Bengali বাইবেল
বংশাবলি ২ total 36 অধ্যায়গুলির
বংশাবলি ২
বংশাবলি ২ অধ্যায় 26
বংশাবলি ২ অধ্যায় 26
যিহূদার রাজা উষিয় 1 পরে যিহূদার সব লোকজন সেই উষিয়কে* ঊষিয়কে অসরিয় বলেও ডাকা হত এনে রাজারূপে তাঁকে তাঁর বাবা অমৎসিয়ের স্থলাভিষিক্ত করল, যাঁর বয়স তখন ষোলো বছর।
2 রাজা অমৎসিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হওয়ার পর এই ঊষিয়ই এলৎ নগরটি আরেকবার নতুন করে গড়ে তুলেছিলেন এবং সেটি যিহূদার অধিকারের অধীনে নিয়ে এলেন।
বংশাবলি ২ অধ্যায় 26
3 উষিয় ষোলো বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে বাহান্ন বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম যিখলিয়া; তিনি জেরুশালেমে বসবাস করতেন।
4 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা ঠিক, তিনি তাই করতেন, ঠিক যেমনটি তাঁর বাবা অমৎসিয়ও করতেন,
5 যিনি তাঁকে ঈশ্বরভয়† অথবা, “দর্শন” শিক্ষা দিলেন, সেই সখরিয়ের জীবনকালে বরাবর তিনি ঈশ্বরের অন্বেষণ করে গেলেন। যতদিন তিনি সদাপ্রভুর অন্বেষণ করে গেলেন, ততদিন ঈশ্বর তাঁকে সাফল্যও দিলেন।
বংশাবলি ২ অধ্যায় 26
6 তিনি ফিলিস্তিনীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করলেন এবং গাতের, যবনির ও অস্দোদের প্রাচীর ভেঙে দিলেন। পরে তিনি অস্দোদের কাছে ও ফিলিস্তিনীদের মাঝখানে অন্যান্য স্থানে নতুন করে কয়েকটি নগর গড়ে তুলেছিলেন।
7 ফিলিস্তিনীদের বিরুদ্ধে এবং যারা গূর-বায়ালে বসবাস করত, সেই আরবীয়দের বিরুদ্ধে ও মিয়ূনীয়দের বিরুদ্ধেও ঈশ্বর তাঁকে সাহায্য করলেন।
8 অম্মোনীয়েরা উষিয়ের কাছে রাজকর নিয়ে এসেছিল, এবং তাঁর খ্যাতি একেবারে মিশরের সীমানা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল, কারণ তিনি খুব শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন।
বংশাবলি ২ অধ্যায় 26
9 জেরুশালেমে কোণার দ্বারে, উপত্যকার দ্বারে ও প্রাচীরের কোণে উষিয় কয়েকটি মিনার তৈরি করলেন, এবং সেগুলি মজবুতও করে তুলেছিলেন।
10 মরুপ্রান্তরেও তিনি কয়েকটি মিনার তৈরি করলেন ও বেশ কয়েকটি কুয়ো খুঁড়েছিলেন, কারণ পাহাড়ের পাদদেশে ও সমভূমিতে তাঁর বেশ কিছু পশুপাল ছিল। পাহাড়ে ও উর্বর জমিতে অবস্থিত তাঁর ক্ষেতখামারে ও দ্রাক্ষাকুঞ্জে তিনি লোকজনকে কাজে লাগালেন, কারণ মাটির প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসা ছিল।
বংশাবলি ২ অধ্যায় 26
11 উষিয়ের কাছে ভালো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এমন এক সৈন্যদল ছিল, যারা রাজকীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন, সেই হনানীয়ের পরিচালনায়, তাদের সংখ্যানুসারে দলে দলে বিভক্ত হয়ে সচিব যিয়ূয়েলের ও কর্মকর্তা মাসেয়ের নেতৃত্বে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল।
12 যোদ্ধাদের উপর মোট 2,600 জন কুলপতি নিযুক্ত ছিলেন।
13 তাদের অধীনে 3,07,500 জন সৈন্যের সমন্বয়ে গঠিত এমন এক সৈন্যদল ছিল, যারা যুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, ও রাজার শত্রুদের বিরুদ্ধে তাঁকে সাহায্য করার পক্ষে যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল।
বংশাবলি ২ অধ্যায় 26
14 উষিয় সমগ্র সৈন্যদলের জন্য ঢাল, বর্শা, শিরস্ত্রাণ, বর্ম, ধনুক ও পাথর ছোঁড়ার গুলতির জোগান দিলেন।
15 জেরুশালেমে তিনি এমন সব যন্ত্রপাতি তৈরি করিয়েছিলেন, যেন আবিষ্কৃত সেই যন্ত্রপাতিগুলি মিনারে ও প্রাচীরের কোনায় রেখে সৈনিকরা প্রাচীর থেকেই তির ছুঁড়তে ও বড়ো বড়ো পাথরের গোলা নিক্ষেপ করতে পারে। দূর দূর পর্যন্ত তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল, কারণ যতদিন না তিনি শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন, ততদিন তিনি প্রচুর সাহায্য পেয়েছিলেন।
বংশাবলি ২ অধ্যায় 26
16 কিন্তু শক্তিশালী হয়ে ওঠার পর উষিয়ের অহংকারই তাঁর পতনের কারণ হয়ে উঠেছিল। তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি তিনি অবিশ্বস্ত হলেন, এবং ধূপবেদিতে ধূপ পোড়ানোর জন্য তিনি সদাপ্রভুর মন্দিরে প্রবেশ করলেন।
17 যাজক অসরিয় ও সদাপ্রভুর আরও আশি জন সাহসী যাজক তাঁকে অনুসরণ করলেন।
18 তারা রাজা ঊষিয়কে বাধা দিয়ে বললেন, “হে উষিয়, সদাপ্রভুর কাছে ধূপ পোড়ানোর আপনার কোনও অধিকার নেই। এই অধিকার আছে শুধু সেই যাজকদের, যারা হারোণের বংশধর ও তাদেরই আলাদা করে উৎসর্গ করা হয়েছে, যেন তারা ধূপ পোড়াতে পারে। পবিত্র এই পীঠস্থান থেকে আপনি বের হয়ে যান, কারণ আপনি অবিশ্বস্ত হয়েছেন; এবং সদাপ্রভু ঈশ্বর আপনাকে সম্মানিত করবেন না।”
বংশাবলি ২ অধ্যায় 26
19 উষিয় রেগে গেলেন, তখন হাতে একটি ধুনুচি নিয়ে তিনি ধূপ পোড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সদাপ্রভুর মন্দিরের মধ্যে, ধূপবেদির সামনে যাজকদের উপস্থিতিতে তিনি যখন তাদের প্রতি ক্রোধ প্রকাশ করছিলেন, তখনই তাঁর কপালে কুষ্ঠরোগ‡ হিব্রু ভাষায় কুষ্ঠরোগ শব্দটি অন্যান্য চর্মরোগের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হত; 20, 21 ও 23 পদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য দেখা দিয়েছিল।
বংশাবলি ২ অধ্যায় 26
20 প্রধান যাজক অসরিয় ও অন্যান্য সব যাজক যখন তাঁর দিকে তাকিয়েছিলেন, তখন তারা দেখতে পেয়েছিলেন যে তাঁর কপালে কুষ্ঠরোগ দেখা দিয়েছে, তাই তাড়াতাড়ি করে তারা তাঁকে বাইরে নিয়ে গেলেন। বাস্তবিক, তিনি নিজেও বাইরে বেরিয়ে যেতে উদগ্রীব হলেন, কারণ সদাপ্রভুই তাঁকে যন্ত্রণায় কাতর করে তুলেছিলেন।
21
22 আমৃত্যু, রাজা উষিয় কুষ্ঠরোগী হয়েই ছিলেন। কুষ্ঠরোগাক্রান্ত হয়ে তিনি আলাদা একটি বাড়িতে§ অথবা, এমন একটি বাড়ি, যেখানে তাঁর উপর কোনও দায়িত্বভার ছিল না বসবাস করলেন, এবং সদাপ্রভুর মন্দিরে তাঁর প্রবেশ করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হল। তাঁর ছেলে যোথম প্রাসাদের দায়িত্ব নিয়েছিলেন এবং দেশের প্রজাদের শাসন করলেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উষিয়ের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা আমোষের ছেলে ভাববাদী যিশাইয় লিখে রেখে গিয়েছেন।
বংশাবলি ২ অধ্যায় 26
23 উষিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন এবং তাঁকে তাদেরই কাছাকাছি এমন এক কবরস্থানে কবর দেওয়া হল, যেটি রাজাদেরই ছিল, কারণ প্রজারা বলল, “তাঁর কুষ্ঠরোগ হয়েছিল।” তাঁর ছেলে যোথম রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন।