পবিত্র বাইবেল

বাইবেল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া (BSI)
লেবীয় পুস্তক

লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 26

1 তোমরা আপনাদের জন্য অবস্তু প্রতিমা নির্ম্মাণ করিও না, এবং ক্ষোদিত প্রতিমা কিম্বা স্তম্ভ স্থাপন করিও না, ও তাহার কাছে প্রণিপাত করিবার নিমিত্তে তোমাদের দেশে কোন ক্ষোদিত প্রস্তর রাখিও না; কেননা আমি সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বর। 2 তোমরা আমার বিশ্রামবার সকল পালন করিও, ও আমার ধর্ম্মধামের সমাদর করিও; আমি সদাপ্রভু। 3 যদি তোমরা আমার বিধিপথে চল, আমার আজ্ঞা সকল মান ও সে সমস্ত পালন কর, 4 তবে আমি যথাকালে তোমাদিগকে বৃষ্টি দান করিব; তাহাতে ভূমি শস্য উৎপন্ন করিবে, ও ক্ষেত্রের বৃক্ষ সকল স্ব স্ব ফল দিবে। 5 তোমাদের শস্যমর্দ্দনকাল দ্রাক্ষাচয়নকাল পর্য্যন্ত থাকিবে, ও দ্রাক্ষাচয়নকাল বীজবপনকাল পর্য্যন্ত থাকিবে; এবং তোমরা তৃপ্তি পর্য্যন্ত অন্ন ভোজন করিবে, ও নিরাপদে নিজ দেশে বাস করিবে। 6 আর আমি দেশে শান্তি প্রদান করিব; তোমরা শয়ন করিলে কেহ তোমাদিগকে ভয় দেখাইবে না; এবং আমি তোমাদের দেশ হইতে হিংস্র জন্তুদিগকে দূর করিয়া দিব; ও তোমাদের দেশে খড়গ ভ্রমণ করিবে না। 7 আর তোমরা আপনাদের শত্রুগণকে তাড়াইয়া দিবে, ও তাহারা তোমাদের সম্মুখে খড়েগ পতিত হইবে। 8 আর তোমাদের পাঁচ জন তাহাদের এক শত জনকে তাড়াইয়া দিবে, তোমাদের এক শত জন দশ সহস্র লোককে তাড়াইয়া দিবে, এবং তোমাদের শত্রুগণ তোমাদের সম্মুখে খড়েগ পতিত হইবে। 9 আর আমি তোমাদের প্রতি প্রসন্নবদন হইব, তোমাদিগকে ফলবন্ত ও বহুবংশ করিব, ও তোমাদের সহিত আমার নিয়ম স্থির করিব। 10 আর তোমরা সঞ্চিত পুরাতন শস্য ভোজন করিবে, ও নূতনের সম্মুখ হইতে পুরাতন শস্য বাহির করিবে। 11 আর আমি তোমাদের মধ্যে আপন আবাস রাখিব, আমার প্রাণ তোমাদিগকে ঘৃণা করিবে না। 12 আর আমি তোমাদের মধ্যে গমনাগমন করিব, ও তোমাদের ঈশ্বর হইব, এবং তোমরা আমার প্রজা হইবে। 13 আমি সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বর, আমি মিসর দেশ হইতে তোমাদিগকে বাহির করিয়া আনিয়াছি, তাহাদের দাস থাকিতে দিই নাই; আমি তোমাদের যোঁয়ালি-কাষ্ঠ ভাঙ্গিয়া সোজা ভাবে তোমাদিগকে গমন করাইয়াছি। 14 কিন্তু যদি তোমরা আমার কথা না শুন, আমার এই সকল আজ্ঞা পালন না কর, 15 যদি আমার বিধি অগ্রাহ্য কর, ও তোমাদের প্রাণ আমার শাসন সকল ঘৃণা করে, এইরূপে তোমরা আমার আজ্ঞা পালন না করিয়া আমার নিয়ম ভঙ্গ কর, তবে আমিও তোমাদের প্রতি এই ব্যবহার করিব; 16 তোমাদের জন্য বিহ্বলতা, যক্ষ্মা ও কম্পজ্বর নিরূপণ করিব, যাহাতে তোমাদের চক্ষু ক্ষীণ হইয়া পড়িবে, ও প্রাণ ব্যথা পাইবে, এবং তোমাদের বীজ বপন বৃথা হইবে, কেননা তোমাদের শত্রুগণ তাহা ভক্ষণ করিবে। 17 আর আমি তোমাদের প্রতি বিমুখ হইব; তাহাতে তোমরা আপন শত্রুগণের সম্মুখে আহত হইবে; যাহারা তোমাদিগকে দ্বেষ করে, তাহারা তোমাদের উপরে কর্ত্তৃত্ব করিবে, এবং কেহ তোমাদিগকে না তাড়াইলেও তোমরা পলায়ন করিবে। 18 আর যদি তোমরা ইহাতেও আমার বাক্যে মনোযোগ না কর, তবে আমি তোমাদের পাপপ্রযুক্ত তোমাদিগকে সাত গুণ অধিক শাস্তি দিব। 19 আমি তোমাদের বলের গর্ব্ব চূর্ণ করিব, ও তোমাদের আকাশ লৌহের মত ও তোমাদের ভূমি পিত্তলের মত করিব। 20 তাহাতে তোমাদের বল নিরর্থক নিঃশেষিত হইবে, কেননা তোমাদের ভূমি শস্য উৎপন্ন করিবে না, ও দেশস্থ বৃক্ষ সকল স্ব স্ব ফল দিবে না। 21 আর যদি তোমরা আমার বিপরীত আচরণ কর, ও আমার কথা শুনিতে না চাও, তবে আমি তোমাদের পাপানুসারে তোমাদিগকে আরও সাত গুণ আঘাত করিব। 22 আর তোমাদের মধ্যে বনপশু পাঠাইব; তাহারা তোমাদের সন্তান হরণ করিবে, তোমাদের পশুপাল বিনষ্ট করিবে; তোমাদিগকে সংখ্যায় ন্যূন করিবে; আর তোমাদের রাজপথ সকল ধ্বংসিত হইবে। 23 ইহাতেও যদি আমার উদ্দেশে শাসিত না হও, কিন্তু আমার বিপরীত আচরণ কর, 24 তবে আমিও তোমাদের বিপরীত আচরণ করিব, ও তোমাদের পাপপ্রযুক্ত আমিই তোমাদিগকে সাত বার আঘাত করিব। 25 আমি নিয়মলঙ্ঘনের প্রতিফল দিবার জন্য তোমাদের উপরে খড়গ আনিব, তোমরা আপন আপন নগরমধ্যে একত্রীভূত হইবে, আমি তোমাদের মধ্য মহামারী পাঠাইব, এবং তোমরা শত্রুহস্তে সমর্পিত হইবে। 26 আমি তোমাদের অন্নরূপ যষ্টি ভাঙ্গিলে দশ জন স্ত্রীলোক এক তুন্দুরে তোমাদের রুটী পাক করিবে, ও তোমাদের রুটী তৌল করিয়া তোমাদিগকে দিবে, কিন্তু তোমরা তাহা খাইয়া তৃপ্ত হইবে না। 27 আর এই সকলেতেও যদি তোমরা আমার কথা না শুন, আমার বিপরীত আচরণ কর, 28 তবে আমি ক্রোধে তোমাদের বিপরীত আচরণ করিব, এবং আমিই তোমাদের পাপপ্রযুক্ত তোমাদিগকে সাত গুণ শাস্তি দিব। 29 আর তোমরা আপন আপন পুত্রগণের মাংস ভোজন করিবে, ও আপন আপন কন্যাগণের মাংস ভোজন করিবে। 30 আর আমি তোমাদের উচ্চস্থল সকল ভগ্ন করিব, তোমাদের সূর্য্যপ্রতিমা সকল নষ্ট করিব, ও তোমাদের পুত্তলিকাদের শবের উপরে তোমাদের শব ফেলিয়া দিব; এবং আমার প্রাণ তোমাদিগকে ঘৃণা করিবে। 31 আর আমি তোমাদের নগর সকল উৎসন্ন করিব, তোমাদের ধর্ম্মধাম সকল ধ্বংস করিব, ও তোমাদের সৌরভের আঘ্রাণ লইব না। 32 আর আমি দেশ ধ্বংস করিব, ও তত্রবাসী তোমাদের শত্রুগণ তদ্বিষয়ে চমৎকৃত হইবে। 33 আর আমি তোমাদিগকে জাতিগণের মধ্যে ছিন্নভিন্ন করিব, ও তোমাদের পশ্চাতে খড়গ নিষ্কোষ করিব, তাহাতে তোমাদের দেশ সকল ধ্বংসস্থান ও তোমাদের নগর সকল উৎসন্ন হইবে। 34 তখন যত দিন দেশ ধ্বংসস্থান থাকিবে ও তোমরা শত্রুগণের দেশে বাস করিবে, তত দিন ভূমি স্বীয় বিশ্রামকাল ভোগ করিবে; তৎকালে ভূমি বিশ্রাম পাইবে, ও স্বীয় বিশ্রামকাল ভোগ করিবে। 35 যত কাল দেশ ধ্বংসস্থান হইয়া থাকিবে, তত কাল বিশ্রাম করিবে; কেননা যখন তোমরা দেশে বাস করিতে, তখন দেশ তোমাদের বিশ্রামকালে বিশ্রাম ভোগ করিত না। 36 আর তোমাদের মধ্যে যাহারা অবশিষ্ট থাকিবে, আমি শত্রুদেশে তাহাদের হৃদয়ে বিষণ্ণতা প্রেরণ করিব, এবং চালিত পত্রের শব্দ তাহাদিগকে তাড়াইয়া লইয়া যাইবে; লোকে যেমন খড়েগর মুখ হইতে পলায়, তাহারা তদ্রূপ পলাইবে, এবং কেহ না তাড়াইলেও পতিত হইবে। 37 কেহ না তাড়াইলেও তাহারা যেমন খড়েগর সম্মুখে, তেমনি এক জন অন্যের উপরে পতিত হইবে; এবং শত্রুদের সম্মুখে দাঁড়াইতে তোমাদের ক্ষমতা হইবে না। 38 আর তোমরা জাতিগণের মধ্যে বিনষ্ট হইবে, ও তোমাদের শত্রুদের দেশ তোমাদিগকে গ্রাস করিবে। 39 আর তোমাদের মধ্যে যাহারা অবশিষ্ট থাকিবে, তাহারা আপন আপন অপরাধে শত্রুদেশে ক্ষয় পাইবে; এবং আপনাদের পিতৃপুরুষদেরও অপরাধে তাহাদের সহিত ক্ষয় পাইবে। 40 আর তাহাদিগকে স্বীকার করিতে হইবে যে, আমার বিরুদ্ধে সত্যলঙ্ঘন এবং আমার বিপরীত আচরণ করাতে তাহাদের অপরাধ ও তাহাদের পিতৃপুরুষদের অপরাধ হইয়াছে, 41 এবং আমিও তাহাদের বিপরীত আচরণ করিয়াছি, আর তাহাদিগকে শত্রুদেশে আনিয়াছি। তখন যদি তাহাদের অচ্ছিন্নত্বক হৃদয় নম্র হয়, ও তাহারা আপন আপন অপরাধের দণ্ড গ্রাহ্য করে, 42 তবে আমি যাকোবের সহিত কৃত আমার নিয়ম স্মরণ করিব, এবং ইস্‌হাকের সহিত কৃত আমার নিয়ম ও অব্রাহামের সহিত কৃত আমার নিয়মও স্মরণ করিব, আর দেশকেও স্মরণ করিব। 43 দেশও তাহাদের কর্ত্তৃত্ব পরিত্যক্ত থাকিবে, ও তাহাদের অবর্ত্তমানে ধ্বংসস্থান হইয়া আপন বিশ্রাম ভোগ করিবে, এবং তাহারা আপনাদের অপরাধের দণ্ড গ্রাহ্য করিবে; কারণ এই যে, তাহারা আমার শাসন অগ্রাহ্য করিত ও তাহাদের প্রাণ আমার বিধি ঘৃণা করিত। 44 তথাপি যখন তাহারা শত্রুদের দেশে থাকিবে, তখন আমি নিঃশেষে বিনাশ জন্য কিম্বা তাহাদের সহিত আমার নিয়ম ভঙ্গ করণার্থে তাহাদিগকে অগ্রাহ্য করিব না, এবং ঘৃণাও করিব না; কেননা আমি সদাপ্রভু তাহাদের ঈশ্বর। 45 আর আমি তাহাদের ঈশ্বর হইবার জন্য যাহাদিগকে জাতিগণের সাক্ষাতে মিসর দেশ হইতে বাহির করিয়া আনিয়াছি, তাহাদের সেই পিতৃপুরুষদের সহিত কৃত আমার নিয়ম তাহাদের জন্য স্মরণ করিব; আমি সদাপ্রভু। 46 সীনয় পর্ব্বতে সদাপ্রভু মোশির-হস্ত দ্বারা আপনার ও ইস্রায়েল-সন্তানগেণর মধ্যে এই সকল বিধি, শাসন ও ব্যবস্থা স্থির করিলেন।
1. তোমরা আপনাদের জন্য অবস্তু প্রতিমা নির্ম্মাণ করিও না, এবং ক্ষোদিত প্রতিমা কিম্বা স্তম্ভ স্থাপন করিও না, ও তাহার কাছে প্রণিপাত করিবার নিমিত্তে তোমাদের দেশে কোন ক্ষোদিত প্রস্তর রাখিও না; কেননা আমি সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বর। 2. তোমরা আমার বিশ্রামবার সকল পালন করিও, ও আমার ধর্ম্মধামের সমাদর করিও; আমি সদাপ্রভু। 3. যদি তোমরা আমার বিধিপথে চল, আমার আজ্ঞা সকল মান ও সে সমস্ত পালন কর, 4. তবে আমি যথাকালে তোমাদিগকে বৃষ্টি দান করিব; তাহাতে ভূমি শস্য উৎপন্ন করিবে, ও ক্ষেত্রের বৃক্ষ সকল স্ব স্ব ফল দিবে। 5. তোমাদের শস্যমর্দ্দনকাল দ্রাক্ষাচয়নকাল পর্য্যন্ত থাকিবে, ও দ্রাক্ষাচয়নকাল বীজবপনকাল পর্য্যন্ত থাকিবে; এবং তোমরা তৃপ্তি পর্য্যন্ত অন্ন ভোজন করিবে, ও নিরাপদে নিজ দেশে বাস করিবে। 6. আর আমি দেশে শান্তি প্রদান করিব; তোমরা শয়ন করিলে কেহ তোমাদিগকে ভয় দেখাইবে না; এবং আমি তোমাদের দেশ হইতে হিংস্র জন্তুদিগকে দূর করিয়া দিব; ও তোমাদের দেশে খড়গ ভ্রমণ করিবে না। 7. আর তোমরা আপনাদের শত্রুগণকে তাড়াইয়া দিবে, ও তাহারা তোমাদের সম্মুখে খড়েগ পতিত হইবে। 8. আর তোমাদের পাঁচ জন তাহাদের এক শত জনকে তাড়াইয়া দিবে, তোমাদের এক শত জন দশ সহস্র লোককে তাড়াইয়া দিবে, এবং তোমাদের শত্রুগণ তোমাদের সম্মুখে খড়েগ পতিত হইবে। 9. আর আমি তোমাদের প্রতি প্রসন্নবদন হইব, তোমাদিগকে ফলবন্ত ও বহুবংশ করিব, ও তোমাদের সহিত আমার নিয়ম স্থির করিব। 10. আর তোমরা সঞ্চিত পুরাতন শস্য ভোজন করিবে, ও নূতনের সম্মুখ হইতে পুরাতন শস্য বাহির করিবে। 11. আর আমি তোমাদের মধ্যে আপন আবাস রাখিব, আমার প্রাণ তোমাদিগকে ঘৃণা করিবে না। 12. আর আমি তোমাদের মধ্যে গমনাগমন করিব, ও তোমাদের ঈশ্বর হইব, এবং তোমরা আমার প্রজা হইবে। 13. আমি সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বর, আমি মিসর দেশ হইতে তোমাদিগকে বাহির করিয়া আনিয়াছি, তাহাদের দাস থাকিতে দিই নাই; আমি তোমাদের যোঁয়ালি-কাষ্ঠ ভাঙ্গিয়া সোজা ভাবে তোমাদিগকে গমন করাইয়াছি। 14. কিন্তু যদি তোমরা আমার কথা না শুন, আমার এই সকল আজ্ঞা পালন না কর, 15. যদি আমার বিধি অগ্রাহ্য কর, ও তোমাদের প্রাণ আমার শাসন সকল ঘৃণা করে, এইরূপে তোমরা আমার আজ্ঞা পালন না করিয়া আমার নিয়ম ভঙ্গ কর, তবে আমিও তোমাদের প্রতি এই ব্যবহার করিব; 16. তোমাদের জন্য বিহ্বলতা, যক্ষ্মা ও কম্পজ্বর নিরূপণ করিব, যাহাতে তোমাদের চক্ষু ক্ষীণ হইয়া পড়িবে, ও প্রাণ ব্যথা পাইবে, এবং তোমাদের বীজ বপন বৃথা হইবে, কেননা তোমাদের শত্রুগণ তাহা ভক্ষণ করিবে। 17. আর আমি তোমাদের প্রতি বিমুখ হইব; তাহাতে তোমরা আপন শত্রুগণের সম্মুখে আহত হইবে; যাহারা তোমাদিগকে দ্বেষ করে, তাহারা তোমাদের উপরে কর্ত্তৃত্ব করিবে, এবং কেহ তোমাদিগকে না তাড়াইলেও তোমরা পলায়ন করিবে। 18. আর যদি তোমরা ইহাতেও আমার বাক্যে মনোযোগ না কর, তবে আমি তোমাদের পাপপ্রযুক্ত তোমাদিগকে সাত গুণ অধিক শাস্তি দিব। 19. আমি তোমাদের বলের গর্ব্ব চূর্ণ করিব, ও তোমাদের আকাশ লৌহের মত ও তোমাদের ভূমি পিত্তলের মত করিব। 20. তাহাতে তোমাদের বল নিরর্থক নিঃশেষিত হইবে, কেননা তোমাদের ভূমি শস্য উৎপন্ন করিবে না, ও দেশস্থ বৃক্ষ সকল স্ব স্ব ফল দিবে না। 21. আর যদি তোমরা আমার বিপরীত আচরণ কর, ও আমার কথা শুনিতে না চাও, তবে আমি তোমাদের পাপানুসারে তোমাদিগকে আরও সাত গুণ আঘাত করিব। 22. আর তোমাদের মধ্যে বনপশু পাঠাইব; তাহারা তোমাদের সন্তান হরণ করিবে, তোমাদের পশুপাল বিনষ্ট করিবে; তোমাদিগকে সংখ্যায় ন্যূন করিবে; আর তোমাদের রাজপথ সকল ধ্বংসিত হইবে। 23. ইহাতেও যদি আমার উদ্দেশে শাসিত না হও, কিন্তু আমার বিপরীত আচরণ কর, 24. তবে আমিও তোমাদের বিপরীত আচরণ করিব, ও তোমাদের পাপপ্রযুক্ত আমিই তোমাদিগকে সাত বার আঘাত করিব। 25. আমি নিয়মলঙ্ঘনের প্রতিফল দিবার জন্য তোমাদের উপরে খড়গ আনিব, তোমরা আপন আপন নগরমধ্যে একত্রীভূত হইবে, আমি তোমাদের মধ্য মহামারী পাঠাইব, এবং তোমরা শত্রুহস্তে সমর্পিত হইবে। 26. আমি তোমাদের অন্নরূপ যষ্টি ভাঙ্গিলে দশ জন স্ত্রীলোক এক তুন্দুরে তোমাদের রুটী পাক করিবে, ও তোমাদের রুটী তৌল করিয়া তোমাদিগকে দিবে, কিন্তু তোমরা তাহা খাইয়া তৃপ্ত হইবে না। 27. আর এই সকলেতেও যদি তোমরা আমার কথা না শুন, আমার বিপরীত আচরণ কর, 28. তবে আমি ক্রোধে তোমাদের বিপরীত আচরণ করিব, এবং আমিই তোমাদের পাপপ্রযুক্ত তোমাদিগকে সাত গুণ শাস্তি দিব। 29. আর তোমরা আপন আপন পুত্রগণের মাংস ভোজন করিবে, ও আপন আপন কন্যাগণের মাংস ভোজন করিবে। 30. আর আমি তোমাদের উচ্চস্থল সকল ভগ্ন করিব, তোমাদের সূর্য্যপ্রতিমা সকল নষ্ট করিব, ও তোমাদের পুত্তলিকাদের শবের উপরে তোমাদের শব ফেলিয়া দিব; এবং আমার প্রাণ তোমাদিগকে ঘৃণা করিবে। 31. আর আমি তোমাদের নগর সকল উৎসন্ন করিব, তোমাদের ধর্ম্মধাম সকল ধ্বংস করিব, ও তোমাদের সৌরভের আঘ্রাণ লইব না। 32. আর আমি দেশ ধ্বংস করিব, ও তত্রবাসী তোমাদের শত্রুগণ তদ্বিষয়ে চমৎকৃত হইবে। 33. আর আমি তোমাদিগকে জাতিগণের মধ্যে ছিন্নভিন্ন করিব, ও তোমাদের পশ্চাতে খড়গ নিষ্কোষ করিব, তাহাতে তোমাদের দেশ সকল ধ্বংসস্থান ও তোমাদের নগর সকল উৎসন্ন হইবে। 34. তখন যত দিন দেশ ধ্বংসস্থান থাকিবে ও তোমরা শত্রুগণের দেশে বাস করিবে, তত দিন ভূমি স্বীয় বিশ্রামকাল ভোগ করিবে; তৎকালে ভূমি বিশ্রাম পাইবে, ও স্বীয় বিশ্রামকাল ভোগ করিবে। 35. যত কাল দেশ ধ্বংসস্থান হইয়া থাকিবে, তত কাল বিশ্রাম করিবে; কেননা যখন তোমরা দেশে বাস করিতে, তখন দেশ তোমাদের বিশ্রামকালে বিশ্রাম ভোগ করিত না। 36. আর তোমাদের মধ্যে যাহারা অবশিষ্ট থাকিবে, আমি শত্রুদেশে তাহাদের হৃদয়ে বিষণ্ণতা প্রেরণ করিব, এবং চালিত পত্রের শব্দ তাহাদিগকে তাড়াইয়া লইয়া যাইবে; লোকে যেমন খড়েগর মুখ হইতে পলায়, তাহারা তদ্রূপ পলাইবে, এবং কেহ না তাড়াইলেও পতিত হইবে। 37. কেহ না তাড়াইলেও তাহারা যেমন খড়েগর সম্মুখে, তেমনি এক জন অন্যের উপরে পতিত হইবে; এবং শত্রুদের সম্মুখে দাঁড়াইতে তোমাদের ক্ষমতা হইবে না। 38. আর তোমরা জাতিগণের মধ্যে বিনষ্ট হইবে, ও তোমাদের শত্রুদের দেশ তোমাদিগকে গ্রাস করিবে। 39. আর তোমাদের মধ্যে যাহারা অবশিষ্ট থাকিবে, তাহারা আপন আপন অপরাধে শত্রুদেশে ক্ষয় পাইবে; এবং আপনাদের পিতৃপুরুষদেরও অপরাধে তাহাদের সহিত ক্ষয় পাইবে। 40. আর তাহাদিগকে স্বীকার করিতে হইবে যে, আমার বিরুদ্ধে সত্যলঙ্ঘন এবং আমার বিপরীত আচরণ করাতে তাহাদের অপরাধ ও তাহাদের পিতৃপুরুষদের অপরাধ হইয়াছে, 41. এবং আমিও তাহাদের বিপরীত আচরণ করিয়াছি, আর তাহাদিগকে শত্রুদেশে আনিয়াছি। তখন যদি তাহাদের অচ্ছিন্নত্বক হৃদয় নম্র হয়, ও তাহারা আপন আপন অপরাধের দণ্ড গ্রাহ্য করে, 42. তবে আমি যাকোবের সহিত কৃত আমার নিয়ম স্মরণ করিব, এবং ইস্‌হাকের সহিত কৃত আমার নিয়ম ও অব্রাহামের সহিত কৃত আমার নিয়মও স্মরণ করিব, আর দেশকেও স্মরণ করিব। 43. দেশও তাহাদের কর্ত্তৃত্ব পরিত্যক্ত থাকিবে, ও তাহাদের অবর্ত্তমানে ধ্বংসস্থান হইয়া আপন বিশ্রাম ভোগ করিবে, এবং তাহারা আপনাদের অপরাধের দণ্ড গ্রাহ্য করিবে; কারণ এই যে, তাহারা আমার শাসন অগ্রাহ্য করিত ও তাহাদের প্রাণ আমার বিধি ঘৃণা করিত। 44. তথাপি যখন তাহারা শত্রুদের দেশে থাকিবে, তখন আমি নিঃশেষে বিনাশ জন্য কিম্বা তাহাদের সহিত আমার নিয়ম ভঙ্গ করণার্থে তাহাদিগকে অগ্রাহ্য করিব না, এবং ঘৃণাও করিব না; কেননা আমি সদাপ্রভু তাহাদের ঈশ্বর। 45. আর আমি তাহাদের ঈশ্বর হইবার জন্য যাহাদিগকে জাতিগণের সাক্ষাতে মিসর দেশ হইতে বাহির করিয়া আনিয়াছি, তাহাদের সেই পিতৃপুরুষদের সহিত কৃত আমার নিয়ম তাহাদের জন্য স্মরণ করিব; আমি সদাপ্রভু। 46. সীনয় পর্ব্বতে সদাপ্রভু মোশির-হস্ত দ্বারা আপনার ও ইস্রায়েল-সন্তানগেণর মধ্যে এই সকল বিধি, শাসন ও ব্যবস্থা স্থির করিলেন।
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 1  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 2  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 3  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 4  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 5  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 6  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 7  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 8  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 9  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 10  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 11  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 12  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 13  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 14  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 15  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 16  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 17  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 18  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 19  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 20  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 21  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 22  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 23  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 24  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 25  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 26  
  • লেবীয় পুস্তক অধ্যায় 27  
×

Alert

×

Bengali Letters Keypad References