পবিত্র বাইবেল

বাইবেল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া (BSI)
যেরেমিয়া

যেরেমিয়া অধ্যায় 31

1 সদাপ্রভু কহেন, সেই সময়ে আমি ইস্রায়েলের সমুদয় গোষ্ঠীর ঈশ্বর হইব, এবং তাহারা আমার প্রজা হইবে। 2 সদাপ্রভু এই কথা কহেন, খড়্‌গ হইতে রক্ষিত লোকেরা প্রান্তরে অনুগ্রহ প্রাপ্ত হইল; সে ইস্রায়েল, আমি তাহাকে বিশ্রাম দিতে গমন করিলাম। 3 সদাপ্রভু দূর হইতে আমাকে দর্শন দিয়া বলিলেন, আমি ত চিরপ্রেমে তোমাকে প্রেম করিয়া আসিতেছি, এই জন্য আমি তোমার প্রতি চিরস্থায়ী দয়া করিলাম। 4 হে কুমারি ইস্রায়েল, আমি তোমাকে পুনর্ব্বার গাঁথিয়া তুলিব, তুমি গাঁথা যাইবে, তুমি পুনর্ব্বার আপন তবলে বিভূষিতা হইবে, এবং আনন্দকারীদের শ্রেণীতে নৃত্য করিতে করিতে গমন করিবে। 5 তুমি শমরিয়ার পর্ব্বতমালায় পুনর্ব্বার দ্রাক্ষাক্ষেত্র প্রস্তুত করিবে; রোপকেরা দ্রাক্ষালতা রোপন করিবে, ও তাহার ফল ভোগ করিবে। 6 কেননা এমন দিন উপস্থিত হইবে, যে দিন প্রহরিগণ পর্ব্বতময় ইফ্রয়িম প্রদেশে ঘোষণা করিয়া বলিবে, উঠ, চল, আমরা সিয়োনে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নিকটে গমন করি। 7 অতএব সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তোমরা যাকোবের নিমিত্ত আনন্দরব কর, জাতিগণের অগ্রগণ্যের উদ্দেশে উচ্চধ্বনি কর, ঘোষণা কর, প্রশংসা কর, আর বল, হে সদাপ্রভু, তোমার প্রজাদিগকে, ইস্রায়েলের অবশিষ্টাংশকে, পরিত্রাণ কর। 8 দেখ, আমি তাহাদিগকে উত্তর দেশ হইতে আনিব, পৃথিবীর প্রান্তভাগ হইতে সংগ্রহ করিব; তাহারা অন্ধ, খঞ্জ, গর্ভবতী ও প্রসূতী শুদ্ধ মহাসমাজ হইয়া এই স্থানে ফিরিয়া আসিবে। 9 তাহারা রোদন করিতে করিতে আসিবে, এবং বিনয় সহকারে আমা দ্বারা চালিত হইবে; আমি তাহাদিগকে জলস্রোতের নিকট দিয়া সরল পথে গমন করাইব, সে পথে তাহারা উছোট খাইবে না, যেহেতু আমি ইস্রায়েলের পিতা, এবং ইফ্রয়িম আমার প্রথমজাত পুত্র। 10 হে জাতি সকল, তোমরা সদাপ্রভুর বাক্য শুন, এবং দূরস্থ উপকূল সমূহে তাহা প্রচার কর; আর বল, যিনি ইস্রায়েলকে ছড়াইয়াছেন, তিনিই তাহাকে সংগ্রহ করিবেন, আর রক্ষক যেমন নিজ পালকে রক্ষা করে, তেমনি রক্ষা করিবেন। 11 কারণ সদাপ্রভু যাকোবকে উদ্ধার করিয়াছেন, তদপেক্ষা অধিক বলবানের হস্ত হইতে তাহাকে মুক্ত করিয়াছেন। 12 তাহারা আসিয়া উচ্চ সিয়োনে আনন্দগান করিবে, এবং স্রোতের ন্যায় প্রবাহিত হইয়া সদাপ্রভুর মঙ্গলদানের নিকটে, গোমের, দ্রাক্ষারসের, তৈলের, মেষবৎসদের ও গোবৎসদের জন্য আসিবে, এবং তাহাদের প্রাণ সুসিক্ত উদ্যানের ন্যায় হইবে; তাহারা আর অবসন্ন হইবে না। 13 তখন কন্যারা নাচিয়া আনন্দ করিবে, এবং যুবকগণ ও বৃদ্ধেরা একত্র হইয়া আনন্দ করিবে; কারণ আমি তাহাদের শোক আমোদে পরিণত করিব; তাহাদিগকে সান্ত্বনা করিব, ও দুঃখ ঘুচাইয়া আহ্লাদিত করিব। 14 আর আমি পুষ্টিকর দ্রব্য দ্বারা যাজকদের প্রাণ আপ্যায়িত করিব, এবং আমার মঙ্গলদান দ্বারা আমার প্রজাগণ তৃপ্ত হইবে, ইহা সদাপ্রভু কহেন। 15 সদাপ্রভু এই কথা কহেন, রামায় শব্দ শুনা যাইতেছে, হাহাকার ও তীব্র রোদন! রাহেল আপন সন্তানদের জন্য রোদন করিতেছে, সে আপন সন্তানদের বিষয়ে প্রবোধ কথা মানে না, কেননা তাহারা নাই। 16 সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমার রোদনের শব্দ ও চক্ষের জল নিবৃত্ত কর; কেননা তোমার কার্য্যের পুরস্কার দত্ত হইবে, ইহা সদাপ্রভু বলেন, আর তাহারা শত্রুর দেশ হইতে ফিরিয়া আসিবে। 17 তোমার শেষকালের বিষয়ে প্রত্যাশা আছে, ইহা সদাপ্রভু বলেন; হাঁ, তোমার সন্তানগণ আপনাদের অঞ্চলে ফিরিয়া আসিবে। 18 আমি ইফ্রয়িমের স্বর স্পষ্ট শুনিতে পাইয়াছি; সে খেদোক্তি করিয়া বলিয়াছে, ‘তুমি আমাকে শাস্তি দিয়াছ, আমি শাস্তি ভোগ করিয়াছি, যাহাকে বশ করা হয় নাই, এমন গোবৎসের ন্যায়; আমাকে ফিরাও, তাহাতে আমি ফিরিব, কেননা তুমিই আমার ঈশ্বর সদাপ্রভু। 19 আমি ফিরিলে পর অনুতাপ করিলাম, ও শিক্ষা পাইলে পর ঊরুদেশে আঘাত করিলাম; আমি লজ্জিত ও নিতান্ত বিষণ্ণ হইলাম, কেননা নিজ যৌবনকালের অপযশ বহন করিলাম।’ 20 ইফ্রয়িম কি আমার প্রিয় পুত্র? সে কি আনন্দদায়ী বালক? হাঁ, যতবার আমি তাহার বিরুদ্ধে কথা কহি, ততবার পুনরায় তাহাকে সাগ্রহে স্মরণ করি; এই কারণ তাহার জন্য আমার অন্তর ব্যাকুল হয়; অবশ্য আমি তাহার প্রতি করুণা করিব, ইহা সদাপ্রভু বলেন। 21 তুমি স্থানে স্থানে আপনার জন্য পথের চিহ্ন রাখ, স্তম্ভ স্থাপন কর, যে পথে গমন করিয়াছিলে, সেই রাজপথে মনোনিবেশ কর; হে ইস্রায়েল-কুমারি, ফিরিয়া আইস; তোমার এই সকল নগরে ফিরিয়া আইস। 22 অয়ি বিপথগামিনি কন্যে, কতকাল ভ্রমণ করিবে? সদাপ্রভু ত পৃথিবীতে এক নূতন নিয়ম সৃষ্টি করিলেন; নারী পুরুষকে বেষ্টন করিবে। 23 বাহিনীগণের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, এই কথা কহেন, আমি যখন এই লোকদের বন্দি-দশা ফিরাইব, তখন তাহারা যিহূদা দেশে ও তথাকার সকল নগরে পুনর্ব্বার এই কথা বলিবে, ‘হে ধর্ম্মনিবাস, হে পবিত্র-পর্ব্বত, সদাপ্রভু তোমাকে আশীর্ব্বাদ করুন।’ 24 যিহূদা ও তাহার সমস্ত নগর, এবং কৃষকগণ ও যাহারা পালের সহিত ইতস্ততঃ ভ্রমণ করে, তাহারা তথায় একত্র বাস করিবে। 25 কারণ আমি আপ্যায়িত করিয়াছি ক্লান্ত প্রাণকে, এবং প্রত্যেক অবসন্ন প্রাণকে তৃপ্ত করিয়াছি। 26 তখন আমি জাগ্রৎ হইয়া দৃষ্টিপাত করিলাম, আর আমার নিদ্রা আমার সুখদায়ক ছিল। 27 সদাপ্রভু কহেন, দেখ, এমন সময় আসিতেছে, যে সময়ে আমি ইস্রায়েলকুল ও যিহূদা-কুলরূপ ক্ষেত্রে মনুষ্যরূপ বীজ ও পশুরূপ বীজ বপন করিব; 28 আর যেমন আমি তাহাদের উন্মূলন, উৎপাটন, নিপাত, বিনাশ ও অমঙ্গল করিতে জাগরূক ছিলাম, তেমনি তাহাদিগকে গাঁথিতে ও রোপন করিতেও জাগরূক হইব, ইহা সদাপ্রভু বলেন। 29 তৎকালে লোকে আর বলিবে না, পিতারা অম্ল দ্রাক্ষাফল খাইয়াছিলেন, তাই সন্তানদের দাঁত টকিয়াছে। 30 কিন্তু প্রত্যেক জন আপন আপন অপরাধ প্রযুক্ত মরিবে; যে ব্যক্তি অম্ল দ্রাক্ষাফল খাইবে তাহারই দাঁত টকিয়া যাইবে। 31 সদাপ্রভু বলেন, দেখ, এমন সময় আসিতেছে, যে সময়ে আমি ইস্রায়েল-কুলের ও যিহূদা-কুলের সহিত এক নূতন নিয়ম স্থির করিব। 32 মিসর দেশ হইতে তাহাদের পিতৃপুরুষদিগকে বাহির করিয়া আনিবার জন্য তাহাদের হস্তগ্রহণ করিবার দিনে আমি তাহাদের সহিত যে নিয়ম স্থির করিয়াছিলাম, সেই নিয়মানুসারে নয়; আমি তাহাদের স্বামী হইলেও তাহারা আমার সেই নিয়ম লঙ্ঘন করিল, ইহা সদাপ্রভু কহেন। 33 কিন্তু সেই সকল দিনের পর আমি ইস্রায়েল-কুলের সহিত এই নিয়ম স্থির করিব, ইহা সদাপ্রভু কহেন, আমি তাহাদের অন্তরে আমার ব্যবস্থা দিব, ও তাহাদের হৃদয়ে তাহা লিখিব; এবং আমি তাহাদের ঈশ্বর হইব, ও তাহারা আমার প্রজা হইবে। 34 আর, ‘তোমরা সদাপ্রভুকে জ্ঞাত হও,’ এই কথা বলিয়া তাহারা প্রত্যেকে আপন আপন প্রতিবাসীকে ও আপন আপন ভ্রাতাকে আর শিক্ষা দিবে না; কারণ তাহারা ক্ষুদ্র ও মহান সকলেই আমাকে জ্ঞাত হইবে, ইহা সদাপ্রভু কহেন; কেননা আমি তাহাদের অপরাধ ক্ষমা করিব, এবং তাহাদের পাপ আর স্মরণে আনিব না। 35 যিনি দিনমানে জ্যোতির জন্য সূর্য্যকে, এবং রাত্রিকালে জ্যোতির জন্য চন্দ্রের ও নক্ষত্রগণের বিধিকলাপ দেন, যিনি সমুদ্রকে ব্যস্ত করিলে তাহার তরঙ্গ কল্লোলধ্বনি করে, সেই সদাপ্রভু এই কথা কহেন; 36 ‘বাহিনীগণের সদাপ্রভু’ তাঁহার নাম; যদি এই সকল বিধি আমার সম্মুখ হইতে বিচলিত হয়, —ইহা সদাপ্রভু বলেন, —তবে আমার সম্মুখে নিত্যস্থায়ী জাতিরূপে ইস্রায়েল-বংশের অবস্থিতিও শেষ হইবে। 37 সদাপ্রভু এই কথা কহেন, যদি ঊর্দ্ধে আকাশমণ্ডল পরিমাণ করা যায়, নিম্নে পৃথিবীর মূল যদি অনুসন্ধান করিয়া পাওয়া যায়, তবে আমিও তাহাদের কৃত সকল ক্রিয়া প্রযুক্ত ইস্রায়েলের সমস্ত বংশকে দূর করিব, ইহা সদাপ্রভু বলেন। 38 সদাপ্রভু কহেন, দেখ, এমন সময় আসিতেছে, যে সময়ে হননেলের দুর্গ অবধি কোণের দ্বার পর্য্যন্ত নগরটী সদাপ্রভুর উদ্দেশে নির্ম্মিত হইবে; 39 এবং তথা হইতে মানরজ্জু বরাবর সম্মুখপথে গারেব উপপর্ব্বতের উপর দিয়া টানা যাইবে, ও ঘুরিয়া গোয়াতে উপস্থিত হইবে। 40 আর শবের ও ভস্মের সমুদয় তলভূমি ও কিদ্রোণ স্রোত পর্য্যন্ত সকল ক্ষেত্র, পূর্ব্বদিক্‌স্থ অশ্বদ্বারের কোণ পর্য্যন্ত, সদাপ্রভুর উদ্দেশে পবিত্র হইবে; তাহা কোন কালেও আর উন্মূলিত বা নিপাতিত হইবে না।
1. সদাপ্রভু কহেন, সেই সময়ে আমি ইস্রায়েলের সমুদয় গোষ্ঠীর ঈশ্বর হইব, এবং তাহারা আমার প্রজা হইবে। 2. সদাপ্রভু এই কথা কহেন, খড়্‌গ হইতে রক্ষিত লোকেরা প্রান্তরে অনুগ্রহ প্রাপ্ত হইল; সে ইস্রায়েল, আমি তাহাকে বিশ্রাম দিতে গমন করিলাম। 3. সদাপ্রভু দূর হইতে আমাকে দর্শন দিয়া বলিলেন, আমি ত চিরপ্রেমে তোমাকে প্রেম করিয়া আসিতেছি, এই জন্য আমি তোমার প্রতি চিরস্থায়ী দয়া করিলাম। 4. হে কুমারি ইস্রায়েল, আমি তোমাকে পুনর্ব্বার গাঁথিয়া তুলিব, তুমি গাঁথা যাইবে, তুমি পুনর্ব্বার আপন তবলে বিভূষিতা হইবে, এবং আনন্দকারীদের শ্রেণীতে নৃত্য করিতে করিতে গমন করিবে। 5. তুমি শমরিয়ার পর্ব্বতমালায় পুনর্ব্বার দ্রাক্ষাক্ষেত্র প্রস্তুত করিবে; রোপকেরা দ্রাক্ষালতা রোপন করিবে, ও তাহার ফল ভোগ করিবে। 6. কেননা এমন দিন উপস্থিত হইবে, যে দিন প্রহরিগণ পর্ব্বতময় ইফ্রয়িম প্রদেশে ঘোষণা করিয়া বলিবে, উঠ, চল, আমরা সিয়োনে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নিকটে গমন করি। 7. অতএব সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তোমরা যাকোবের নিমিত্ত আনন্দরব কর, জাতিগণের অগ্রগণ্যের উদ্দেশে উচ্চধ্বনি কর, ঘোষণা কর, প্রশংসা কর, আর বল, হে সদাপ্রভু, তোমার প্রজাদিগকে, ইস্রায়েলের অবশিষ্টাংশকে, পরিত্রাণ কর। 8. দেখ, আমি তাহাদিগকে উত্তর দেশ হইতে আনিব, পৃথিবীর প্রান্তভাগ হইতে সংগ্রহ করিব; তাহারা অন্ধ, খঞ্জ, গর্ভবতী ও প্রসূতী শুদ্ধ মহাসমাজ হইয়া এই স্থানে ফিরিয়া আসিবে। 9. তাহারা রোদন করিতে করিতে আসিবে, এবং বিনয় সহকারে আমা দ্বারা চালিত হইবে; আমি তাহাদিগকে জলস্রোতের নিকট দিয়া সরল পথে গমন করাইব, সে পথে তাহারা উছোট খাইবে না, যেহেতু আমি ইস্রায়েলের পিতা, এবং ইফ্রয়িম আমার প্রথমজাত পুত্র। 10. হে জাতি সকল, তোমরা সদাপ্রভুর বাক্য শুন, এবং দূরস্থ উপকূল সমূহে তাহা প্রচার কর; আর বল, যিনি ইস্রায়েলকে ছড়াইয়াছেন, তিনিই তাহাকে সংগ্রহ করিবেন, আর রক্ষক যেমন নিজ পালকে রক্ষা করে, তেমনি রক্ষা করিবেন। 11. কারণ সদাপ্রভু যাকোবকে উদ্ধার করিয়াছেন, তদপেক্ষা অধিক বলবানের হস্ত হইতে তাহাকে মুক্ত করিয়াছেন। 12. তাহারা আসিয়া উচ্চ সিয়োনে আনন্দগান করিবে, এবং স্রোতের ন্যায় প্রবাহিত হইয়া সদাপ্রভুর মঙ্গলদানের নিকটে, গোমের, দ্রাক্ষারসের, তৈলের, মেষবৎসদের ও গোবৎসদের জন্য আসিবে, এবং তাহাদের প্রাণ সুসিক্ত উদ্যানের ন্যায় হইবে; তাহারা আর অবসন্ন হইবে না। 13. তখন কন্যারা নাচিয়া আনন্দ করিবে, এবং যুবকগণ ও বৃদ্ধেরা একত্র হইয়া আনন্দ করিবে; কারণ আমি তাহাদের শোক আমোদে পরিণত করিব; তাহাদিগকে সান্ত্বনা করিব, ও দুঃখ ঘুচাইয়া আহ্লাদিত করিব। 14. আর আমি পুষ্টিকর দ্রব্য দ্বারা যাজকদের প্রাণ আপ্যায়িত করিব, এবং আমার মঙ্গলদান দ্বারা আমার প্রজাগণ তৃপ্ত হইবে, ইহা সদাপ্রভু কহেন। 15. সদাপ্রভু এই কথা কহেন, রামায় শব্দ শুনা যাইতেছে, হাহাকার ও তীব্র রোদন! রাহেল আপন সন্তানদের জন্য রোদন করিতেছে, সে আপন সন্তানদের বিষয়ে প্রবোধ কথা মানে না, কেননা তাহারা নাই। 16. সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমার রোদনের শব্দ ও চক্ষের জল নিবৃত্ত কর; কেননা তোমার কার্য্যের পুরস্কার দত্ত হইবে, ইহা সদাপ্রভু বলেন, আর তাহারা শত্রুর দেশ হইতে ফিরিয়া আসিবে। 17. তোমার শেষকালের বিষয়ে প্রত্যাশা আছে, ইহা সদাপ্রভু বলেন; হাঁ, তোমার সন্তানগণ আপনাদের অঞ্চলে ফিরিয়া আসিবে। 18. আমি ইফ্রয়িমের স্বর স্পষ্ট শুনিতে পাইয়াছি; সে খেদোক্তি করিয়া বলিয়াছে, ‘তুমি আমাকে শাস্তি দিয়াছ, আমি শাস্তি ভোগ করিয়াছি, যাহাকে বশ করা হয় নাই, এমন গোবৎসের ন্যায়; আমাকে ফিরাও, তাহাতে আমি ফিরিব, কেননা তুমিই আমার ঈশ্বর সদাপ্রভু। 19. আমি ফিরিলে পর অনুতাপ করিলাম, ও শিক্ষা পাইলে পর ঊরুদেশে আঘাত করিলাম; আমি লজ্জিত ও নিতান্ত বিষণ্ণ হইলাম, কেননা নিজ যৌবনকালের অপযশ বহন করিলাম।’ 20. ইফ্রয়িম কি আমার প্রিয় পুত্র? সে কি আনন্দদায়ী বালক? হাঁ, যতবার আমি তাহার বিরুদ্ধে কথা কহি, ততবার পুনরায় তাহাকে সাগ্রহে স্মরণ করি; এই কারণ তাহার জন্য আমার অন্তর ব্যাকুল হয়; অবশ্য আমি তাহার প্রতি করুণা করিব, ইহা সদাপ্রভু বলেন। 21. তুমি স্থানে স্থানে আপনার জন্য পথের চিহ্ন রাখ, স্তম্ভ স্থাপন কর, যে পথে গমন করিয়াছিলে, সেই রাজপথে মনোনিবেশ কর; হে ইস্রায়েল-কুমারি, ফিরিয়া আইস; তোমার এই সকল নগরে ফিরিয়া আইস। 22. অয়ি বিপথগামিনি কন্যে, কতকাল ভ্রমণ করিবে? সদাপ্রভু ত পৃথিবীতে এক নূতন নিয়ম সৃষ্টি করিলেন; নারী পুরুষকে বেষ্টন করিবে। 23. বাহিনীগণের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, এই কথা কহেন, আমি যখন এই লোকদের বন্দি-দশা ফিরাইব, তখন তাহারা যিহূদা দেশে ও তথাকার সকল নগরে পুনর্ব্বার এই কথা বলিবে, ‘হে ধর্ম্মনিবাস, হে পবিত্র-পর্ব্বত, সদাপ্রভু তোমাকে আশীর্ব্বাদ করুন।’ 24. যিহূদা ও তাহার সমস্ত নগর, এবং কৃষকগণ ও যাহারা পালের সহিত ইতস্ততঃ ভ্রমণ করে, তাহারা তথায় একত্র বাস করিবে। 25. কারণ আমি আপ্যায়িত করিয়াছি ক্লান্ত প্রাণকে, এবং প্রত্যেক অবসন্ন প্রাণকে তৃপ্ত করিয়াছি। 26. তখন আমি জাগ্রৎ হইয়া দৃষ্টিপাত করিলাম, আর আমার নিদ্রা আমার সুখদায়ক ছিল। 27. সদাপ্রভু কহেন, দেখ, এমন সময় আসিতেছে, যে সময়ে আমি ইস্রায়েলকুল ও যিহূদা-কুলরূপ ক্ষেত্রে মনুষ্যরূপ বীজ ও পশুরূপ বীজ বপন করিব; 28. আর যেমন আমি তাহাদের উন্মূলন, উৎপাটন, নিপাত, বিনাশ ও অমঙ্গল করিতে জাগরূক ছিলাম, তেমনি তাহাদিগকে গাঁথিতে ও রোপন করিতেও জাগরূক হইব, ইহা সদাপ্রভু বলেন। 29. তৎকালে লোকে আর বলিবে না, পিতারা অম্ল দ্রাক্ষাফল খাইয়াছিলেন, তাই সন্তানদের দাঁত টকিয়াছে। 30. কিন্তু প্রত্যেক জন আপন আপন অপরাধ প্রযুক্ত মরিবে; যে ব্যক্তি অম্ল দ্রাক্ষাফল খাইবে তাহারই দাঁত টকিয়া যাইবে। 31. সদাপ্রভু বলেন, দেখ, এমন সময় আসিতেছে, যে সময়ে আমি ইস্রায়েল-কুলের ও যিহূদা-কুলের সহিত এক নূতন নিয়ম স্থির করিব। 32. মিসর দেশ হইতে তাহাদের পিতৃপুরুষদিগকে বাহির করিয়া আনিবার জন্য তাহাদের হস্তগ্রহণ করিবার দিনে আমি তাহাদের সহিত যে নিয়ম স্থির করিয়াছিলাম, সেই নিয়মানুসারে নয়; আমি তাহাদের স্বামী হইলেও তাহারা আমার সেই নিয়ম লঙ্ঘন করিল, ইহা সদাপ্রভু কহেন। 33. কিন্তু সেই সকল দিনের পর আমি ইস্রায়েল-কুলের সহিত এই নিয়ম স্থির করিব, ইহা সদাপ্রভু কহেন, আমি তাহাদের অন্তরে আমার ব্যবস্থা দিব, ও তাহাদের হৃদয়ে তাহা লিখিব; এবং আমি তাহাদের ঈশ্বর হইব, ও তাহারা আমার প্রজা হইবে। 34. আর, ‘তোমরা সদাপ্রভুকে জ্ঞাত হও,’ এই কথা বলিয়া তাহারা প্রত্যেকে আপন আপন প্রতিবাসীকে ও আপন আপন ভ্রাতাকে আর শিক্ষা দিবে না; কারণ তাহারা ক্ষুদ্র ও মহান সকলেই আমাকে জ্ঞাত হইবে, ইহা সদাপ্রভু কহেন; কেননা আমি তাহাদের অপরাধ ক্ষমা করিব, এবং তাহাদের পাপ আর স্মরণে আনিব না। 35. যিনি দিনমানে জ্যোতির জন্য সূর্য্যকে, এবং রাত্রিকালে জ্যোতির জন্য চন্দ্রের ও নক্ষত্রগণের বিধিকলাপ দেন, যিনি সমুদ্রকে ব্যস্ত করিলে তাহার তরঙ্গ কল্লোলধ্বনি করে, সেই সদাপ্রভু এই কথা কহেন; 36. ‘বাহিনীগণের সদাপ্রভু’ তাঁহার নাম; যদি এই সকল বিধি আমার সম্মুখ হইতে বিচলিত হয়, —ইহা সদাপ্রভু বলেন, —তবে আমার সম্মুখে নিত্যস্থায়ী জাতিরূপে ইস্রায়েল-বংশের অবস্থিতিও শেষ হইবে। 37. সদাপ্রভু এই কথা কহেন, যদি ঊর্দ্ধে আকাশমণ্ডল পরিমাণ করা যায়, নিম্নে পৃথিবীর মূল যদি অনুসন্ধান করিয়া পাওয়া যায়, তবে আমিও তাহাদের কৃত সকল ক্রিয়া প্রযুক্ত ইস্রায়েলের সমস্ত বংশকে দূর করিব, ইহা সদাপ্রভু বলেন। 38. সদাপ্রভু কহেন, দেখ, এমন সময় আসিতেছে, যে সময়ে হননেলের দুর্গ অবধি কোণের দ্বার পর্য্যন্ত নগরটী সদাপ্রভুর উদ্দেশে নির্ম্মিত হইবে; 39. এবং তথা হইতে মানরজ্জু বরাবর সম্মুখপথে গারেব উপপর্ব্বতের উপর দিয়া টানা যাইবে, ও ঘুরিয়া গোয়াতে উপস্থিত হইবে। 40. আর শবের ও ভস্মের সমুদয় তলভূমি ও কিদ্রোণ স্রোত পর্য্যন্ত সকল ক্ষেত্র, পূর্ব্বদিক্‌স্থ অশ্বদ্বারের কোণ পর্য্যন্ত, সদাপ্রভুর উদ্দেশে পবিত্র হইবে; তাহা কোন কালেও আর উন্মূলিত বা নিপাতিত হইবে না।
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 1  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 2  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 3  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 4  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 5  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 6  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 7  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 8  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 9  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 10  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 11  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 12  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 13  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 14  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 15  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 16  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 17  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 18  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 19  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 20  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 21  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 22  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 23  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 24  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 25  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 26  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 27  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 28  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 29  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 30  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 31  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 32  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 33  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 34  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 35  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 36  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 37  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 38  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 39  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 40  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 41  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 42  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 43  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 44  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 45  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 46  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 47  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 48  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 49  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 50  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 51  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 52  
×

Alert

×

Bengali Letters Keypad References