প্রবচন অধ্যায় 7
1. বৎস, আমার কথা সকল পালন কর, আমার আজ্ঞা সকল তোমার কাছে সঞ্চয় কর।
2. আমার আজ্ঞা সকল পালন কর, জীবন পাইবে, নয়ন-তারার ন্যায় আমার ব্যবস্থা রক্ষা কর;
3. তোমার অঙ্গুলি-কলাপে সেগুলি বাঁধিয়া রাখ, তোমার হৃদয়-ফলকে তাহা লিখিয়া রাখ।
4. প্রজ্ঞাকে বল, তুমি আমার ভগিনী, সুবিবেচনাকে তোমার সখী বল;
5. তাহাতে তুমি পরকীয়া স্ত্রী হইতে রক্ষা পাইবে, চাটুভাষিণী বিজাতীয়া হইতে রক্ষা পাইবে।
6. আমি আপন গৃহের বাতায়ন হইতে খড়খড়ি দিয়া নিরীক্ষণ করিতেছিলাম;
7. অবোধদের মধ্যে আমার দৃষ্টি পড়িল, আমি যুবকগণের মধ্যে এক জনকে দেখিলাম, সে বুদ্ধিবিহীন যুবক।
8. সে গলিতে গেল, ঐ স্ত্রীর কোণের নিকটে আসিল, তাহার বাটীর পথে চলিল।
9. তখন সন্ধ্যাকাল, দিবাবসান হইয়াছিল, রাত্রিও অন্ধকার হইয়াছিল।
10. তখন দেখ, এক স্ত্রী তাহার সম্মুখে আসিল, সে বেশ্যা-বেশধারিণী ও চতুর-চিত্তা;
11. সে কলহকারিণী ও অবাধ্যা, তাহার চরণ ঘরে থাকে না;
12. সে কখনও সড়কে, কখনও চকে, কোণে কোণে অপেক্ষাতে থাকে।
13. সে তাহাকে ধরিয়া চুম্বন করিল, নির্লজ্জ মুখে তাহাকে কহিল,
14. ‘আমাকে মঙ্গলার্থক বলিদান করিতে হইয়াছে, আজ আমি আপন মানত পূর্ণ করিয়াছি;
15. তাই তোমার সহিত সাক্ষাৎ করিতে বাহিরে আসিয়াছি, সযত্নে তোমার মুখ দেখিতে আসিয়াছি, তোমাকে পাইয়াছি।
16. আমি খাটে বুটাদার চাদর পাড়িয়াছি, মিস্রীয় সূত্রের চিত্রবিচিত্র বস্ত্র পাড়িয়াছি।
17. আমি গন্ধরস, অগুরু ও দারুচিনি দিয়া আপন শয্যা আমোদিত করিয়াছি।
18. চল, আমরা প্রভাত পর্য্যন্ত কামরসে মত্ত হই, আমরা প্রেম বাহুল্যে বিলাস করি।
19. কেননা কর্ত্তা ঘরে নাই, তিনি দূরে যাত্রা করিয়াছেন;
20. টাকার তোড়া সঙ্গে লইয়া গিয়াছেন, পূর্ণিমার দিন ঘরে আসিবেন।’
21. অনেক মধুর বাক্যে সে তাহার চিত্ত হরণ করিল, ওষ্ঠাধরের চাটুবাদে তাহাকে আকর্ষণ করিল।
22. অমনি সে তাহার পশ্চাতে গেল, যেমন গোরু হত হইতে যায়, যেমন শৃঙ্খলবদ্ধ ব্যক্তি নির্ব্বোধের শাস্তি পাইতে যায়;
23. শেষে তাহার যকৃৎ বাণে বিদ্ধ হইল; যেমন পক্ষী ফাঁদে পড়িতে বেগে ধাবিত হয়, আর জানে না যে, তাহা প্রাণনাশক।
24. এখন বৎসগণ, আমার বাক্য শুন, আমার মুখের কথায় অবধান কর।
25. তোমার চিত্ত উহার পথে না যাউক, তুমি উহার মার্গে ভ্রমণ করিও না।
26. কেননা সে অনেককে আঘাত করিয়া নিপাত করিয়াছে, তাহার নিহত লোকেরা বৃহৎ দল।
27. তাহার গৃহ পাতালের পথ, যে পথ মৃত্যুর অন্তঃপুরে নামিয়া যায়।