূন করিবে; কেননা সে তোমার কাছে ফলোৎপত্তি-কালের সংখ্যানুসারে বিক্রয় করে। 17 তোমরা তোমাদের সজাতীয়ের প্রতি অন্যায় করিও না, কিন্তু আপন ঈশ্বরকে ভয় করিও, কেননা আমি সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বর। 18 আর তোমরা আমার বিধি অনুসারে আচরণ করিবে, আমার শাসন সকল মানিবে, ও তাহা পালন করিবে; তাহাতে দেশে নির্ভয়ে বাস করিবে। 19 আর ভূমি নিজ ফল উৎপন্ন করিবে, তাহাতে তোমরা তৃপ্তি পর্য্যন্ত ভোজন করিবে, ও দেশে নির্ভয়ে বাস করিবে। 20 আর যদি তোমরা বল, দেখ, আমরা সপ্তম বৎসরে কি খাইব? দেখ, আমরা ত ক্ষেত্রে বপন করিব না, ও উৎপন্ন ফল সংগ্রহ করিব না; 21 তবে আমি ষষ্ঠ বৎসরে তোমাদিগকে আশীর্ব্বাদ করিব; তাহাতে তিন বৎসরের জন্য শস্য উৎপন্ন হইবে। 22 পরে অষ্টম বৎসরে তোমরা বপন করিবে, ও নবম বৎসর পর্য্যন্ত পুরাতন শস্য ভোজন করিবে; যাবৎ ফল না হয়, তাবৎ পুরাতন শস্য ভোজন করিবে। 23 আর ভূমি চিরকালের নিমিত্ত বিক্রীত হইবে না, কেননা ভূমি আমারই; তোমরা ত আমার সহিত বিদেশী ও প্রবাসী। 24 আর তোমরা আপনাদের অধিকৃত দেশের সর্ব্বত্র ভূমি মুক্ত করিতে দিও। 25 তোমার ভ্রাতা যদি দরিদ্র হইয়া আপন অধিকারের কিঞ্চিৎ বিক্রয় করে, তবে তাহার মুক্তিকর্ত্তা নিকটস্থ জ্ঞাতি আসিয়া আপন ভ্রাতার বিক্রীত ভূমি মুক্ত করিয়া লইবে। 26 যাহার মুক্তিকর্ত্তা নাই, সে যদি ধনবান্‌ হইয়া আপনি তাহা মুক্ত করিতে সমর্থ হয়, 27 তবে সে তাহার বিক্রয়ের বৎসর গণনা করিয়া তদনুসারে অতিরিক্ত মূল্য ক্রেতাকে ফিরাইয়া দিবে; এইরূপে সে আপন অধিকারে ফিরিয়া যাইবে। 28 কিন্তু যদি সে তাহা ফিরাইয়া লইতে অসমর্থ হয়, তবে সেই বিক্রীত অধিকার যোবেল বৎসর পর্য্যন্ত ক্রেতার হস্তে থাকিবে; যোবেলে তাহা মুক্ত হইবে, এবং সে আপন অধিকারে ফিরিয়া যাইবে। 29 আর যদি কেহ প্রাচীরবেষ্টিত নগরের মধ্যস্থিত বাসগৃহ বিক্রয় করে, তবে সে বিক্রয়-বৎসরের শেষ পর্য্যন্ত তাহা মুক্ত করিতে পারিবে, পূর্ণ এক বৎসরের মধ্যে তাহা মুক্ত করিবার অধিকারী থাকিবে। 30 কিন্তু যদি সম্পূর্ণ এক বৎসর কালের মধ্যে তাহা মুক্ত না হয়, তবে প্রাচীরবেষ্টিত নগরে স্থিত সেই গৃহ পুরুষপরম্পরায় ক্রয়কর্ত্তার চিরস্থায়ী অধিকার হইবে; তাহা যোবেলে মুক্ত হইবে না। 31 কিন্তু প্রাচীরহীন গ্রামে স্থিত গৃহ দেশের ভূমির মধ্যে গণ্য হইবে; তাহা মুক্ত করা যাইতে পারে, এবং যোবেলে তাহা মুক্ত হইবে। 32 কিন্তু লেবীয়দের নগর সকল, তাহাদের অধিকৃত নগরের গৃহ সকল মুক্ত করিবার অধিকার লেবীয়দের সর্ব্বদাই থাকিবে। 33 যদি লেবীয়দের কেহ মুক্ত করে, তবে সেই বিক্রীত গৃহ এবং তাহার অধিকারস্থ নগর যোবেলে মুক্ত হইবে; কেননা ইস্রায়েল-সন্তানগণের মধ্যে লেবীয়দের নগরস্থ গৃহ সকল তাহাদের অধিকার। 34 আর তাহাদের নগরের চরাণিভূমি বিক্রীত হইবে না; কেননা তাহাই তাহাদের চিরস্থায়ী অধিকার। 35 আর তোমার ভ্রাতা যদি দরিদ্র হয়, ও তোমার নিকটে শূন্যহস্ত হয়, তবে তুমি তাহার উপকার করিবে; সে বিদেশী ও প্রাবাসীর ন্যায় তোমার সহিত জীবন ধারণ করিবে। 36 তুমি তাহা হইতে সুদ কিম্বা বৃদ্ধি লইবে না, কিন্তু আপন ঈশ্বরকে ভয় করিবে, তোমার ভ্রাতাকে তোমার সহিত জীবন ধারণ করিতে দিবে। 37 তুমি সুদের জন্য তাহাকে টাকা দিবে না, ও বৃদ্ধির জন্য তাহাকে অন্ন দিবে না। 38 আমি সদাপ্রভু তোমাদের সেই ঈশ্বর, যিনি তোমাদিগকে কনান দেশ দিবার জন্য ও তোমাদের ঈশ্বর হইবার জন্য তোমাদিগকে মিসর দেশ হইতে বাহির করিয়া আনিয়াছেন। 39 আর তোমার ভ্রাতা যদি দরিদ্র হইয়া তোমার নিকটে আপনাকে বিক্রয় করে, তবে তুমি তাহাকে দাসের ন্যায় দাস্যকর্ম্ম করাইও না। 40 সে বেতনজীবী ভৃত্যের ন্যায় কিম্বা প্রবাসীর ন্যায় তোমার সঙ্গে থাকিবে, যোবেল বৎসর পর্য্যন্ত তোমার দাস্যকর্ম্ম করিবে। 41 পরে সে আপন সন্তানগণের সহিত তোমার নিকট হইতে মুক্ত হইয়া আপন গোষ্ঠীর কাছে ফিরিয়া যাইবে, ও আপন পৈতৃক অধিকারে ফিরিয়া যাইবে। 42 কেননা তাহারা আমারই দাস, যাহাদিগকে আমি মিসর দেশ হইতে বাহির করিয়া আনিয়াছি; তাহারা দাসের ন্যায় বিক্রীত হইবে না। 43 তুমি তাহার উপরে কঠিন কর্ত্তৃত্ব করিও না, 44 কিন্তু আপন ঈশ্বরকে ভয় করিও। তোমাদের চতুর্দ্দিকস্থ জাতিগণের মধ্য হইতে তোমরা দাস ও দাসী রাখিতে পারিবে; তাহাদের হইতেই তোমরা দাস ও দাসী ক্রয় করিও। 45 আর তোমাদের মধ্যে প্রবাসী বিদেশীদের সন্তানগণের হইতে, এবং তোমাদের দেশে তাহাদের হইতে উৎপন্ন তাহাদের যে যে গোষ্ঠী তোমাদের সঙ্গে আছে, তাহাদের হইতেও ক্রয় করিও; তাহারা তোমাদের অধিকার হইবে। 46 আর তোমরা আপন আপন ভাবী সন্তানদের অধিকারের নিমিত্তে দায়ভাগ দ্বারা তাহাদিগকে দিতে পার, এবং নিত্য আপনাদের দাস্যকর্ম্ম তাহাদিগকে দিয়া করাইতে পার; কিন্তু তোমাদের ভ্রাতা ইস্রায়েল-সন্তানদিগের মধ্যে তোমরা কেহ কাহারও উপরে কঠিন কর্ত্তৃত্ব করিবে না। 47 আর যদি তোমাদের মধ্যে কোন বিদেশী কিম্বা প্রবাসী ধনবান্‌ হয়, এবং তাহার নিকটবর্ত্তী তোমার ভ্রাতা দরিদ্র হইয়া যদি তোমার সহবর্ত্তী প্রবাসী, বিদেশী কিম্বা বিদেশীয় গোত্রস্থ কোন লোকের কাছে আপনাকে বিক্রয় করে, 48 তবে সে বিক্রীত হইবার পরে মুক্ত হইতে পারিবে; তাহার জ্ঞাতির মধ্যে কেহ তাহাকে মুক্ত করিতে পারিবে; 49 তাহার পিতৃব্য কিম্বা পিতৃব্যের পুত্র তাহাকে মুক্ত করিবে, কিম্বা তাহার গোষ্ঠীভুক্ত নিকটবর্ত্তী কোন জ্ঞাতি তাহাকে মুক্ত কিরবে; কিম্বা যদি সে ধনবান্‌ হইয়া উঠে, তবে আপনাকে মুক্ত করিবে। 50 তাহাতে তাহার বিক্রয়-বৎসর অবধি যোবেল বৎসর পর্য্যন্ত ক্রেতার সহিত হিসাব হইলে বৎসরের সংখ্যানুসারে তাহার মূল্য হইবে; উহার কাছে তাহার থাকিবার সময় বেতনজীবীর দিনের ন্যায় হইবে। 51 যদি অনেক বৎসর অবশিষ্ট থাকে, তবে তদনুসারে সে ক্রয়-মূল্য হইতে আপনার মোচনের মূল্য ফিরাইয়া দিবে। 52 যদি যোবেল বৎসরের অল্প বৎসর অবশিষ্ট থাকে, তবে সে তাহার সহিত হিসাব করিয়া সেই কয়েক বৎসরানুসারে আপনার মোচনের মূল্য ফিরাইয়া দিবে। 53 বৎসর-বৈতনিক ভৃত্যের ন্যায় সে তাহার সহিত থাকিবে; তোমার সাক্ষাতে সে তাহার উপরে কঠিন কর্ত্তৃত্ব করিবে না। 54 আর যদি সে ঐ সকল বৎসরে মুক্ত না হয়, তবে যোবেল বৎসরে আপন সন্তানগণের সহিত মুক্ত হইয়া যাইবে। 55 কেননা ইস্রায়েল-সন্তানগণ আমারই দাস; তাহারা আমার দাস, যাহাদিগকে আমি মিসর দেশ হইতে বাহির করিয়া আনিয়াছি; আমি সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বর।
1. আর সদাপ্রভু সীনয় পর্ব্বতে মোশিকে কহিলেন, 2. তুমি ইস্রায়েল-সন্তানগণকে কহ, তাহাদিগকে বল, আমি তোমাদিগকে যে দেশ দিব, তোমরা সেই দেশে প্রবেশ করিলে সদাপ্রভুর উদ্দেশে ভূমি বিশ্রাম ভোগ করিবে। 3. ছয় বৎসর কাল তুমি আপন ক্ষেত্রে বীজ বপন করিবে, ছয় বৎসর কাল আপন দ্রাক্ষালতা ঝুড়িবে, ও তাহার ফল সংগ্রহ করিবে। 4. কিন্তু সপ্তম বৎসর ভূমির বিশ্রামার্থক বিশ্রামকাল, সদাপ্রভুর উদ্দেশে বিশ্রামকাল হইবে; তুমি আপন ক্ষেত্রে বীজ বপন করিও না, ও আপন দ্রাক্ষালতা ঝুড়িও না; 5. তুমি আপন ক্ষেত্রের স্বতঃ উৎপন্ন শস্য কাটিবে না, ও আঝোড়া দ্রাক্ষালতার ফল সংগ্রহ করিবে না; উহা ভূমির বিশ্রামার্থক বৎসর হইবে। 6. আর ভূমির বিশ্রাম তোমাদের ভক্ষ্যের জন্য হইবে; ভূমির সমস্ত দ্রব্যই তোমার, তোমার দাসের ও দাসীর, তোমার বেতনজীবী ভৃত্যের ও তোমার সহবাসী বিদেশীর, 7. এবং তোমার পশুর ও তোমার দেশের বনপশুর ভক্ষ্যের জন্য হইবে। 8. আর তুমি আপনার জন্য সাত বিশ্রামবৎসর, সাত গুণ সাত বৎসর, গণনা করিবে; তাহাতে তোমার গণিত সেই সাত গুণ সাত বিশ্রামবৎসরে ঊনপঞ্চাশ বৎসর হইবে। 9. তখন সপ্তম মাসের দশম দিনে তুমি জয়ধ্বনির তুরীবাদ্য করিবে; প্রায়শ্চিত্তদিনে তোমাদের সমস্ত দেশে তূরী বাজাইবে। 10. আর তোমরা পঞ্চাশত্তম বৎসরকে পবিত্র করিবে, এবং সমস্ত দেশে তথাকার সমস্ত নিবাসীর কাছে মুক্তি ঘোষণা করিবে; উহা তোমাদের জন্য যোবেল [তূরীধ্বনির মহোৎসব] হইবে; এবং তোমরা প্রতিজন আপন আপন অধিকারে ফিরিয়া যাইবে, ও প্রতিজন আপন আপন গোষ্ঠীর নিকটে ফিরিয়া যাইবে। 11. তোমাদের নিমিত্ত পঞ্চাশত্তম বৎসর যোবেল হইবে; তোমরা বীজ বুনিও না, স্বতঃ উৎপন্ন শস্য ছেদন করিও না, এবং আঝোড়া দ্রাক্ষালতার ফল সংগ্রহ করিও না। 12. কেননা উহাই যোবেল, উহা তোমাদের পক্ষে পবিত্র হইবে; তোমরা ক্ষেত্রোৎপন্ন শস্যাদি ভক্ষণ করিতে পারিবে। 13. ঐ যোবেল বৎসরে তোমরা প্রতিজন আপন আপন অধিকারে ফিরিয়া যাইবে। 14. যদি তুমি সজাতীয়ের নিকটে কোন কিছু বিক্রয় কর, কিম্বা আপন সজাতীয়ের হস্ত হইতে ক্রয় কর, তবে তোমরা পরস্পর অন্যায় করিও না। 15. তুমি যোবেলের পরে বৎসর-সংখ্যানুসারে সজাতীয় হইতে ক্রয় করিবে, এবং ফলোৎপত্তির বৎসর সংখ্যানুসারে তোমার কাছে সে বিক্রয় করিবে। 16. তুমি বৎসরের আধিক্য অনুসারে তাহার মূল্য অধিক করিবে, ও বৎসরের ন্যূনতা অনুসারে মূল্য ন্যূন করিবে; কেননা সে তোমার কাছে ফলোৎপত্তি-কালের সংখ্যানুসারে বিক্রয় করে। 17. তোমরা তোমাদের সজাতীয়ের প্রতি অন্যায় করিও না, কিন্তু আপন ঈশ্বরকে ভয় করিও, কেননা আমি সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বর। 18. আর তোমরা আমার বিধি অনুসারে আচরণ করিবে, আমার শাসন সকল মানিবে, ও তাহা পালন করিবে; তাহাতে দেশে নির্ভয়ে বাস করিবে। 19. আর ভূমি নিজ ফল উৎপন্ন করিবে, তাহাতে তোমরা তৃপ্তি পর্য্যন্ত ভোজন করিবে, ও দেশে নির্ভয়ে বাস করিবে। 20. আর যদি তোমরা বল, দেখ, আমরা সপ্তম বৎসরে কি খাইব? দেখ, আমরা ত ক্ষেত্রে বপন করিব না, ও উৎপন্ন ফল সংগ্রহ করিব না; 21. তবে আমি ষষ্ঠ বৎসরে তোমাদিগকে আশীর্ব্বাদ করিব; তাহাতে তিন বৎসরের জন্য শস্য উৎপন্ন হইবে। 22. পরে অষ্টম বৎসরে তোমরা বপন করিবে, ও নবম বৎসর পর্য্যন্ত পুরাতন শস্য ভোজন করিবে; যাবৎ ফল না হয়, তাবৎ পুরাতন শস্য ভোজন করিবে। 23. আর ভূমি চিরকালের নিমিত্ত বিক্রীত হইবে না, কেননা ভূমি আমারই; তোমরা ত আমার সহিত বিদেশী ও প্রবাসী। 24. আর তোমরা আপনাদের অধিকৃত দেশের সর্ব্বত্র ভূমি মুক্ত করিতে দিও। 25. তোমার ভ্রাতা যদি দরিদ্র হইয়া আপন অধিকারের কিঞ্চিৎ বিক্রয় করে, তবে তাহার মুক্তিকর্ত্তা নিকটস্থ জ্ঞাতি আসিয়া আপন ভ্রাতার বিক্রীত ভূমি মুক্ত করিয়া লইবে। 26. যাহার মুক্তিকর্ত্তা নাই, সে যদি ধনবান্‌ হইয়া আপনি তাহা মুক্ত করিতে সমর্থ হয়, 27. তবে সে তাহার বিক্রয়ের বৎসর গণনা করিয়া তদনুসারে অতিরিক্ত মূল্য ক্রেতাকে ফিরাইয়া দিবে; এইরূপে সে আপন অধিকারে ফিরিয়া যাইবে। 28. কিন্তু যদি সে তাহা ফিরাইয়া লইতে অসমর্থ হয়, তবে সেই বিক্রীত অধিকার যোবেল বৎসর পর্য্যন্ত ক্রেতার হস্তে থাকিবে; যোবেলে তাহা মুক্ত হইবে, এবং সে আপন অধিকারে ফিরিয়া যাইবে। 29. আর যদি কেহ প্রাচীরবেষ্টিত নগরের মধ্যস্থিত বাসগৃহ বিক্রয় করে, তবে সে বিক্রয়-বৎসরের শেষ পর্য্যন্ত তাহা মুক্ত করিতে পারিবে, পূর্ণ এক বৎসরের মধ্যে তাহা মুক্ত করিবার অধিকারী থাকিবে। 30. কিন্তু যদি সম্পূর্ণ এক বৎসর কালের মধ্যে তাহা মুক্ত না হয়, তবে প্রাচীরবেষ্টিত নগরে স্থিত সেই গৃহ পুরুষপরম্পরায় ক্রয়কর্ত্তার চিরস্থায়ী অধিকার হইবে; তাহা যোবেলে মুক্ত হইবে না। 31. কিন্তু প্রাচীরহীন গ্রামে স্থিত গৃহ দেশের ভূমির মধ্যে গণ্য হইবে; তাহা মুক্ত করা যাইতে পারে, এবং যোবেলে তাহা মুক্ত হইবে। 32. কিন্তু লেবীয়দের নগর সকল, তাহাদের অধিকৃত নগরের গৃহ সকল মুক্ত করিবার অধিকার লেবীয়দের সর্ব্বদাই থাকিবে। 33. যদি লেবীয়দের কেহ মুক্ত করে, তবে সেই বিক্রীত গৃহ এবং তাহার অধিকারস্থ নগর যোবেলে মুক্ত হইবে; কেননা ইস্রায়েল-সন্তানগণের মধ্যে লেবীয়দের নগরস্থ গৃহ সকল তাহাদের অধিকার। 34. আর তাহাদের নগরের চরাণিভূমি বিক্রীত হইবে না; কেননা তাহাই তাহাদের চিরস্থায়ী অধিকার। 35. আর তোমার ভ্রাতা যদি দরিদ্র হয়, ও তোমার নিকটে শূন্যহস্ত হয়, তবে তুমি তাহার উপকার করিবে; সে বিদেশী ও প্রাবাসীর ন্যায় তোমার সহিত জীবন ধারণ করিবে। 36. তুমি তাহা হইতে সুদ কিম্বা বৃদ্ধি লইবে না, কিন্তু আপন ঈশ্বরকে ভয় করিবে, তোমার ভ্রাতাকে তোমার সহিত জীবন ধারণ করিতে দিবে। 37. তুমি সুদের জন্য তাহাকে টাকা দিবে না, ও বৃদ্ধির জন্য তাহাকে অন্ন দিবে না। 38. আমি সদাপ্রভু তোমাদের সেই ঈশ্বর, যিনি তোমাদিগকে কনান দেশ দিবার জন্য ও তোমাদের ঈশ্বর হইবার জন্য তোমাদিগকে মিসর দেশ হইতে বাহির করিয়া আনিয়াছেন। 39. আর তোমার ভ্রাতা যদি দরিদ্র হইয়া তোমার নিকটে আপনাকে বিক্রয় করে, তবে তুমি তাহাকে দাসের ন্যায় দাস্যকর্ম্ম করাইও না। 40. সে বেতনজীবী ভৃত্যের ন্যায় কিম্বা প্রবাসীর ন্যায় তোমার সঙ্গে থাকিবে, যোবেল বৎসর পর্য্যন্ত তোমার দাস্যকর্ম্ম করিবে। 41. পরে সে আপন সন্তানগণের সহিত তোমার নিকট হইতে মুক্ত হইয়া আপন গোষ্ঠীর কাছে ফিরিয়া যাইবে, ও আপন পৈতৃক অধিকারে ফিরিয়া যাইবে। 42. কেননা তাহারা আমারই দাস, যাহাদিগকে আমি মিসর দেশ হইতে বাহির করিয়া আনিয়াছি; তাহারা দাসের ন্যায় বিক্রীত হইবে না। 43. তুমি তাহার উপরে কঠিন কর্ত্তৃত্ব করিও না, 44. কিন্তু আপন ঈশ্বরকে ভয় করিও। তোমাদের চতুর্দ্দিকস্থ জাতিগণের মধ্য হইতে তোমরা দাস ও দাসী রাখিতে পারিবে; তাহাদের হইতেই তোমরা দাস ও দাসী ক্রয় করিও। 45. আর তোমাদের মধ্যে প্রবাসী বিদেশীদের সন্তানগণের হইতে, এবং তোমাদের দেশে তাহাদের হইতে উৎপন্ন তাহাদের যে যে গোষ্ঠী তোমাদের সঙ্গে আছে, তাহাদের হইতেও ক্রয় করিও; তাহারা তোমাদের অধিকার হইবে। 46. আর তোমরা আপন আপন ভাবী সন্তানদের অধিকারের নিমিত্তে দায়ভাগ দ্বারা তাহাদিগকে দিতে পার, এবং নিত্য আপনাদের দাস্যকর্ম্ম তাহাদিগকে দিয়া করাইতে পার; কিন্তু তোমাদের ভ্রাতা ইস্রায়েল-সন্তানদিগের মধ্যে তোমরা কেহ কাহারও উপরে কঠিন কর্ত্তৃত্ব করিবে না। 47. আর যদি তোমাদের মধ্যে কোন বিদেশী কিম্বা প্রবাসী ধনবান্‌ হয়, এবং তাহার নিকটবর্ত্তী তোমার ভ্রাতা দরিদ্র হইয়া যদি তোমার সহবর্ত্তী প্রবাসী, বিদেশী কিম্বা বিদেশীয় গোত্রস্থ কোন লোকের কাছে আপনাকে বিক্রয় করে, 48. তবে সে বিক্রীত হইবার পরে মুক্ত হইতে পারিবে; তাহার জ্ঞাতির মধ্যে কেহ তাহাকে মুক্ত করিতে পারিবে; 49. তাহার পিতৃব্য কিম্বা পিতৃব্যের পুত্র তাহাকে মুক্ত করিবে, কিম্বা তাহার গোষ্ঠীভুক্ত নিকটবর্ত্তী কোন জ্ঞাতি তাহাকে মুক্ত কিরবে; কিম্বা যদি সে ধনবান্‌ হইয়া উঠে, তবে আপনাকে মুক্ত করিবে। 50. তাহাতে তাহার বিক্রয়-বৎসর অবধি যোবেল বৎসর পর্য্যন্ত ক্রেতার সহিত হিসাব হইলে বৎসরের সংখ্যানুসারে তাহার মূল্য হইবে; উহার কাছে তাহার থাকিবার সময় বেতনজীবীর দিনের ন্যায় হইবে। 51. যদি অনেক বৎসর অবশিষ্ট থাকে, তবে তদনুসারে সে ক্রয়-মূল্য হইতে আপনার মোচনের মূল্য ফিরাইয়া দিবে। 52. যদি যোবেল বৎসরের অল্প বৎসর অবশিষ্ট থাকে, তবে সে তাহার সহিত হিসাব করিয়া সেই কয়েক বৎসরানুসারে আপনার মোচনের মূল্য ফিরাইয়া দিবে। 53. বৎসর-বৈতনিক ভৃত্যের ন্যায় সে তাহার সহিত থাকিবে; তোমার সাক্ষাতে সে তাহার উপরে কঠিন কর্ত্তৃত্ব করিবে না। 54. আর যদি সে ঐ সকল বৎসরে মুক্ত না হয়, তবে যোবেল বৎসরে আপন সন্তানগণের সহিত মুক্ত হইয়া যাইবে। 55. কেননা ইস্রায়েল-সন্তানগণ আমারই দাস; তাহারা আমার দাস, যাহাদিগকে আমি মিসর দেশ হইতে বাহির করিয়া আনিয়াছি; আমি সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বর।
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 1  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 2  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 3  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 4  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 5  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 6  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 7  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 8  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 9  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 10  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 11  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 12  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 13  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 14  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 15  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 16  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 17  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 18  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 19  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 20  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 21  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 22  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 23  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 24  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 25  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 26  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 27  
×

Alert

×

Bengali Letters Keypad References