1 আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ, অর্থাৎ সমস্ত মণ্ডলী প্রথম মাসে সীন প্রান্তরে উপস্থিত হইল, এবং লোকেরা কাদেশে বাস করিল; আর সেই স্থানে মরিয়মের মৃত্যু হইল ও সেই স্থানে তাঁহার কবর হইল।2 সেই স্থানে মণ্ডলীর জন্য জল ছিল না; তাহাতে লোকেরা মোশির ও হারোণের প্রতিকূলে একত্র হইল।3 আর তাহারা মোশির সহিত বিবাদ করিয়া কহিল, হায়, আমাদের ভ্রাতৃগণ যখন সদাপ্রভুর সম্মুখে মরিয়া গেল, তখন কেন আমাদের মৃত্যু হইল না?4 আর তোমরা আমাদের ও আমাদের পশুদের মৃত্যুর জন্য সদাপ্রভুর সমাজকে কেন এই প্রান্তরে আনিলে?5 এই কুস্থানে আনিবার জন্য আমাদিগকে মিসর হইতে কেন বাহির করিয়া লইয়া আসিলে? এই স্থানে চাস কি ডুমুর কি দ্রাক্ষা কি দাড়িম্ব হয় না, এবং পান করিবার জলও নাই।6 তখন মোশি ও হারোণ সমাজের সাক্ষাৎ হইতে সমাগম-তাম্বুর দ্বারে গিয়া উবুড় হইয়া পড়িলেন; আর সদাপ্রভুর প্রতাপ তাঁহাদের দৃষ্টিগোচর হইল।7 পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন,8 তুমি যষ্টি লও, এবং তুমি ও তোমার ভ্রাতা হারোণ মণ্ডলীকে একত্র করিয়া তাহাদের সাক্ষাতে ঐ শৈলকে বল, তাহাতে সে নিজ জল প্রদান করিবে; এইরূপে তুমি তাহাদের নিমিত্তে শৈল হইতে জল বাহির করিয়া মণ্ডলীকে ও তাহাদের পশুগণকে পান করাইবে।9 তখন মোশি সদাপ্রভুর আজ্ঞানুসারে তাঁহার সম্মুখ হইতে ঐ যষ্টি লইলেন।10 আর মোশি ও হারোণ সেই শৈলের সম্মুখে সমাজকে একত্র করিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, হে বিদ্রোহিগণ, শুন; আমরা তোমাদের নিমিত্তে কি এই শৈল হইতে জল বাহির করিব?11 পরে মোশি আপন হস্ত তুলিয়া ঐ যষ্টি দ্বারা শৈলে দুই বার আঘাত করিলেন, তাহাতে প্রচুর জল বাহির হইল, এবং মণ্ডলী ও তাহাদের পশুগণ পান করিল।12 পরে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে কহিলেন, তোমরা ইস্রায়েল-সন্তানগণের সাক্ষাতে আমাকে পবিত্র বলিয়া মান্য করিতে আমার বাক্যে বিশ্বাস করিলে না, এই জন্য আমি তাহাদিগকে যে দেশ দিয়াছি, সেই দেশে তোমরা এই মণ্ডলীকে প্রবেশ করাইবে না।13 সেই জলের নাম মরীবা *বিবাদ; যেহেতুক ইস্রায়েল-সন্তানগণ সদাপ্রভুর সহিত বিবাদ করিল, আর তিনি তাহাদের মধ্যে পবিত্ররূপে মান্য হইলেন।14 পরে মোশি কাদেশ হইতে ইদোমীয় রাজার নিকটে দূত দ্বারা বলিয়া পাঠাইলেন, তোমার ভ্রাতা ইস্রায়েল কহিতেছে, আমাদের যে সমস্ত কষ্ট ঘটিয়াছে, তাহা তুমি জ্ঞাত আছ।15 আমাদের পিতৃপুরুষেরা মিসরে নামিয়া গিয়াছিলেন, সেই মিসরে আমরা অনেক দিন বাস করিয়াছিলাম; পরে মিস্রীয়েরা আমাদের প্রতি ও আমাদের পিতৃপুরুষদের প্রতি অসদ্ব্যবহার করিতে লাগিল।16 তখন আমরা সদাপ্রভুর উদ্দেশে ক্রন্দন করিলাম, আর তিনি আমাদের রব শুনিলেন, এবং দূত প্রেরণ করিয়া আমাদিগকে মিসর হইতে বাহির করিয়া আনিলেন; আর দেখ, আমরা তোমার দেশের প্রান্তস্থিত কাদেশ নগরে আছি।17 আমি বিনয় করি, তুমি আপন দেশের মধ্য দিয়া আমাদিগকে যাইতে দেও; আমরা শস্যক্ষেত্র কি দ্রাক্ষাক্ষেত্র দিয়া যাইব না, কূপের জলও পান করিব না; কেবল রাজপথ দিয়া যাইব; যাবৎ তোমার সীমা উত্তীর্ণ না হই, তাবৎ দক্ষিণে কি বামে ফিরিব না।18 ইদোম তাঁহাকে কহিল, তুমি আমার *দেশের মধ্য দিয়া যাইতে পাইবে না, গেলে আমি খগড় লইয়া তোমার বিরুদ্ধে বাহির হইব।19 তখন ইস্রায়েল-সন্তানগণ তাহাকে কহিল, আমরা রাজপথ দিয়া যাইব; আমি কি আমার পশুগণ, আমরা যদি তোমার জল পান করি, তবে আমি তাহার মূল্য দিব; আর কিছু নয়, কেবল আমাকে পায়ে হাঁটিয়া যাইতে দেও।20 সে উত্তর করিল, তুমি যাইতে পাইবে না। পরে ইদোম অনেক লোক সঙ্গে লইয়া মহাবলে তাহাদের প্রতিকূলে বাহির হইল।21 এইরূপে ইদোম ইস্রায়েলকে আপন সীমার মধ্য দিয়া যাইতে দিতে অসম্মত হইল; অতএব ইস্রায়েল তাহার নিকট হইতে অন্য পথে গমন করিল।22 আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ অর্থাৎ সমস্ত মণ্ডলী কাদেশ হইতে প্রস্থান করিয়া হোর পর্ব্বতে উপস্থিত হইল।23 তখন ইদোম দেশের সীমার নিকটস্থ হোর পর্ব্বতে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে কহিলেন,24 হারোণ আপন লোকদের নিকটে সংগৃহীত হইবে; কেননা আমি ইস্রায়েল-সন্তানগণকে যে দেশ দিয়াছি, সেই দেশে সে প্রবেশ করিবে না; কারণ মরীবা জলের নিকটে তোমরা আমার আজ্ঞার বিরুদ্ধাচারী হইয়াছিলে।25 তুমি হারোণকে ও তাহার পুত্র ইলীয়াসরকে হোর পর্ব্বতের উপরে লইয়া যাও।26 আর হারোণকে তাহার বস্ত্র ত্যাগ করাইয়া তাহার পুত্র ইলীয়াসরকে তাহা পরিধান করাও; হারোণ সে স্থানে *আপন লোকদের কাছে সংগৃহীত হইবে, সেখানে মরিবে।27 তখন মোশি সদাপ্রভুর আজ্ঞানুযায়ী কর্ম্ম করিলেন; তাঁহারা সমস্ত মণ্ডলীর সাক্ষাতে হোর পর্ব্বতে উঠিলেন।28 পরে মোশি হারোণকে তাঁহার বস্ত্র ত্যাগ করাইয়া তাঁহার পুত্র ইলীয়াসরকে তাহা পরিধান করাইলেন; এবং হারোণ সে স্থানে পর্ব্বতশৃঙ্গে মরিলেন; পরে মোশি ও ইলীয়াসর পর্ব্বত হইতে নামিয়া আসিলেন।29 আর যখন সমস্ত মণ্ডলী দেখিল যে, হারোণ মরিয়া গিয়াছেন, তখন সমস্ত ইস্রায়েল-কুল হারোণের জন্য ত্রিশ দিন পর্য্যন্ত শোক করিল।