পবিত্র বাইবেল

বাইবেল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া (BSI)
এজেকিয়েল

এজেকিয়েল অধ্যায় 23

1 আর সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার নিকটে উপস্থিত হইল, 2 হে মনুষ্য-সন্তান, দুটী স্ত্রীলোক ছিল, তাহারা এক মাতার কন্যা। 3 তাহারা মিসরে ব্যভিচার যৌবনকালেই করিল; সেখানে তাদের স্তন মর্দ্দিত হইত, সেখানে লোকেরা তাহাদের কৌমার্য্যকালীন চুচুক টিপিত। 4 তাহাদের মধ্যে জ্যেষ্ঠার নাম অহলা *তাহার তাম্বু , ও তাহার ভগিনীর নাম অহলীবা তাহার মধ্যে আমার তাম্বু ; তাহারা আমার হইল এবং পুত্রকন্যা প্রসব করিল। তাহাদের নামের তাৎপর্য এই, অহলা শমরিয়া, ও অহলীবা যিরূশালেম। 5 আমার থাকিতে অহলা ব্যভিচার করিল, আপনার প্রেমিকগণে, নিকটবর্ত্তী অশূরীয়দিগেতে কামাসক্তা হইল; 6 ইহারা নীলবস্ত্র পরিহিত, দেশাধ্যক্ষ ও শাসনকর্ত্তা, সকলেই মনোহর যুবক ও অশ্বারোহী যোদ্ধা। 7 সে তাহাদের অর্থাৎ সমস্ত উৎকৃষ্ট অশূর-সন্তানের সহিত ব্যভিচার করিত, এবং যাহাদিগেতে কামাসক্তা হইত, তাহাদের সকলকার সমস্ত পুত্তলি দ্বারা ভ্রষ্ট হইত। 8 আবার সে মিসরের সময় হইতে আপনার ব্যভিচার ত্যাগ করে নাই; কেননা তাহার যৌবনকালে লোকে তাহার সহিত শয়ন করিত, তাহারাই তাহার কৌমার্য্যকালীন চুচুক টিপিত, ও তাহার সহিত রতিক্রিয়া করিত। 9 এই জন্য আমি তাহার প্রেমিকদের হস্তে,—সে যাহাদিগেতে কামাসক্তা ছিল, সেই অশূর-সন্তানদের হস্তে তাহাকে সমর্পণ করিলাম। 10 তাহারা তাহার উলঙ্গতা অনাবৃত করিল, তাহার পুত্রকন্যাদিগকে হরণ করিয়া তাহাকে খড়্‌গ দ্বারা বধ করিল; এইরূপে স্ত্রীলোকদের মধ্যে তাহার অখ্যাতি হইল, কারণ লোকেরা তাহাকে বিচারসিদ্ধ দণ্ড দিল। 11 এই সকল দেখিয়াও তাহার ভগিনী অহলীবা আপন কামাসক্তিতে তাহা অপেক্ষা, হাঁ, বেশ্যাক্রিয়ায় সেই ভগিনী অপেক্ষা অধিক ভ্রষ্ট হইল। 12 সে নিকটবর্ত্তী অশূর-সন্তানগণে—দেশাধ্যক্ষগণে ও শাসনকর্ত্তৃগণে—কামাসক্তা হইল; তাহারা দিব্য পরিচ্ছদান্বিত অশ্বারোহী যোদ্ধা, সকলেই মনোহর যুবক। 13 আর আমি দেখিলাম, সে অশুচি, উভয়ে একই পথে চলিতেছে। 14 আর সে আপন বেশ্যাক্রিয়া বাড়াইল, কেননা সে ভিত্তিতে চিত্রিত পুরুষদিগকে অর্থাৎ কল্‌দীয়দের সিন্দূরচিত্রিত প্রতিরূপ দেখিল; 15 তাহারা পটিকাতে বদ্ধকটি, তাহাদের মস্তকে রঙ্গে ডুবান দীর্ঘ উষ্ণীষ, তাহারা সকলে দেখিতে সেনানীদের ন্যায়, কল্‌দীয় দেশজাত বাবিল-সন্তানদের রূপবিশিষ্ট। 16 তাহাদিগকে দেখিবামাত্র সে কামাসক্তা হইয়া কল্‌দীয় দেশে তাহাদের কাছে দূত প্রেরণ করিল। 17 তাহাতে বাবিল-সন্তানেরা তাহার কাছে আসিয়া প্রেম-শয্যায় শয়ন করিল, ও ব্যভিচার করিয়া তাহাকে ভ্রষ্ট করিল; সে তাহাদের দ্বারা অশুচি হইল, পরে তাহাদের প্রতি তাহার প্রাণে ঘৃণা হইল। 18 সে আপন বেশ্যাক্রিয়া প্রকাশ করিল, আপন উলঙ্গতা অনাবৃত করিল; তাহাতে আমার প্রাণে যেমন তাহার ভগিনীর প্রতি ঘৃণা হইয়াছিল, তেমনি তাহার প্রতিও ঘৃণা হইল। 19 আর সে আপন বেশ্যাক্রিয়া সকল বাড়াইল, যে সময়ে মিসর দেশে বেশ্যাক্রিয়া করিত, আপনার সেই যৌবনকাল স্মরণ করিল। 20 কেননা গর্দ্দভের ন্যায় মাংসবিশিষ্ট ও অশ্বের ন্যায় রেতোবিশিষ্ট তাহাদের শৃঙ্গারকারিগণে যে কামাসক্তা হইল। 21 এইরূপে, মিস্রীয়েরা যে সময়ে কৌমার্য্যকালীন স্তন বলিয়া তোমার চুচুক টিপিত, তুমি পুনর্ব্বার সেই যৌবনকালীয় কুকর্ম্মের চেষ্টা করিয়াছ। 22 এই জন্য, হে অহলীবা, প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দেখ, তোমার প্রাণে যাহাদের প্রতি ঘৃণা হইয়াছে, তোমার সেই প্রেমিকদিগকে আমি তোমার বিরুদ্ধে উঠাইব, চারিদিক্‌ হইতে তাহাদিগকে তোমার বিরুদ্ধে আনিব। 23 বাবিল-সন্তানেরা এবং কল্‌দীয়েরা সকলে, পকোদ, শোয়া ও কোয়া এবং তাহাদের সঙ্গে সমস্ত অশূর-সন্তান আনীত হইবে; তাহারা সকলে মনোহর যুবক, দেশাধ্যক্ষ ও শাসনকর্ত্তা, সেনানী ও সমাহূত লোক, সকলে অশ্বারোহী যোদ্ধা। 24 তাহারা অস্ত্রশস্ত্র, রথ, চক্র ও জাতিসমাজ সঙ্গে লইয়া তোমার বিরুদ্ধে আসিবে, চর্ম্ম, ঢাল ও টোপর ধরিয়া তোমার বিরুদ্ধে চারিদিকে উপস্থিত হইবে; এবং আমি তাহাদের হাতে বিচার-ভার সমর্পণ করিব, তাহারা আপনাদের বিচারানুসারে তোমার বিচার করিবে। 25 আর আমি আমার অন্তর্জ্বালা তোমার বিরুদ্ধে স্থাপন করিব; তাহারা তোমার প্রতি কোপে ব্যবহার করিবে; তাহারা তোমার নাসিকা ও কর্ণ কাটিয়া ফেলিবে ও তোমার অবশিষ্ট লোকেরা খড়্‌গে পতিত হইবে; তাহারা তোমার পুত্রকন্যাগণকে হরণ করিবে, ও তোমার অবশিষ্ট লোকেরা অগ্নিভক্ষিত হইবে। 26 তাহারা তোমাকে বিবস্ত্রা করিবে, ও তোমার চারু আভরণ সকল হরণ করিবে। 27 এইরূপে আমি তোমার কুকর্ম্ম ও মিসর দেশ হইতে *কৃত তোমার বেশ্যাক্রিয়া নিবৃত্ত করিব, তাহাতে তুমি উহাদের প্রতি আর দৃষ্টিপাত করিবে না, এবং মিসরকেও আর স্মরণ করিবে না। 28 কেননা প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দেখ, তুমি যাহাদিগকে দ্বেষ করিতেছ, যাহাদের প্রতি তোমার প্রাণে ঘৃণা হইয়াছে, তাহাদের হস্তে আমি তোমাকে সমর্পণ করিব। 29 তাহারা তোমার প্রতি দ্বেষ করিবে, ও তোমার সমস্ত শ্রমফল হরণ করিবে, এবং তোমাকে উলঙ্গিনী ও বিবস্ত্রা করিয়া পরিত্যাগ করিবে, তাহাতে তোমার ব্যভিচার-ঘটিত উলঙ্গতা, তোমার কুকর্ম্ম ও তোমার বেশ্যাক্রিয়া, অনাবৃত হইবে। 30 তুমি জাতিগণের অনুগমনে ব্যভিচার করিয়াছ, তাহাদের পুত্তলিগণ দ্বারা অশুচি হইয়াছ, এই নিমিত্ত এ সকল তোমার প্রতি করা যাইবে। 31 তুমি আপন ভগিনীর পথে গমন করিয়াছ, এই জন্য আমি তাহার পানপাত্র তোমার হস্তে দিব। 32 প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তুমি আপন ভগিনীর পাত্রে পান করিবে, সেই পাত্র গভীর ও বৃহৎ; তুমি পরিহাসের বিষয় হইবে; সেই পাত্রে অনেকটা ধরে। 33 তুমি পরিপূর্ণা হইবে মত্ততায় ও খেদে, বিস্ময়ের ও ধ্বংসের পাত্রে, তোমার ভগিনী শমরিয়ার পাত্রে। 34 তুমি তাহাতে পান করিবে, গাদও খাইয়া ফেলিবে, এবং তাহার খোলা চাটিবে, ও আপন স্তন বিদীর্ণ করিবে; কেননা আমি ইহা কহিলাম, ইহা প্রভু সদাপ্রভু বলেন। 35 অতএব প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তুমি আমাকে ভুলিয়া গিয়াছ, আমাকে পিছনে ফেলিয়াছ, তজ্জন্য তুমি আবার আপন কুকর্ম্মের ও বেশ্যাক্রিয়ার ভার বহন কর। 36 সদাপ্রভু আমাকে আরও কহিলেন, হে মনুষ্য-সন্তান, তুমি কি অহলার ও অহলীবার বিচার করিবে? তবে তাহাদের ঘৃণার্হ ক্রিয়া সকল তাহাদিগকে জ্ঞাত কর। 37 কেননা তাহারা ব্যভিচার-কার্য্য করিয়াছে, ও তাহাদের হস্তে রক্ত আছে; তাহারা আপন পুত্তলিগণের সহিত ব্যভিচার করিয়াছে, এবং আমার জন্য প্রসূত আপন সন্তানগণকে উহাদের গ্রাসার্থে *অগ্নির মধ্য দিয়া গমন করাইয়াছে। 38 তাহারা আমার প্রতি আরও এই অপকার্য্য করিয়াছে, সেই দিন আমার ধর্ম্মধাম অশুচি করিয়াছে, এবং তাহারা আমার বিশ্রামদিন অপবিত্র করিয়াছে। 39 কারণ যখন তাহারা আপনাদের পুত্তলিগণের উদ্দেশে আপন আপন বালকগণকে হনন করিত, তখন সেই দিন আমার ধর্ম্মধামে আসিয়া তাহা অপবিত্র করিত; আর দেখ, আমার গৃহমধ্যে তাহারা এই প্রকার করিয়াছে। 40 অধিকন্তু তোমরা দূরস্থ পুরুষদিগকে আনিবার জন্য দূত প্রেরণ করিয়াছ; দূর প্রেরিত হইলে, দেখ, তাহারা আসিল; তুমি তাহাদের নিমিত্ত স্নান করিলে, চক্ষুতে অঞ্জন দিলে, ও অলঙ্কারে আপনাকে বিভূষিত করিলে; 41 পরে রাজকীয় শয্যায় বসিয়া তৎসম্মুখে মেজ সাজাইয়া তাহার উপরে আমার ধূপ ও আমার তৈল রাখিলে। 42 আর তাহার সহিত নিশ্চিন্ত লোকারণ্যের কলরব হইল, এবং সাধারণ লোকদের সহিত প্রান্তর হইতে মদ্যপায়ীরা আনীত হইল, তাহারা ঐ দুই রমণীর হস্তে কঙ্কণ ও মস্তকে চারু মুকুট দিল। 43 তখন ব্যভিচার-ক্রিয়াতে যে জীর্ণা, সেই স্ত্রীর বিষয়ে আমি কহিলাম, এখন তাহারা ইহার সহিত, এবং এ তাহাদের সহিত, ব্যভিচার কার্য্য করিবে। 44 আর পুরুষেরা যেমন বেশ্যার কাছে গমন করে, তেমনি তাহারা উহার কাছে গমন করিত; এইরূপে তাহারা অহলার ও অহলীবার, সেই দুই কুকর্ম্মকারিণী রমণীর কাছে গমন করিত। 45 আর ধার্ম্মিক ব্যক্তিরাই ব্যভিচারিণী ও রক্তপাতকারিণীদের বিচারানুসারে তাহাদের বিচার করিবে; কেননা তাহারা ব্যভিচারিণী, ও তাহাদের হস্তে রক্ত আছে। 46 বস্তুতঃ প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, আমি তাহাদের বিরুদ্ধে জনসমাজ আনিব, এবং তাহাদিগকে ভাসিয়া বেড়াইতে ও লুটদ্রব্য হইতে দিব। 47 সেই সমাজ তাহাদিগকে প্রস্তরাঘাত করিবে, ও আপনাদের খড়্‌গে খণ্ড খণ্ড করিবে; তাহারা তাহাদের পুত্রকন্যাদিগকে বধ করিবে, এবং তাহাদের গৃহ আগুনে পোড়াইয়া দিবে। 48 এই প্রকারে আমি দেশ হইতে কুকর্ম্ম নিবৃত্ত করিব, তাহাতে সমুদয় স্ত্রীলোক শিক্ষা পাইবে, তোমাদের কুকর্ম্মের ন্যায় আচরণ করিবে না। 49 আর লোকেরা তোমাদের কুকর্ম্মের বোঝা তোমাদের উপরে রাখিবে, এবং তোমরা আপনাদের পুত্তলিগণ-সম্বন্ধীয় পাপ সকল বহন করিবে; তাহাতে তোমরা জানিবে যে, আমিই প্রভু সদাপ্রভু।
1. আর সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার নিকটে উপস্থিত হইল, 2. হে মনুষ্য-সন্তান, দুটী স্ত্রীলোক ছিল, তাহারা এক মাতার কন্যা। 3. তাহারা মিসরে ব্যভিচার যৌবনকালেই করিল; সেখানে তাদের স্তন মর্দ্দিত হইত, সেখানে লোকেরা তাহাদের কৌমার্য্যকালীন চুচুক টিপিত। 4. তাহাদের মধ্যে জ্যেষ্ঠার নাম অহলা [তাহার তাম্বু], ও তাহার ভগিনীর নাম অহলীবা [তাহার মধ্যে আমার তাম্বু]; তাহারা আমার হইল এবং পুত্রকন্যা প্রসব করিল। তাহাদের নামের তাৎপর্য এই, অহলা শমরিয়া, ও অহলীবা যিরূশালেম। 5. আমার থাকিতে অহলা ব্যভিচার করিল, আপনার প্রেমিকগণে, নিকটবর্ত্তী অশূরীয়দিগেতে কামাসক্তা হইল; 6. ইহারা নীলবস্ত্র পরিহিত, দেশাধ্যক্ষ ও শাসনকর্ত্তা, সকলেই মনোহর যুবক ও অশ্বারোহী যোদ্ধা। 7. সে তাহাদের অর্থাৎ সমস্ত উৎকৃষ্ট অশূর-সন্তানের সহিত ব্যভিচার করিত, এবং যাহাদিগেতে কামাসক্তা হইত, তাহাদের সকলকার সমস্ত পুত্তলি দ্বারা ভ্রষ্ট হইত। 8. আবার সে মিসরের সময় হইতে আপনার ব্যভিচার ত্যাগ করে নাই; কেননা তাহার যৌবনকালে লোকে তাহার সহিত শয়ন করিত, তাহারাই তাহার কৌমার্য্যকালীন চুচুক টিপিত, ও তাহার সহিত রতিক্রিয়া করিত। 9. এই জন্য আমি তাহার প্রেমিকদের হস্তে,—সে যাহাদিগেতে কামাসক্তা ছিল, সেই অশূর-সন্তানদের হস্তে তাহাকে সমর্পণ করিলাম। 10. তাহারা তাহার উলঙ্গতা অনাবৃত করিল, তাহার পুত্রকন্যাদিগকে হরণ করিয়া তাহাকে খড়্‌গ দ্বারা বধ করিল; এইরূপে স্ত্রীলোকদের মধ্যে তাহার অখ্যাতি হইল, কারণ লোকেরা তাহাকে বিচারসিদ্ধ দণ্ড দিল। 11. এই সকল দেখিয়াও তাহার ভগিনী অহলীবা আপন কামাসক্তিতে তাহা অপেক্ষা, হাঁ, বেশ্যাক্রিয়ায় সেই ভগিনী অপেক্ষা অধিক ভ্রষ্ট হইল। 12. সে নিকটবর্ত্তী অশূর-সন্তানগণে—দেশাধ্যক্ষগণে ও শাসনকর্ত্তৃগণে—কামাসক্তা হইল; তাহারা দিব্য পরিচ্ছদান্বিত অশ্বারোহী যোদ্ধা, সকলেই মনোহর যুবক। 13. আর আমি দেখিলাম, সে অশুচি, উভয়ে একই পথে চলিতেছে। 14. আর সে আপন বেশ্যাক্রিয়া বাড়াইল, কেননা সে ভিত্তিতে চিত্রিত পুরুষদিগকে অর্থাৎ কল্‌দীয়দের সিন্দূরচিত্রিত প্রতিরূপ দেখিল; 15. তাহারা পটিকাতে বদ্ধকটি, তাহাদের মস্তকে রঙ্গে ডুবান দীর্ঘ উষ্ণীষ, তাহারা সকলে দেখিতে সেনানীদের ন্যায়, কল্‌দীয় দেশজাত বাবিল-সন্তানদের রূপবিশিষ্ট। 16. তাহাদিগকে দেখিবামাত্র সে কামাসক্তা হইয়া কল্‌দীয় দেশে তাহাদের কাছে দূত প্রেরণ করিল। 17. তাহাতে বাবিল-সন্তানেরা তাহার কাছে আসিয়া প্রেম-শয্যায় শয়ন করিল, ও ব্যভিচার করিয়া তাহাকে ভ্রষ্ট করিল; সে তাহাদের দ্বারা অশুচি হইল, পরে তাহাদের প্রতি তাহার প্রাণে ঘৃণা হইল। 18. সে আপন বেশ্যাক্রিয়া প্রকাশ করিল, আপন উলঙ্গতা অনাবৃত করিল; তাহাতে আমার প্রাণে যেমন তাহার ভগিনীর প্রতি ঘৃণা হইয়াছিল, তেমনি তাহার প্রতিও ঘৃণা হইল। 19. আর সে আপন বেশ্যাক্রিয়া সকল বাড়াইল, যে সময়ে মিসর দেশে বেশ্যাক্রিয়া করিত, আপনার সেই যৌবনকাল স্মরণ করিল। 20. কেননা গর্দ্দভের ন্যায় মাংসবিশিষ্ট ও অশ্বের ন্যায় রেতোবিশিষ্ট তাহাদের শৃঙ্গারকারিগণে যে কামাসক্তা হইল। 21. এইরূপে, মিস্রীয়েরা যে সময়ে কৌমার্য্যকালীন স্তন বলিয়া তোমার চুচুক টিপিত, তুমি পুনর্ব্বার সেই যৌবনকালীয় কুকর্ম্মের চেষ্টা করিয়াছ। 22. এই জন্য, হে অহলীবা, প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দেখ, তোমার প্রাণে যাহাদের প্রতি ঘৃণা হইয়াছে, তোমার সেই প্রেমিকদিগকে আমি তোমার বিরুদ্ধে উঠাইব, চারিদিক্‌ হইতে তাহাদিগকে তোমার বিরুদ্ধে আনিব। 23. বাবিল-সন্তানেরা এবং কল্‌দীয়েরা সকলে, পকোদ, শোয়া ও কোয়া এবং তাহাদের সঙ্গে সমস্ত অশূর-সন্তান আনীত হইবে; তাহারা সকলে মনোহর যুবক, দেশাধ্যক্ষ ও শাসনকর্ত্তা, সেনানী ও সমাহূত লোক, সকলে অশ্বারোহী যোদ্ধা। 24. তাহারা অস্ত্রশস্ত্র, রথ, চক্র ও জাতিসমাজ সঙ্গে লইয়া তোমার বিরুদ্ধে আসিবে, চর্ম্ম, ঢাল ও টোপর ধরিয়া তোমার বিরুদ্ধে চারিদিকে উপস্থিত হইবে; এবং আমি তাহাদের হাতে বিচার-ভার সমর্পণ করিব, তাহারা আপনাদের বিচারানুসারে তোমার বিচার করিবে। 25. আর আমি আমার অন্তর্জ্বালা তোমার বিরুদ্ধে স্থাপন করিব; তাহারা তোমার প্রতি কোপে ব্যবহার করিবে; তাহারা তোমার নাসিকা ও কর্ণ কাটিয়া ফেলিবে ও তোমার অবশিষ্ট লোকেরা খড়্‌গে পতিত হইবে; তাহারা তোমার পুত্রকন্যাগণকে হরণ করিবে, ও তোমার অবশিষ্ট লোকেরা অগ্নিভক্ষিত হইবে। 26. তাহারা তোমাকে বিবস্ত্রা করিবে, ও তোমার চারু আভরণ সকল হরণ করিবে। 27. এইরূপে আমি তোমার কুকর্ম্ম ও মিসর দেশ হইতে [কৃত] তোমার বেশ্যাক্রিয়া নিবৃত্ত করিব, তাহাতে তুমি উহাদের প্রতি আর দৃষ্টিপাত করিবে না, এবং মিসরকেও আর স্মরণ করিবে না। 28. কেননা প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দেখ, তুমি যাহাদিগকে দ্বেষ করিতেছ, যাহাদের প্রতি তোমার প্রাণে ঘৃণা হইয়াছে, তাহাদের হস্তে আমি তোমাকে সমর্পণ করিব। 29. তাহারা তোমার প্রতি দ্বেষ করিবে, ও তোমার সমস্ত শ্রমফল হরণ করিবে, এবং তোমাকে উলঙ্গিনী ও বিবস্ত্রা করিয়া পরিত্যাগ করিবে, তাহাতে তোমার ব্যভিচার-ঘটিত উলঙ্গতা, তোমার কুকর্ম্ম ও তোমার বেশ্যাক্রিয়া, অনাবৃত হইবে। 30. তুমি জাতিগণের অনুগমনে ব্যভিচার করিয়াছ, তাহাদের পুত্তলিগণ দ্বারা অশুচি হইয়াছ, এই নিমিত্ত এ সকল তোমার প্রতি করা যাইবে। 31. তুমি আপন ভগিনীর পথে গমন করিয়াছ, এই জন্য আমি তাহার পানপাত্র তোমার হস্তে দিব। 32. প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তুমি আপন ভগিনীর পাত্রে পান করিবে, সেই পাত্র গভীর ও বৃহৎ; তুমি পরিহাসের বিষয় হইবে; সেই পাত্রে অনেকটা ধরে। 33. তুমি পরিপূর্ণা হইবে মত্ততায় ও খেদে, বিস্ময়ের ও ধ্বংসের পাত্রে, তোমার ভগিনী শমরিয়ার পাত্রে। 34. তুমি তাহাতে পান করিবে, গাদও খাইয়া ফেলিবে, এবং তাহার খোলা চাটিবে, ও আপন স্তন বিদীর্ণ করিবে; কেননা আমি ইহা কহিলাম, ইহা প্রভু সদাপ্রভু বলেন। 35. অতএব প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তুমি আমাকে ভুলিয়া গিয়াছ, আমাকে পিছনে ফেলিয়াছ, তজ্জন্য তুমি আবার আপন কুকর্ম্মের ও বেশ্যাক্রিয়ার ভার বহন কর। 36. সদাপ্রভু আমাকে আরও কহিলেন, হে মনুষ্য-সন্তান, তুমি কি অহলার ও অহলীবার বিচার করিবে? তবে তাহাদের ঘৃণার্হ ক্রিয়া সকল তাহাদিগকে জ্ঞাত কর। 37. কেননা তাহারা ব্যভিচার-কার্য্য করিয়াছে, ও তাহাদের হস্তে রক্ত আছে; তাহারা আপন পুত্তলিগণের সহিত ব্যভিচার করিয়াছে, এবং আমার জন্য প্রসূত আপন সন্তানগণকে উহাদের গ্রাসার্থে [অগ্নির মধ্য দিয়া] গমন করাইয়াছে। 38. তাহারা আমার প্রতি আরও এই অপকার্য্য করিয়াছে, সেই দিন আমার ধর্ম্মধাম অশুচি করিয়াছে, এবং তাহারা আমার বিশ্রামদিন অপবিত্র করিয়াছে। 39. কারণ যখন তাহারা আপনাদের পুত্তলিগণের উদ্দেশে আপন আপন বালকগণকে হনন করিত, তখন সেই দিন আমার ধর্ম্মধামে আসিয়া তাহা অপবিত্র করিত; আর দেখ, আমার গৃহমধ্যে তাহারা এই প্রকার করিয়াছে। 40. অধিকন্তু তোমরা দূরস্থ পুরুষদিগকে আনিবার জন্য দূত প্রেরণ করিয়াছ; দূর প্রেরিত হইলে, দেখ, তাহারা আসিল; তুমি তাহাদের নিমিত্ত স্নান করিলে, চক্ষুতে অঞ্জন দিলে, ও অলঙ্কারে আপনাকে বিভূষিত করিলে; 41. পরে রাজকীয় শয্যায় বসিয়া তৎসম্মুখে মেজ সাজাইয়া তাহার উপরে আমার ধূপ ও আমার তৈল রাখিলে। 42. আর তাহার সহিত নিশ্চিন্ত লোকারণ্যের কলরব হইল, এবং সাধারণ লোকদের সহিত প্রান্তর হইতে মদ্যপায়ীরা আনীত হইল, তাহারা ঐ দুই রমণীর হস্তে কঙ্কণ ও মস্তকে চারু মুকুট দিল। 43. তখন ব্যভিচার-ক্রিয়াতে যে জীর্ণা, সেই স্ত্রীর বিষয়ে আমি কহিলাম, এখন তাহারা ইহার সহিত, এবং এ তাহাদের সহিত, ব্যভিচার কার্য্য করিবে। 44. আর পুরুষেরা যেমন বেশ্যার কাছে গমন করে, তেমনি তাহারা উহার কাছে গমন করিত; এইরূপে তাহারা অহলার ও অহলীবার, সেই দুই কুকর্ম্মকারিণী রমণীর কাছে গমন করিত। 45. আর ধার্ম্মিক ব্যক্তিরাই ব্যভিচারিণী ও রক্তপাতকারিণীদের বিচারানুসারে তাহাদের বিচার করিবে; কেননা তাহারা ব্যভিচারিণী, ও তাহাদের হস্তে রক্ত আছে। 46. বস্তুতঃ প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, আমি তাহাদের বিরুদ্ধে জনসমাজ আনিব, এবং তাহাদিগকে ভাসিয়া বেড়াইতে ও লুটদ্রব্য হইতে দিব। 47. সেই সমাজ তাহাদিগকে প্রস্তরাঘাত করিবে, ও আপনাদের খড়্‌গে খণ্ড খণ্ড করিবে; তাহারা তাহাদের পুত্রকন্যাদিগকে বধ করিবে, এবং তাহাদের গৃহ আগুনে পোড়াইয়া দিবে। 48. এই প্রকারে আমি দেশ হইতে কুকর্ম্ম নিবৃত্ত করিব, তাহাতে সমুদয় স্ত্রীলোক শিক্ষা পাইবে, তোমাদের কুকর্ম্মের ন্যায় আচরণ করিবে না। 49. আর লোকেরা তোমাদের কুকর্ম্মের বোঝা তোমাদের উপরে রাখিবে, এবং তোমরা আপনাদের পুত্তলিগণ-সম্বন্ধীয় পাপ সকল বহন করিবে; তাহাতে তোমরা জানিবে যে, আমিই প্রভু সদাপ্রভু।
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 1  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 2  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 3  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 4  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 5  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 6  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 7  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 8  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 9  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 10  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 11  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 12  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 13  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 14  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 15  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 16  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 17  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 18  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 19  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 20  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 21  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 22  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 23  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 24  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 25  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 26  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 27  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 28  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 29  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 30  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 31  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 32  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 33  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 34  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 35  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 36  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 37  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 38  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 39  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 40  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 41  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 42  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 43  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 44  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 45  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 46  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 47  
  • এজেকিয়েল অধ্যায় 48  
×

Alert

×

Bengali Letters Keypad References