এজেকিয়েল অধ্যায় 29
1. দশম বৎসরের দশম মাসে, মাসের দ্বাদশ দিনে, সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার নিকটে উপস্থিত হইল;
2. হে মনুষ্য-সন্তান, তুমি মিসর-রাজ ফরৌণের বিরুদ্ধে মুখ রাখ, এবং তাহার বিরুদ্ধে ও সমস্ত মিসরের বিরুদ্ধে ভাববাণী বল।
3. তুমি এই কথা বল, প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, হে মিসর-রাজ ফরৌণ, দেখ, আমি তোমার বিপক্ষ; তুমি সেই প্রকাণ্ড কুম্ভীর, যে আপন স্রোতঃসমূহের মধ্যে শয়ন করে, বলে, আমার নদী আমারই, আমিই আপনার জন্য ইহা উৎপন্ন করিয়াছি।
4. কিন্তু আমি তোমার হনু ফুঁড়িব, তোমার স্রোতঃসমূহের মৎস্য সকল তোমার আঁইসে সংলগ্ন করিব, এবং তোমার স্রোতঃসমূহের মধ্য হইতে তোমাকে তুলিব; তোমার স্রোতঃসমূহের মৎস্য সকল তখনও তোমার আঁইসে লাগিয়া থাকিবে।
5. আর আমি তোমার স্রোতঃসমূহের সমস্ত মৎস্যশুদ্ধ তোমাকে প্রান্তরে ফেলিয়া দিব; তুমি মাঠের পৃষ্ঠে পতিত থাকিবে, সংগৃহিত কি সঞ্চিত হইবে না; আমি তোমাকে ভূমির পশুদের ও আকাশের পক্ষীদের ভক্ষ্যরূপে দিলাম।
6. তাহাতে মিসর-নিবাসী সকলে জানিবে যে, আমিই সদাপ্রভু, যেহেতু তাহারা ইস্রায়েল-কুলের পক্ষে নলের যষ্টি হইয়াছিল।
7. যখন তাহারা তোমাকে হস্তে ধরিত, তখন তুমি ফাটিয়া তাহাদের সমস্ত স্কন্ধ বিদীর্ণ করিতে; এবং যখন তাহারা তোমার উপরে নির্ভর করিত, তখন তুমি ভাঙ্গিয়া যাইতে ও তাহাদের সমস্ত কটিদেশ অসাড় করিতে।
8. সেই জন্য, প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দেখ, আমি তোমার বিরুদ্ধে খড়্গ আনিব, ও তোমার মধ্য হইতে মনুষ্য ও পশু উচ্ছিন্ন করিব।
9. মিসর দেশ ধ্বংস ও উৎসন্ন স্থান হইবে; তাহাতে তাহারা জানিবে যে, আমিই সদাপ্রভু; যেহেতু তুমি বলিতে, নদী আমার, আমিই তাহা উৎপন্ন করিয়াছি।
10. এই জন্য দেখ, আমি তোমার ও তোমার স্রোতঃসমূহের বিপক্ষ; আমি মিগ্দোল অবধি সিবেনী পর্য্যন্ত, ও কূশ দেশের সীমা পর্য্যন্ত, মিসর দেশ নিতান্ত উৎসন্ন ও ধ্বংসস্থান করিব।
11. মনুষ্যের চরণ তাহা দিয়া যাতায়াত করিবে না; ও পশুর চরণ তাহা দিয়া যাতায়াত করিবে না; এবং চল্লিশ বৎসর পর্য্যন্ত তথায় বসতি হইবে না।
12. আর আমি মিসর দেশকে ধ্বংসিত দেশসমূহের মধ্য ধ্বংসস্থান করিব, এবং উচ্ছিন্ন নগরসমূহের মধ্যে তাহার নগর সকল চল্লিশ বৎসর পর্য্যন্ত ধ্বংসস্থান থাকিবে; আর আমি মিস্রীয়দিগকে জাতিগণের মধ্যে ছিন্নভিন্ন ও দেশবিদেশে বিকীর্ণ করিব।
13. কেননা প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, যে সকল জাতির মধ্যে মিস্রীয়েরা ছিন্নভিন্ন হইবে, তাহাদের মধ্য হইতে আমি চল্লিশ বৎসরের শেষে তাহাদিগকে সংগ্রহ করিব।
14. আর মিসরের বন্দি-দশা ফিরাইব, ও তাহাদের উৎপত্তিস্থান পথ্রোষ দেশে তাহাদিগকে প্রত্যাগমন করাইব, তথায় তাহারা খর্ব্ব এক রাজ্য হইবে।
15. অন্যান্য রাজ্য অপেক্ষা তাহা খর্ব্ব হইবে, এবং আপনাকে আর জাতিগণের উপরে বড় করিয়া তুলিবে না; আমি তাহাদিগকে ন্যূন করিব, তাহারা আর জাতিগণের উপরে কর্ত্তৃত্ব করিবে না।
16. মিসর আর ইস্রায়েল-কুলের বিশ্বাসভূমি হইবে না; ইহারা উহাদের দিকে ফিরিয়া গিয়াছে বলিয়া আর অপরাধ স্মরণ করাইবে না; তাহাতে তাহারা জানিবে যে, আমিই প্রভু সদাপ্রভু।
17. আর সপ্তবিংশ বৎসরের প্রথম মাসে, মাসের প্রথম দিবসে, সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার নিকটে উপস্থিত হইল,
18. হে মনুষ্য-সন্তান, বাবিল-রাজ নবূখদ্রিৎসর আপন সৈন্যসামন্তকে সোরের বিরুদ্ধে ভারী পরিশ্রম করাইয়াছে; সকলের মস্তক টাকপড়া ও সকলের স্কন্ধ জীর্ণত্বক্ হইয়াছে; কিন্তু সোরের বিরুদ্ধে সে যে পরিশ্রম করিয়াছে, তাহার বেতন সে কিম্বা তাহার সৈন্য সোর হইতে পায় নাই।
19. এই জন্য প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দেখ, আমি বাবিল-রাজ নবূখদ্রিৎসরকে মিসর দেশ দিব; সে তাহার লোকারণ্য লইয়া যাইবে, তাহার দ্রব্য লুট করিবে, ও তাহার সম্পত্তি অপহরণ করিবে; তাহাই তাহার সৈন্যের বেতন হইবে।
20. সে যে পরিশ্রম করিয়াছে, তাহার বেতন বলিয়া আমি মিসর দেশ তাহাকে দিলাম, কেননা তাহারা আমারই জন্য কার্য্য করিয়াছে, ইহা প্রভু সদাপ্রভু বলেন।
21. সেই দিন আমি ইস্রায়েল-কুলের নিমিত্ত এক শৃঙ্গ প্ররোহণ করাইব, এবং তাহাদের মধ্যে তোমার মুখ খুলিয়া দিব; তাহাতে তাহারা জানিবে যে, আমিই সদাপ্রভু।