সামুয়েল ২ 18 : 1 (OCVBN)
দাউদ তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজনকে একত্র করে তাদের উপর সহস্র-সেনাপতি ও শত-সেনাপতিদের নিযুক্ত করে দিলেন।
সামুয়েল ২ 18 : 2 (OCVBN)
দাউদ তাঁর সৈন্যদলকে তিন ভাগে বিভক্ত করে এক ভাগ যোয়াবের, অন্য এক ভাগ যোয়াবের ভাই সরূয়ার ছেলে অবীশয়ের, ও তৃতীয় ভাগটি গাতীয় ইত্তয়ের কর্তৃত্বাধীনে রেখে, তাদের যুদ্ধে পাঠিয়ে দিলেন। রাজামশাই তাঁর সৈন্যদের বললেন, “আমি নিজেও অবশ্য তোমাদের সঙ্গে কুচকাওয়াজ করে যাব।”
সামুয়েল ২ 18 : 3 (OCVBN)
সামুয়েল ২ 18 : 4 (OCVBN)
কিন্তু লোকেরা বলল, “আপনাকে যেতে হবে না; আমাদের যদি পালাতেও হয়, তারা আমাদের নিয়ে মাথা ঘামাবে না। এমন কী আমাদের মধ্যে অর্ধেক লোকও যদি মারা যায়, তবু তারা মাথা ঘামাবে না; কিন্তু আপনার দাম আমাদের মতো 10,000 লোকের সমান।* অথবা, “কারণ, এখানে এখন আমাদের মতো 10,000 লোক আছে” ভালো হয়, যদি আপনি নগরে থেকেই আমাদের সাহায্য করে যান।” রাজামশাই উত্তর দিলেন, “তোমাদের যা ভালো মনে হয়, আমি তাই করব।” অতএব রাজামশাই সিংহদুয়ারের কাছে দাঁড়িয়েছিলেন, আর তাঁর সব লোকজন এক-একশো ও এক এক হাজার জনের দলে বিভক্ত হয়ে কুচকাওয়াজ করে এগিয়ে গেল।
সামুয়েল ২ 18 : 5 (OCVBN)
রাজামশাই যোয়াব, অবীশয় ও ইত্তয়কে আদেশ দিলেন, “আমার খাতিরে সেই যুবক অবশালোমের প্রতি সদয় আচরণ কোরো।” আর সব সৈন্যসামন্ত শুনেছিল রাজামশাই অবশালোমের বিষয়ে সেনাপতিদের এক একজনকে কী আদেশ দিলেন।
সামুয়েল ২ 18 : 6 (OCVBN)
দাউদের সৈন্যদল ইস্রায়েলীদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য কুচকাওয়াজ করে নগর ছেড়ে বেরিয়েছিল, এবং ইফ্রয়িমের অরণ্যে যুদ্ধ হল।
সামুয়েল ২ 18 : 7 (OCVBN)
ইস্রায়েলের সৈন্যদল সেখানে দাউদের লোকদের হাতে সম্পূর্ণরূপে পরাজিত হল, এবং সেদিন প্রচুর লোকজন মারা গেল—সংখ্যায় তা হবে 20,000।
সামুয়েল ২ 18 : 8 (OCVBN)
সমস্ত গ্রাম্য এলাকায় যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছিল, ও সেদিন যত না লোক তরোয়ালের আঘাতে মারা গেল, তার চেয়েও বেশি লোক মারা গেল অরণ্যের গ্রাসে।
সামুয়েল ২ 18 : 9 (OCVBN)
সামুয়েল ২ 18 : 10 (OCVBN)
এদিকে অবশালোম দাউদের লোকজনের সামনে পড়ে গেল। সে খচ্চরের পিঠে চেপে যাচ্ছিল, ও খচ্চরটি যখন বেশ বড়সড় একটি ওক গাছের ঘন ডালপালার তলা দিয়ে যাচ্ছিল, অবশালোমের মাথার চুল গাছে আটকে গেল। সে শূন্যে ঝুলে গেল, অথচ যে খচ্চরটির পিঠে চেপে সে যাচ্ছিল, সেটি এগিয়ে গেল।
সামুয়েল ২ 18 : 11 (OCVBN)
যা ঘটেছিল, লোকদের মধ্যে একজন যখন তা দেখেছিল, সে যোয়াবকে বলল, “আমি এইমাত্র দেখলাম যে অবশালোম একটি ওক গাছে ঝুলছে।”
সামুয়েল ২ 18 : 12 (OCVBN)
যোয়াবকে যে একথা বলল তাকে তিনি বললেন, “তাই নাকি! তুমি তাকে দেখেছ? সেখানেই তুমি কেন তাকে যন্ত্রণা করে মাটিতে পেড়ে ফেলোনি? তবে তো আমি তোমাকে দশ শেকল† অথবা, প্রায় 115 গ্রাম রুপো ও একজন যোদ্ধার কোমরবন্ধ দিতে পারতাম।” কিন্তু সেই লোকটি উত্তর দিয়েছিল, “আমার হাতে যদি হাজার শেকল রুপোও‡ অথবা, প্রায় বারো কিলোগ্রাম ওজন করে ধরিয়ে দেওয়া হয়, তবু আমি রাজপুত্রের গায়ে হাত দেব না। আমরা শুনেছি মহারাজ আপনাকে, অবীশয়কে ও ইত্তয়কে আদেশ দিয়েছিলেন, ‘আমার খাতিরে যুবক অবশালোমকে রক্ষা কোরো।’ § এভাবেও এটি অনুবাদ করা যায়: “তোমরা যে কেউ হও না কেন, অবশালোমকে রক্ষা কোরো”
সামুয়েল ২ 18 : 13 (OCVBN)
আর আমি যদি আমার প্রাণের ঝুঁকিও নিয়ে ফেলি* অন্যভাবে বলা যায়, “আমি যদি তার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতাও করি” —মহারাজের কাছে কিছুই লুকিয়ে রাখা যায় না—আপনিই তখন আমার সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে ফেলবেন।”
সামুয়েল ২ 18 : 14 (OCVBN)
যোয়াব বললেন, “আমি তোমার জন্য এভাবে অপেক্ষা করতে পারব না।” অতএব তিনি হাতে তিনটি বর্শা নিয়ে সেগুলি অবশালোমের বুকে গেঁথে দিলেন, অথচ অবশালোম তখনও ওক গাছে ঝুলেও বেঁচেছিলেন।
সামুয়েল ২ 18 : 15 (OCVBN)
যোয়াবের অস্ত্র-বহনকারীদের মধ্যে দশজন অবশালোমকে ঘিরে রেখে তাকে আঘাত করে হত্যা করল।
সামুয়েল ২ 18 : 16 (OCVBN)
পরে যোয়াব শিঙা বাজিয়েছিলেন, ও সৈন্যদল ইস্রায়েলের পিছু ধাওয়া করা বন্ধ করে দিয়েছিল, কারণ যোয়াব তাদের থামিয়ে দিলেন।
সামুয়েল ২ 18 : 17 (OCVBN)
তারা অবশালোমকে নিয়ে অরণ্যে অবস্থিত এক বড়ো গর্তে ফেলে দিয়েছিল ও তার উপর পাথরের বড়ো এক স্তূপ সাজিয়ে দিয়েছিল। এদিকে, সমস্ত ইস্রায়েলী তাদের বাসায় পালিয়ে গেল।
সামুয়েল ২ 18 : 18 (OCVBN)
সামুয়েল ২ 18 : 19 (OCVBN)
বেঁচে থাকার সময় অবশালোম একটি স্তম্ভ বানিয়ে সেটি নিজের এক স্মৃতিসৌধরূপে রাজার উপত্যকায় স্থাপন করল, কারণ সে ভেবেছিল, “আমার নামের স্মৃতি রক্ষা করার জন্য আমার তো কোনও ছেলে নেই।” সে নিজের নামে স্তম্ভটির নামকরণ করল, এবং আজও পর্যন্ত সেটি অবশালোমের নামেই পরিচিত হয়ে আছে। দাউদের শোকপ্রকাশ
সামুয়েল ২ 18 : 20 (OCVBN)
এদিকে সাদোকের ছেলে অহীমাস বললেন, “আমি দৌড়ে গিয়ে মহারাজের কাছে এই খবরটি নিয়ে যাব যে মহারাজের শত্রুদের হাত থেকে তাঁকে উদ্ধার করার দ্বারা সদাপ্রভু তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন।”
সামুয়েল ২ 18 : 21 (OCVBN)
“আজ তুমি এ খবরটি নিয়ে যাবে না,” যোয়াব তাঁকে বললেন। “অন্য কোনও এক সময় তুমি এ খবরটি নিয়ে যেয়ো, কিন্তু আজ এরকমটি করতে যেয়ো না, কারণ রাজার ছেলে মারা গিয়েছেন।”
সামুয়েল ২ 18 : 22 (OCVBN)
পরে যোয়াব একজন কূশীয়কে বললেন, “যাও, তুমি যা যা দেখেছ, মহারাজকে গিয়ে তা বলো।” কূশীয় লোকটি যোয়াবকে প্রণাম করে দৌড়ে চলে গেল।
সামুয়েল ২ 18 : 23 (OCVBN)
সাদোকের ছেলে অহীমাস আরেকবার যোয়াবকে বললেন, “যা হয় হোক, আমাকে সেই কূশীয়র পিছন পিছন দৌড়ে যেতে দিন।” কিন্তু যোয়াব উত্তর দিলেন, “বাছা, তুমি কেন যেতে চাইছ? তোমার কাছে এমন কোনও খবর নেই যা দিয়ে তুমি পুরস্কার পাবে।”
সামুয়েল ২ 18 : 24 (OCVBN)
তিনি বললেন, “যা হয় হোক, আমি দৌড়ে যেতে চাই।” অগত্যা যোয়াব বললেন, “দৌড়াও!” তখন অহীমাস সমভূমির† অথবা, জর্ডন সমভূমির পথ ধরে দৌড়ে গিয়ে কূশীয়কে পিছনে ফেলে দিলেন। দাউদ যখন ভিতরের ও বাইরের দরজার মাঝামাঝিতে বসেছিলেন, পাহারাদার তখন দেয়াল বেয়ে দরজার ছাদে উঠে গেল। বাইরে তাকিয়ে সে দেখেছিল, একজন লোক একা দৌড়ে আসছে।
সামুয়েল ২ 18 : 25 (OCVBN)
পাহারাদার রাজামশাইকে ডেকে সে খবর জানিয়েছিল।
সামুয়েল ২ 18 : 26 (OCVBN)
রাজামশাই বললেন, “সে যদি একা আছে তবে নিশ্চয় ভালো খবরই আনছে।” লোকটি দৌড়াতে দৌড়াতে খুব কাছাকাছি এসে পড়েছিল।
সামুয়েল ২ 18 : 27 (OCVBN)
পরে পাহারাদার আরও একজনকে দৌড়ে আসতে দেখেছিল, আর সে উপর থেকে দারোয়ানকে ডেকে বলল, “দেখো, আরও একজন লোক একা দৌড়ে আসছে!” রাজামশাই বললেন, “সেও নিশ্চয় ভালো খবর নিয়ে আসছে।”
সামুয়েল ২ 18 : 28 (OCVBN)
পাহারাদার বলল, “আমার মনে হচ্ছে যে প্রথমজন সাদোকের ছেলে অহীমাসের মতো দৌড়াচ্ছেন।” “সে একজন ভালো লোক,” রাজামশাই বললেন। “সে ভালো খবর নিয়ে আসছে।”
সামুয়েল ২ 18 : 29 (OCVBN)
অহীমাস জোর গলায় রাজামশাইকে ডেকে বললেন, “সব ঠিক আছে!” তিনি মাটিতে উবুড় হয়ে রাজাকে প্রণাম করে বললেন, “আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রশংসা হোক! আমার প্রভু মহারাজের বিরুদ্ধে যারা হাত তুলেছিল, তিনি তাদের ত্যাগ করেছেন।”
সামুয়েল ২ 18 : 30 (OCVBN)
রাজামশাই জিজ্ঞাসা করলেন, “সেই যুবক অবশালোম কি সুরক্ষিত আছে?” অহীমাস উত্তর দিলেন, “ঠিক যখন যোয়াব মহারাজের দাসকে ও আপনার দাস—আমাকে পাঠাতে যাচ্ছিলেন, তখন খুব গোলমাল হচ্ছিল, তবে আমি জানি না ঠিক কী হল।”
সামুয়েল ২ 18 : 31 (OCVBN)
রাজামশাই বললেন, “এক পাশে সরে গিয়ে একটু অপেক্ষা করো।” অতএব তিনি পাশে সরে গিয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে গেলেন।
সামুয়েল ২ 18 : 32 (OCVBN)
পরে সেই কূশীয় লোকটি সেখানে পৌঁছে বলল, “হে আমার প্রভু মহারাজ, সুখবর শুনুন! যারা মহারাজের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল, তাদের হাত থেকে তাঁকে উদ্ধার করার দ্বারা সদাপ্রভু তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন।”
সামুয়েল ২ 18 : 33 (OCVBN)
রাজামশাই সেই কূশীয়কে জিজ্ঞাসা করলেন, “সেই যুবক অবশালোম সুরক্ষিত আছে?” কূশীয় লোকটি উত্তর দিয়েছিল, “আমার প্রভু মহারাজের শত্রুদের ও যারা যারা আপনার বিরুদ্ধে উঠেছিল, তাদের সকলের দশা যেন সেই যুবকের মতোই হয়।” রাজামশাই কেঁপে উঠেছিলেন। তিনি সদর-দরজার উপরের ঘরে গিয়ে কেঁদেছিলেন। যেতে যেতে তিনি বললেন: “বাছা অবশালোম! আমার ছেলে, আমার ছেলে অবশালোম! তোমার পরিবর্তে শুধু আমি যদি মরতে পারতাম—হে অবশালোম, আমার ছেলে, আমার ছেলে!”
❮
❯