পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
দ্বিতীয় বিবরণ
1. পরে আমরা ফিরিয়া বাশনের পথে উঠিয়া চলিলাম; তাহাতে বাশনের রাজা ওগ এবং তাঁহার সমস্ত প্রজা আমাদের সহিত যুদ্ধ করণার্থে বাহির হইয়া ইদ্রিয়ীতে আসিলেন।
2. তখন সদাপ্রভু আমাকে কহিলেন, তুমি উহাকে ভয় করিও না, কেননা আমি উহাকে, উহার সমস্ত প্রজাকে ও উহার দেশ তোমার হস্তে সমর্পণ করিলাম; তুমি যেমন হিষ্‌বোন-নিবাসী ইমোরীয়দের রাজা সীহোনের প্রতি করিয়াছ, তেমনি উহার প্রতিও করিবে।
3. এইরূপে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু বাশনের রাজা ওগকে ও তাঁহার সমস্ত প্রজাকে আমাদের হস্তে সমর্পণ করিলেন; তাহাতে আমরা তাঁহাকে এমন আঘাত করিলাম যে, তাঁহার কেহ অবশিষ্ট থাকিল না।
4. সেই সময়ে আমরা তাঁহার সমস্ত নগর হস্তগত করিলাম; এমন এক নগরও থাকিল না, যাহা তাহাদের হইতে লই নাই; ষষ্টি নগর, অর্গোবের সমস্ত অঞ্চল, বাশনস্থ ওগের রাজ্য লইলাম।
5. সেই সমস্ত নগর উচ্চ প্রাচীর, দ্বার ও অর্গল দ্বারা সুরক্ষিত ছিল; আর প্রাচীরবিহীন অনেক নগরও ছিল।
6. আমরা হিষ্‌বোনের রাজা সীহোনের প্রতি যেমন করিয়াছিলাম, সেইরূপ তাহাদিগকে নিঃশেষে বিনষ্ট করিলাম, স্ত্রীলোক ও বালকবালিকা শুদ্ধ তাহাদের সমস্ত বসতি নগর বিনষ্ট করিলাম।
7. কিন্তু তাহাদের সমস্ত পশু ও নগরের দ্রব্যাদি লুট করিয়া আপনাদের জন্য গ্রহণ করিলাম।
8. সেই সময়ে আমরা যর্দ্দনের পূর্ব্বপারস্থ ইমোরীয়দের দুই রাজার হস্ত হইতে অর্ণোন উপত্যকা অবধি হর্মোণ পর্ব্বত পর্য্যন্ত সমস্ত দেশ হস্তগত করিলাম।
9. (সীদোনীয়েরা ঐ হর্মোণকে সিরিয়োণ বলে, এবং ইমোরীয়েরা তাহাকে সনীর বলে।)
10. আমরা সমভূমির সমস্ত নগর, সল্‌খা ও ইদ্রিয়ী পর্য্যন্ত সমস্ত গিলিয়দ এবং সমস্ত বাশন, বাশনস্থিত ওগ-রাজ্যের নগরসমূহ হস্তগত করিলাম।
11. (ফলতঃ অবশিষ্ট রফায়ীয়দের মধ্যে কেবল বাশনের রাজা ওগ মাত্র অবশিষ্ট ছিলেন; দেখ, তাঁহার খট্টা লৌহময়; তাহা কি অম্মোন-সন্তানগণের রব্বা নগরে নাই? মনুষ্যের হস্তের পরিমাণানুসারে তাহা দীর্ঘে নয় হস্ত ও প্রস্থে চারি হস্ত।)
12. সেই সময়ে আমরা এই দেশ অধিকার করিলাম; অর্ণোন উপত্যকাস্থ অরোয়ের অবধি, এবং পর্ব্বতময় গিলিয়দ দেশের অর্দ্ধেক ও তথাকার নগর সকল রূবেণীয় ও গাদীয়দিগকে দিলাম।
13. আর গিলিয়দের অবশিষ্ট অংশ ও সমস্ত বাশন অর্থাৎ ওগের রাজ্য, সমস্ত বাশনের সহিত অর্গোবের সমস্ত অঞ্চল আমি মনঃশির অর্দ্ধ বংশকে দিলাম। (তাহাই রফায়ীয় দেশ বলিয়া বিখ্যাত।
14. মনঃশির সন্তান যায়ীর গশূরীয়দের ও মাখাথীয়দের সীমা পর্য্যন্ত অর্গোবের সমস্ত অঞ্চল লইয়া আপন নামানুসারে বাশন দেশের সেই সকল স্থানের নাম হব্বোৎ-যায়ীর রাখিল; অদ্য পর্য্যন্ত [সেই নাম চলিত আছে]।)
15. আর আমি মাখীরকে গিলিয়দ দিলাম।
16. আর গিলিয়দ হইতে অর্ণোন উপত্যকা পর্য্যন্ত, উপত্যকার মধ্যস্থান ও তৎপরিসীমা, এবং অম্মোন-সন্তানগণের সীমা যব্বোক নদী পর্য্যন্ত;
17. আর অরাবা তলভূমি, যর্দ্দন ও তৎপরিসীমা, কিন্নেরৎ হইতে অরাবার সমুদ্র, অর্থাৎ পূর্ব্বদিকে পিস্‌গা-পার্শ্বের নীচে লবণসমুদ্র পর্য্যন্ত রূবেণীয় ও গাদীয়দিগকে দিলাম।
18. আর সেই সময়ে তোমাদিগকে এই আজ্ঞা করিলাম, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু অধিকারার্থে এই দেশ তোমাদিগকে দিয়াছেন। তোমাদের সমস্ত যোদ্ধা সসজ্জ হইয়া তোমাদের ভ্রাতৃগণের অর্থাৎ ইস্রায়েল-সন্তানগণের সম্মুখে পার হইয়া যাইবে।
19. আমি তোমাদিগকে যে সকল নগর দিলাম, তোমাদের সেই সকল নগরে তোমাদের স্ত্রীলোক, বালকবালিকা ও পশুগণ বাস করিবে; আমি জানি, তোমাদের অনেক পশু আছে।
20. পরে সদাপ্রভু তোমাদের ভ্রাতৃগণকে তোমাদের ন্যায় বিশ্রাম দিলে, যর্দ্দনের ওপারে যে দেশ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাহাদিগকে দিতেছেন, তাহারাও সেই দেশ অধিকার করিবে; তখন তোমরা প্রত্যেকে আমার দত্ত আপন আপন অধিকারে ফিরিয়া আসিবে।
21. আর সেই সময়ে আমি যিহোশূয়কে আজ্ঞা করিলাম, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সেই দুই রাজার প্রতি যাহা করিয়াছেন, তাহা তুমি স্বচক্ষে দেখিয়াছ; তুমি পার হইয়া যে যে রাজ্যের বিরুদ্ধে যাইবে, সে সমস্ত রাজ্যের প্রতি সদাপ্রভু তদ্রূপ করিবেন।
22. তোমরা তাহাদিগকে ভয় করিও না; কেননা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আপনি তোমাদের জন্য যুদ্ধ করিবেন।
23. সেই সময়ে আমি সদাপ্রভুকে সাধ্যসাধনা করিয়া কহিলাম,
24. হে প্রভু সদাপ্রভু, তুমি আপন দাসের কাছে আপন মহিমা ও বলবান হস্ত প্রকাশ করিতে আরম্ভ করিলে; তোমার কার্য্যের মত কার্য্য ও তোমার বিক্রম-কর্ম্মের মত কর্ম্ম করিতে পারে, স্বর্গে কি পৃথিবীতে এমন ঈশ্বর কে আছে?
25. বিনয় করি, আমাকে ওপারে গিয়া যর্দ্দনপারস্থ সেই উত্তম দেশ, সেই রমণীয় গিরিপ্রদেশ ও লিবানোন দেখিতে দেও।
26. কিন্তু সদাপ্রভু তোমাদের জন্য আমার প্রতিকূলে ক্রুদ্ধ হওয়াতে আমার কথা শুনিলেন না; সদাপ্রভু আমাকে কহিলেন, তোমার পক্ষে এই যথেষ্ট, এ বিষয়ের কথা আমাকে আর বলিও না।
27. পিস্‌গার শৃঙ্গে উঠ, এবং পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব্ব দিকে দৃষ্টিপাত কর; আপন চক্ষে নিরীক্ষণ কর, কেননা তুমি এই যর্দ্দন পার হইতে পাইবে না।
28. কিন্তু তুমি যিহোশূয়কে আজ্ঞা কর, তাহাকে আশ্বাস দেও, এবং তাহাকে বীর্য্যবান্‌ কর, কেননা সে এই লোকদের অগ্রগামী হইয়া পার হইবে, আর যে দেশ তুমি দেখিবে, সেই দেশ সে তাহাদিগকে অধিকার করাইবে।
29. এইরূপে আমরা বৈৎ-পিয়োরের সম্মুখস্থিত উপত্যকায় বাস করিলাম।

Notes

No Verse Added

Total 34 Chapters, Current Chapter 3 of Total Chapters 34
দ্বিতীয় বিবরণ 3:11
1. পরে আমরা ফিরিয়া বাশনের পথে উঠিয়া চলিলাম; তাহাতে বাশনের রাজা ওগ এবং তাঁহার সমস্ত প্রজা আমাদের সহিত যুদ্ধ করণার্থে বাহির হইয়া ইদ্রিয়ীতে আসিলেন।
2. তখন সদাপ্রভু আমাকে কহিলেন, তুমি উহাকে ভয় করিও না, কেননা আমি উহাকে, উহার সমস্ত প্রজাকে উহার দেশ তোমার হস্তে সমর্পণ করিলাম; তুমি যেমন হিষ্‌বোন-নিবাসী ইমোরীয়দের রাজা সীহোনের প্রতি করিয়াছ, তেমনি উহার প্রতিও করিবে।
3. এইরূপে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু বাশনের রাজা ওগকে তাঁহার সমস্ত প্রজাকে আমাদের হস্তে সমর্পণ করিলেন; তাহাতে আমরা তাঁহাকে এমন আঘাত করিলাম যে, তাঁহার কেহ অবশিষ্ট থাকিল না।
4. সেই সময়ে আমরা তাঁহার সমস্ত নগর হস্তগত করিলাম; এমন এক নগরও থাকিল না, যাহা তাহাদের হইতে লই নাই; ষষ্টি নগর, অর্গোবের সমস্ত অঞ্চল, বাশনস্থ ওগের রাজ্য লইলাম।
5. সেই সমস্ত নগর উচ্চ প্রাচীর, দ্বার অর্গল দ্বারা সুরক্ষিত ছিল; আর প্রাচীরবিহীন অনেক নগরও ছিল।
6. আমরা হিষ্‌বোনের রাজা সীহোনের প্রতি যেমন করিয়াছিলাম, সেইরূপ তাহাদিগকে নিঃশেষে বিনষ্ট করিলাম, স্ত্রীলোক বালকবালিকা শুদ্ধ তাহাদের সমস্ত বসতি নগর বিনষ্ট করিলাম।
7. কিন্তু তাহাদের সমস্ত পশু নগরের দ্রব্যাদি লুট করিয়া আপনাদের জন্য গ্রহণ করিলাম।
8. সেই সময়ে আমরা যর্দ্দনের পূর্ব্বপারস্থ ইমোরীয়দের দুই রাজার হস্ত হইতে অর্ণোন উপত্যকা অবধি হর্মোণ পর্ব্বত পর্য্যন্ত সমস্ত দেশ হস্তগত করিলাম।
9. (সীদোনীয়েরা হর্মোণকে সিরিয়োণ বলে, এবং ইমোরীয়েরা তাহাকে সনীর বলে।)
10. আমরা সমভূমির সমস্ত নগর, সল্‌খা ইদ্রিয়ী পর্য্যন্ত সমস্ত গিলিয়দ এবং সমস্ত বাশন, বাশনস্থিত ওগ-রাজ্যের নগরসমূহ হস্তগত করিলাম।
11. (ফলতঃ অবশিষ্ট রফায়ীয়দের মধ্যে কেবল বাশনের রাজা ওগ মাত্র অবশিষ্ট ছিলেন; দেখ, তাঁহার খট্টা লৌহময়; তাহা কি অম্মোন-সন্তানগণের রব্বা নগরে নাই? মনুষ্যের হস্তের পরিমাণানুসারে তাহা দীর্ঘে নয় হস্ত প্রস্থে চারি হস্ত।)
12. সেই সময়ে আমরা এই দেশ অধিকার করিলাম; অর্ণোন উপত্যকাস্থ অরোয়ের অবধি, এবং পর্ব্বতময় গিলিয়দ দেশের অর্দ্ধেক তথাকার নগর সকল রূবেণীয় গাদীয়দিগকে দিলাম।
13. আর গিলিয়দের অবশিষ্ট অংশ সমস্ত বাশন অর্থাৎ ওগের রাজ্য, সমস্ত বাশনের সহিত অর্গোবের সমস্ত অঞ্চল আমি মনঃশির অর্দ্ধ বংশকে দিলাম। (তাহাই রফায়ীয় দেশ বলিয়া বিখ্যাত।
14. মনঃশির সন্তান যায়ীর গশূরীয়দের মাখাথীয়দের সীমা পর্য্যন্ত অর্গোবের সমস্ত অঞ্চল লইয়া আপন নামানুসারে বাশন দেশের সেই সকল স্থানের নাম হব্বোৎ-যায়ীর রাখিল; অদ্য পর্য্যন্ত সেই নাম চলিত আছে।)
15. আর আমি মাখীরকে গিলিয়দ দিলাম।
16. আর গিলিয়দ হইতে অর্ণোন উপত্যকা পর্য্যন্ত, উপত্যকার মধ্যস্থান তৎপরিসীমা, এবং অম্মোন-সন্তানগণের সীমা যব্বোক নদী পর্য্যন্ত;
17. আর অরাবা তলভূমি, যর্দ্দন তৎপরিসীমা, কিন্নেরৎ হইতে অরাবার সমুদ্র, অর্থাৎ পূর্ব্বদিকে পিস্‌গা-পার্শ্বের নীচে লবণসমুদ্র পর্য্যন্ত রূবেণীয় গাদীয়দিগকে দিলাম।
18. আর সেই সময়ে তোমাদিগকে এই আজ্ঞা করিলাম, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু অধিকারার্থে এই দেশ তোমাদিগকে দিয়াছেন। তোমাদের সমস্ত যোদ্ধা সসজ্জ হইয়া তোমাদের ভ্রাতৃগণের অর্থাৎ ইস্রায়েল-সন্তানগণের সম্মুখে পার হইয়া যাইবে।
19. আমি তোমাদিগকে যে সকল নগর দিলাম, তোমাদের সেই সকল নগরে তোমাদের স্ত্রীলোক, বালকবালিকা পশুগণ বাস করিবে; আমি জানি, তোমাদের অনেক পশু আছে।
20. পরে সদাপ্রভু তোমাদের ভ্রাতৃগণকে তোমাদের ন্যায় বিশ্রাম দিলে, যর্দ্দনের ওপারে যে দেশ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাহাদিগকে দিতেছেন, তাহারাও সেই দেশ অধিকার করিবে; তখন তোমরা প্রত্যেকে আমার দত্ত আপন আপন অধিকারে ফিরিয়া আসিবে।
21. আর সেই সময়ে আমি যিহোশূয়কে আজ্ঞা করিলাম, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সেই দুই রাজার প্রতি যাহা করিয়াছেন, তাহা তুমি স্বচক্ষে দেখিয়াছ; তুমি পার হইয়া যে যে রাজ্যের বিরুদ্ধে যাইবে, সে সমস্ত রাজ্যের প্রতি সদাপ্রভু তদ্রূপ করিবেন।
22. তোমরা তাহাদিগকে ভয় করিও না; কেননা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আপনি তোমাদের জন্য যুদ্ধ করিবেন।
23. সেই সময়ে আমি সদাপ্রভুকে সাধ্যসাধনা করিয়া কহিলাম,
24. হে প্রভু সদাপ্রভু, তুমি আপন দাসের কাছে আপন মহিমা বলবান হস্ত প্রকাশ করিতে আরম্ভ করিলে; তোমার কার্য্যের মত কার্য্য তোমার বিক্রম-কর্ম্মের মত কর্ম্ম করিতে পারে, স্বর্গে কি পৃথিবীতে এমন ঈশ্বর কে আছে?
25. বিনয় করি, আমাকে ওপারে গিয়া যর্দ্দনপারস্থ সেই উত্তম দেশ, সেই রমণীয় গিরিপ্রদেশ লিবানোন দেখিতে দেও।
26. কিন্তু সদাপ্রভু তোমাদের জন্য আমার প্রতিকূলে ক্রুদ্ধ হওয়াতে আমার কথা শুনিলেন না; সদাপ্রভু আমাকে কহিলেন, তোমার পক্ষে এই যথেষ্ট, বিষয়ের কথা আমাকে আর বলিও না।
27. পিস্‌গার শৃঙ্গে উঠ, এবং পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ পূর্ব্ব দিকে দৃষ্টিপাত কর; আপন চক্ষে নিরীক্ষণ কর, কেননা তুমি এই যর্দ্দন পার হইতে পাইবে না।
28. কিন্তু তুমি যিহোশূয়কে আজ্ঞা কর, তাহাকে আশ্বাস দেও, এবং তাহাকে বীর্য্যবান্‌ কর, কেননা সে এই লোকদের অগ্রগামী হইয়া পার হইবে, আর যে দেশ তুমি দেখিবে, সেই দেশ সে তাহাদিগকে অধিকার করাইবে।
29. এইরূপে আমরা বৈৎ-পিয়োরের সম্মুখস্থিত উপত্যকায় বাস করিলাম।
Total 34 Chapters, Current Chapter 3 of Total Chapters 34
×

Alert

×

bengali Letters Keypad References