পবিত্র বাইবেল

বাইবেল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া (BSI)
पশিষ্যচরিত
1. ফীষ্ট সেই প্রদেশে উপস্থিত হইবার তিন দিন পরে কৈসরিয়া হইতে যিরূশালেমে গেলেন।
2. তাহাতে প্রধান যাজকগণ এবং যিহূদীদের প্রধান প্রধান লোক তাঁহার নিকটে পৌলের বিরুদ্ধে আবেদন করিলেন;
3. আর বিনতিপূর্ব্বক তাঁহার বিরুদ্ধে এই অনুগ্রহ যাচ্ঞা করিতে লাগিলেন, যেন পৌলকে যিরূশালেমে ডাকিয়া পাঠান। তাঁহারা পথিমধ্যে তাঁহাকে বধ করিবার জন্য ঘাঁটি বসাইতে চাহিয়াছিলেন।
4. কিন্তু ফীষ্ট উত্তর করিলেন, পৌল কৈসরিয়াতে আবদ্ধ আছে; আমিও সেখানে অবিলম্বে প্রস্থান করিব।
5. অতএব তোমাদের মধ্যে যাহারা ক্ষমতাপন্ন, তাহারা আমার সহিত সেখানে গিয়া, সেই ব্যক্তির কোন দোষ যদি থাকে, তবে তাহার উপরে দোষারোপ করুক।
6. আর তাঁহাদের নিকটে আট দশ দিনের অনধিক কাল অবস্থিতি করিয়া তিনি কৈসরিয়াতে নামিয়া গেলেন; এবং পরদিন বিচারাসনে বসিয়া পৌলকে আনিতে আজ্ঞা করিলেন।
7. তিনি উপস্থিত হইলে যিরূশালেম হইতে আগত যিহূদীরা তাঁহার চারিদিকে দাঁড়াইয়া তাঁহার বিপক্ষে অনেক ভারী ভারী দোষের কথা উত্থাপন করিতে লাগিল, কিন্তু তাহার প্রমাণ দর্শাইতে পারিল না।
8. এদিকে পৌল আপনার পক্ষ সমর্থন করিয়া বলিলেন, যিহূদীদের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে, ধর্ম্মধামের বিরুদ্ধে, কিম্বা কৈসরের বিরুদ্ধে আমি কোন অপরাধ করি নাই।
9. কিন্তু ফীষ্ট যিহূদীদের প্রীতি-পাত্র হইবার ইচ্ছা করাতে পৌলকে উত্তর করিয়া কহিলেন, তুমি কি যিরূশালেমে গিয়া সেখানে আমার সাক্ষাতে এই সকল বিষয়ে বিচারিত হইতে সম্মত?
10. পৌল বলিলেন, আমি কৈসরের বিচারাসনের সম্মুখে দাঁড়াইয়া আছি, এখানে আমার বিচার হওয়া উচিত। আমি যিহূদীদের প্রতি কিছু অন্যায় করি নাই, ইহা আপনিও বিলক্ষণ জানেন।
11. তবে যদি আমি অপরাধী হই, এবং মৃত্যুর যোগ্য কিছু করিয়া থাকি, তাহা হইলে মরিতে অস্বীকার করি না; কিন্তু ইহারা আমার উপরে যে সকল দোষারোপ করিতেছে, এ সকল যদি কিছুই না হয় তবে ইহাদের হস্তে আমাকে সমর্পণ করিতে কাহারও অধিকার নাই; আমি কৈসরের নিকটে আপীল করি।
12. তখন ফীষ্ট মন্ত্রিসভার সহিত পরামর্শ করিয়া উত্তর করিলেন, তুমি কৈসরের নিকটে আপীল করিলে; কৈসরের কাছেই যাইবে।
13. পরে কয়েক দিন গত হইলে আগ্রিপ্প রাজা এবং বর্ণীকী কৈসরিয়ায় উপস্থিত হইলেন, এবং ফীষ্টকে মঙ্গলবাদ করিলেন।
14. তাঁহারা অনেক দিন সেখানে অবস্থিতি করিলে ফীষ্ট রাজার কাছে পৌলের কথা উপস্থিত করিয়া কহিলেন, ফীলিক্স একটা লোককে বন্দি রাখিয়া গিয়াছেন;
15. যখন আমি যিরূশালেমে ছিলাম, তখন যিহূদীদের প্রধান যাজকগণ ও প্রাচীনবর্গ সেই ব্যক্তির বিষয় আবেদন করিয়া তাহার বিরুদ্ধে দণ্ডাজ্ঞা যাচ্ঞা করিয়াছিল।
16. আমি তাহাদিগকে এই উত্তর দিয়াছিলাম, যাহার নামে দোষারোপ হয়, সে যাবৎ দোষারোপকারীদের সহিত সম্মুখাসম্মুখি না হয়, এবং আরোপিত দোষ সম্বন্ধে আত্মপক্ষ সমর্থনের অবসর না পায়, তাবৎ কোন ব্যক্তিকে সমর্পণ করা রোমীয়দের প্রথা নয়।
17. পরে তাহারা একসঙ্গে এ স্থানে আসিলে আমি কাল বিলম্ব না করিয়া পরদিন বিচারাসনে বসিয়া সেই ব্যক্তিকে আনিতে আজ্ঞা করিলাম।
18. পরে দোষারোপকারীরা দাঁড়াইয়া, আমি যে প্রকার দোষ অনুমান করিয়াছিলাম, সেই প্রকার কোন দোষ তাহার বিষয়ে উত্থাপন করিল না;
19. কিন্তু তাহার বিরুদ্ধে আপনাদের নিজ ধর্ম্ম বিষয়ে, এবং যীশু নামে কোন মৃত ব্যক্তি, যাহাকে পৌল জীবিত বলিত, তাহার বিষয়ে কয়েকটী তর্ক উপস্থিত করিল।
20. তখন এ সকল বিষয় কিরূপে অনুসন্ধান করিতে হইবে, আমি স্থির করিতে না পারিয়া বলিলাম, তুমি কি যিরূশালেমে গিয়া সেখানে এই বিষয়ে বিচারিত হইতে সম্মত?
21. তখন পৌল আপীল করিয়া সম্রাটের বিচারের জন্য রক্ষিত থাকিতে প্রার্থনা করায়, আমি যে পর্য্যন্ত তাহাকে কৈসরের নিকটে পাঠাইয়া দিতে না পারি, সে পর্য্যন্ত আবদ্ধ রাখিতে আজ্ঞা দিলাম।
22. তখন আগ্রিপ্প ফীষ্টকে কহিলেন, আমিও সেই ব্যক্তির নিকটে কথা শুনিতে চাহিয়াছিলাম। ফীষ্ট কহিলেন, কল্য শুনিতে পাইবেন।
23. অতএব পরদিন আগ্রিপ্প ও বর্ণীকী মহা আড়ম্বরের সহিত আসিলেন, এবং সহস্রপতিগণের ও নগরের প্রধান লোকদের সহিত সভাস্থলে প্রবিষ্ট হইলেন, আর ফীষ্টের আজ্ঞায় পৌল আনীত হইলেন।
24. তখন ফীষ্ট কহিলেন, হে রাজন্‌ আগ্রিপ্প, এবং আমাদের সহিত সভাস্থ মহাশয়েরা, আপনারা ইহাকে দেখিতেছেন, ইহার বিষয়ে যিহূদীদের দল সমেত সকল লোক যিরূশালেমে এবং এই স্থানে আমার নিকটে আবেদন করিয়া উচ্চৈঃস্বরে বলিয়াছিল, উহার আর বাঁচিয়া থাকা উচিত নয়।
25. কিন্তু আমি দেখিতে পাইলাম, এ প্রাণদণ্ডের যোগ্য কোন কর্ম্ম করে নাই, তথাপি এ ব্যক্তি আপনি সম্রাটের নিকট আপীল করাতে ইহাকে পাঠাইতে স্থির করিয়াছি।
26. আমার প্রভুর কাছে ইহার বিষয়ে লিখিতে পারি, আমার এমন নিশ্চিত কিছুই নাই; সেই জন্য আপনাদের কাছে, বিশেষতঃ হে রাজন্‌ আগ্রিপ্প, আপনার কাছে ইহাকে উপস্থিত করিলাম; যেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হইলে পর লিখিবার কিছু সূত্র পাই।
27. কেননা বন্দি পাঠাইবার সময়ে তাহার বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা নির্দ্দেশ না করা আমার অসঙ্গত বোধ হয়।
Total 28 অধ্যায়গুলির, Selected অধ্যায় 25 / 28
1 ফীষ্ট সেই প্রদেশে উপস্থিত হইবার তিন দিন পরে কৈসরিয়া হইতে যিরূশালেমে গেলেন। 2 তাহাতে প্রধান যাজকগণ এবং যিহূদীদের প্রধান প্রধান লোক তাঁহার নিকটে পৌলের বিরুদ্ধে আবেদন করিলেন; 3 আর বিনতিপূর্ব্বক তাঁহার বিরুদ্ধে এই অনুগ্রহ যাচ্ঞা করিতে লাগিলেন, যেন পৌলকে যিরূশালেমে ডাকিয়া পাঠান। তাঁহারা পথিমধ্যে তাঁহাকে বধ করিবার জন্য ঘাঁটি বসাইতে চাহিয়াছিলেন। 4 কিন্তু ফীষ্ট উত্তর করিলেন, পৌল কৈসরিয়াতে আবদ্ধ আছে; আমিও সেখানে অবিলম্বে প্রস্থান করিব। 5 অতএব তোমাদের মধ্যে যাহারা ক্ষমতাপন্ন, তাহারা আমার সহিত সেখানে গিয়া, সেই ব্যক্তির কোন দোষ যদি থাকে, তবে তাহার উপরে দোষারোপ করুক। 6 আর তাঁহাদের নিকটে আট দশ দিনের অনধিক কাল অবস্থিতি করিয়া তিনি কৈসরিয়াতে নামিয়া গেলেন; এবং পরদিন বিচারাসনে বসিয়া পৌলকে আনিতে আজ্ঞা করিলেন। 7 তিনি উপস্থিত হইলে যিরূশালেম হইতে আগত যিহূদীরা তাঁহার চারিদিকে দাঁড়াইয়া তাঁহার বিপক্ষে অনেক ভারী ভারী দোষের কথা উত্থাপন করিতে লাগিল, কিন্তু তাহার প্রমাণ দর্শাইতে পারিল না। 8 এদিকে পৌল আপনার পক্ষ সমর্থন করিয়া বলিলেন, যিহূদীদের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে, ধর্ম্মধামের বিরুদ্ধে, কিম্বা কৈসরের বিরুদ্ধে আমি কোন অপরাধ করি নাই। 9 কিন্তু ফীষ্ট যিহূদীদের প্রীতি-পাত্র হইবার ইচ্ছা করাতে পৌলকে উত্তর করিয়া কহিলেন, তুমি কি যিরূশালেমে গিয়া সেখানে আমার সাক্ষাতে এই সকল বিষয়ে বিচারিত হইতে সম্মত? 10 পৌল বলিলেন, আমি কৈসরের বিচারাসনের সম্মুখে দাঁড়াইয়া আছি, এখানে আমার বিচার হওয়া উচিত। আমি যিহূদীদের প্রতি কিছু অন্যায় করি নাই, ইহা আপনিও বিলক্ষণ জানেন। 11 তবে যদি আমি অপরাধী হই, এবং মৃত্যুর যোগ্য কিছু করিয়া থাকি, তাহা হইলে মরিতে অস্বীকার করি না; কিন্তু ইহারা আমার উপরে যে সকল দোষারোপ করিতেছে, এ সকল যদি কিছুই না হয় তবে ইহাদের হস্তে আমাকে সমর্পণ করিতে কাহারও অধিকার নাই; আমি কৈসরের নিকটে আপীল করি। 12 তখন ফীষ্ট মন্ত্রিসভার সহিত পরামর্শ করিয়া উত্তর করিলেন, তুমি কৈসরের নিকটে আপীল করিলে; কৈসরের কাছেই যাইবে। 13 পরে কয়েক দিন গত হইলে আগ্রিপ্প রাজা এবং বর্ণীকী কৈসরিয়ায় উপস্থিত হইলেন, এবং ফীষ্টকে মঙ্গলবাদ করিলেন। 14 তাঁহারা অনেক দিন সেখানে অবস্থিতি করিলে ফীষ্ট রাজার কাছে পৌলের কথা উপস্থিত করিয়া কহিলেন, ফীলিক্স একটা লোককে বন্দি রাখিয়া গিয়াছেন; 15 যখন আমি যিরূশালেমে ছিলাম, তখন যিহূদীদের প্রধান যাজকগণ ও প্রাচীনবর্গ সেই ব্যক্তির বিষয় আবেদন করিয়া তাহার বিরুদ্ধে দণ্ডাজ্ঞা যাচ্ঞা করিয়াছিল। 16 আমি তাহাদিগকে এই উত্তর দিয়াছিলাম, যাহার নামে দোষারোপ হয়, সে যাবৎ দোষারোপকারীদের সহিত সম্মুখাসম্মুখি না হয়, এবং আরোপিত দোষ সম্বন্ধে আত্মপক্ষ সমর্থনের অবসর না পায়, তাবৎ কোন ব্যক্তিকে সমর্পণ করা রোমীয়দের প্রথা নয়। 17 পরে তাহারা একসঙ্গে এ স্থানে আসিলে আমি কাল বিলম্ব না করিয়া পরদিন বিচারাসনে বসিয়া সেই ব্যক্তিকে আনিতে আজ্ঞা করিলাম। 18 পরে দোষারোপকারীরা দাঁড়াইয়া, আমি যে প্রকার দোষ অনুমান করিয়াছিলাম, সেই প্রকার কোন দোষ তাহার বিষয়ে উত্থাপন করিল না; 19 কিন্তু তাহার বিরুদ্ধে আপনাদের নিজ ধর্ম্ম বিষয়ে, এবং যীশু নামে কোন মৃত ব্যক্তি, যাহাকে পৌল জীবিত বলিত, তাহার বিষয়ে কয়েকটী তর্ক উপস্থিত করিল। 20 তখন এ সকল বিষয় কিরূপে অনুসন্ধান করিতে হইবে, আমি স্থির করিতে না পারিয়া বলিলাম, তুমি কি যিরূশালেমে গিয়া সেখানে এই বিষয়ে বিচারিত হইতে সম্মত? 21 তখন পৌল আপীল করিয়া সম্রাটের বিচারের জন্য রক্ষিত থাকিতে প্রার্থনা করায়, আমি যে পর্য্যন্ত তাহাকে কৈসরের নিকটে পাঠাইয়া দিতে না পারি, সে পর্য্যন্ত আবদ্ধ রাখিতে আজ্ঞা দিলাম। 22 তখন আগ্রিপ্প ফীষ্টকে কহিলেন, আমিও সেই ব্যক্তির নিকটে কথা শুনিতে চাহিয়াছিলাম। ফীষ্ট কহিলেন, কল্য শুনিতে পাইবেন। 23 অতএব পরদিন আগ্রিপ্প ও বর্ণীকী মহা আড়ম্বরের সহিত আসিলেন, এবং সহস্রপতিগণের ও নগরের প্রধান লোকদের সহিত সভাস্থলে প্রবিষ্ট হইলেন, আর ফীষ্টের আজ্ঞায় পৌল আনীত হইলেন। 24 তখন ফীষ্ট কহিলেন, হে রাজন্‌ আগ্রিপ্প, এবং আমাদের সহিত সভাস্থ মহাশয়েরা, আপনারা ইহাকে দেখিতেছেন, ইহার বিষয়ে যিহূদীদের দল সমেত সকল লোক যিরূশালেমে এবং এই স্থানে আমার নিকটে আবেদন করিয়া উচ্চৈঃস্বরে বলিয়াছিল, উহার আর বাঁচিয়া থাকা উচিত নয়। 25 কিন্তু আমি দেখিতে পাইলাম, এ প্রাণদণ্ডের যোগ্য কোন কর্ম্ম করে নাই, তথাপি এ ব্যক্তি আপনি সম্রাটের নিকট আপীল করাতে ইহাকে পাঠাইতে স্থির করিয়াছি। 26 আমার প্রভুর কাছে ইহার বিষয়ে লিখিতে পারি, আমার এমন নিশ্চিত কিছুই নাই; সেই জন্য আপনাদের কাছে, বিশেষতঃ হে রাজন্‌ আগ্রিপ্প, আপনার কাছে ইহাকে উপস্থিত করিলাম; যেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হইলে পর লিখিবার কিছু সূত্র পাই। 27 কেননা বন্দি পাঠাইবার সময়ে তাহার বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা নির্দ্দেশ না করা আমার অসঙ্গত বোধ হয়।
Total 28 অধ্যায়গুলির, Selected অধ্যায় 25 / 28
×

Alert

×

Bengali Letters Keypad References