Bengali বাইবেল

যোহন total 21 অধ্যায়গুলির

যোহন

যোহন অধ্যায় 11
যোহন অধ্যায় 11

1 {মৃত লাসারকে জীবন দেন। } একজন যাঁর নাম লাসার তিনি অসুস্থ ছিলেন, তিনি মরিয়ম ও তাঁর বোন মার্থা বৈথনিয়া গ্রামের লোক ছিলেন।

2 ইনি হলেন সেই লাসারের বোন মরিয়ম, যিনি প্রভুকে সুগন্ধি তেল মাখিয়ে দেন এবং নিজের মাথার চুল দিয়ে তাঁর পা মুছে দেন; তাঁরই ভাই লাসার অসুস্থ ছিলেন।

3 বোনেরা তাঁকে বলে পাঠালেন, প্রভু, দেখুন আপনি যাকে ভালবাসেন সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

যোহন অধ্যায় 11

4 যখন যীশু এই কথা শুনলেন, তিনি বললেন, এই অসুস্থতা মৃত্যুর জন্য হয়নি কিন্তু ঈশ্বরের মহিমার জন্য হয়েছে, সুতরাং যেন ঈশ্বরের পুত্র এর দ্বারা মহিমান্বিত হন।

5 যীশু মার্থাকে ও তাঁর বোনকে এবং লাসারকে ভালবাসতেন।

6 যখন তিনি শুনলেন যে লাসার অসুস্থ হয়েছে, তখন যে জায়গায় ছিলেন যীশু সেই জায়গায় আরও দুই দিন থাকলেন।

যোহন অধ্যায় 11

7 এই সবের পরে তিনি শিষ্যদের বললেন, “চল আমরা আবার যিহূদিয়াতে যাই।”

8 শিষ্যেরা তাঁকে বললেন, রব্বি, এই এক্ষণে ইহূদিরা আপনাকে পাথর মারবার চেষ্ঠা করছিল, আর আপনি আবার সেখানে ফিরে যাচ্ছেন?

9 যীশু উত্তর দিলেন, এক দিনের কি বারো ঘন্টা আলো নেই? যদি কেউ দিনের র আলোতে চলে সে হোঁচট খাবে না কারণ সে এই পৃথিবীর আলো দেখে।

যোহন অধ্যায় 11

10 কিন্তু যদি সে রাতে চলে, সে হোঁচট খায় কারণ আলো তার মধ্যে নেই।

11 যীশু এই সব কথা বললেন এবং এই সব কিছুর পরে তিনি তাঁদেরকে বললেন, আমাদের বন্ধু লাসার ঘুমিয়ে পড়েছে, কিন্তু আমি যাচ্ছি যেন তাকে ঘুম থেকে জাগাতে পারি।

12 তখন শিষ্যেরা তাঁকে বললেন, প্রভু, সে যদি ঘুমিয়ে থাকে তবে সে সুস্থ হবে।

যোহন অধ্যায় 11

13 যীশু তাঁর মৃত্যুর সম্বন্ধে বলেছিলেন কিন্তু তাঁরা মনে করলেন যে, তিনি ঘুমিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন সেই কথা বলছেন।

14 তখন যীশু স্পষ্টভাবে তাঁদেরকে বললেন লাসার মরে গেছে।

15 আর আমি তোমাদের জন্য আনন্দ করছি যে, আমি সেখানে ছিলাম না যেন তোমরা বিশ্বাস কর। এখন চল আমরা তার কাছে যাই।

যোহন অধ্যায় 11

16 থোমা, যাকে দিদুমঃ *যমজ বলে, তিনি সহ শিষ্যদের বললেন চল, আমরাও যাই যেন যীশুর সঙ্গে মরতে পারি।

17 {যীশু লাসারের বোনদের সান্ত্বনা দিলেন। } যীশু যখন আসলেন তিনি শুনতে পেলেন যে, লাসার তখন চার দিন হয়ে গেছে কবরে আছেন।

18 বৈথনিয়া যিরূশালেমের কাছে প্রায় তিন কিলোমিটার দূর;

যোহন অধ্যায় 11

19 ইহূদিদের মধ্য থেকে অনেকে মার্থা ও মরিয়মের কাছে এসেছিল তাঁদের ভাইয়ের জন্য সান্ত্বনা দিতে।

20 যখন মার্থা শুনল যে, যীশু এসেছেন তিনি গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করলেন, কিন্তু মরিয়ম তখনও ঘরে বসে ছিলেন।

21 মার্থা তখন যীশুকে বললেন, প্রভু, আপনি যদি এখানে থাকতেন আমার ভাই হয়ত মরত না।

22 তবে এখনও আমি জানি যে, যা কিছু আপনি ঈশ্বরের কাছে চাইবেন, ঈশ্বর তা আপনাকে দেবেন।

যোহন অধ্যায় 11

23 যীশু তাঁকে বললেন, তোমার ভাই আবার উঠবে।

24 মার্থা তাঁকে বললেন, আমি জানি যে শেষের দিনে পুনরুত্থানে সে আবার উঠবে।

25 যীশু তাঁকে বললেন, আমিই পুনরুত্থান ও জীবন; যে কেউ আমাকে বিশ্বাস করে, সে মরলেও জীবিত থাকবে।

26 এবং যে কেউ বেঁচে আছে এবং আমাতে বিশ্বাস করে সে কখনও মরবে না। এটা কি বিশ্বাস কর?

যোহন অধ্যায় 11

27 তিনি তাঁকে বললেন, হ্যাঁ প্রভু, আমি বিশ্বাস করি যে আপনিই সেই খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র যিনি এই পৃথিবীতে আসছেন।

28 এই সব কথা বলে তিনি চলে গেলেন এবং তার নিজের বোন মরিয়মকে গোপনে ডাকলেন। তিনি বললেন গুরু এখানে আছেন এবং তোমাকে ডাকছেন।

29 যখন মেরি এই কথা শুনলেন তিনি শীঘ্র উঠে যীশুর কাছে গেলেন।

30 যীশু তখনও গ্রামের মধ্যে আসেননি কিন্তু যেখানে মার্থা তার সঙ্গে দেখা করেছিলেন সেই জায়গাতেই ছিলেন।

যোহন অধ্যায় 11

31 তখন যে ইহূদিরা মরিয়মের সঙ্গে ঘরের মধ্যে ছিল ও তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছিল, তারা যখন তাঁকে তাড়াতাড়ি উঠে বাইরে যেতে দেখল তখন তারাও তাঁর পিছন পিছন গেল এবং মনে করল, তিনি কবরের কাছে কাঁদতে যাচ্ছেন।

32 তখন মরিয়ম যেখানে যীশু ছিলেন সেখানে যখন আসলেন, তখন তাঁকে দেখে তাঁর পায়ে পড়ে বললেন, প্রভু, আপনি যদি এখানে থাকতেন, আমার ভাই মরত না।

33 যীশু যখন দেখলেন তিনি কাঁদছেন, ও তাঁর সঙ্গে যে ইহূদিরা এসেছিল তারাও কাঁদছে তখন আত্মায় খুব অস্থির হয়ে উঠলেন ও উদ্বিগ্ন হলেন,

যোহন অধ্যায় 11

34 তিনি বললেন “তোমরা তাকে কোথায় রেখেছ?” তাঁরা তাঁকে বললেন, প্রভু এসে দেখুন।

35 যীশু কাঁদলেন।

36 তখন ইহূদিরা বলল, দেখ, তিনি লাসারকে কতটা ভালবাসতেন।

37 কিন্তু তাদের মধ্যে থেকে কেউ বলল, এই মানুষটি অন্ধের চক্ষু খুলে দিয়েছেন, ইনি কি লাসারের মৃত্যুও রক্ষা করতে পারতেন না?

যোহন অধ্যায় 11

38 {যীশু লাসারকে মৃত থেকে ওঠালেন। } তাতে যীশু আবার মনে মনে অস্থির হয়ে কবরের কাছে গেলেন। সেই কবর একটা গুহা ছিল এবং তার উপরে একটা পাথর দেওয়া ছিল।

39 যীশু বললেন, “তোমরা পাথরটা সরিয়ে ফেল।” যে মারা গেছে লাসার তার বোন মার্থা যীশুকে বললেন, প্রভু, এতক্ষণ ওই দেহ পচে দুর্গন্ধ হয়ে গেছে কারণ সে মারা গেছে আজ চার দিন।

যোহন অধ্যায় 11

40 যীশু তাঁকে বললেন, “আমি কি তোমাকে বলিনি যে, যদি তুমি বিশ্বাস কর তবে ঈশ্বরের মহিমা দেখতে পাবে?” সুতরাং তারা পাথরটা সরিয়ে ফেলল।

41 পরে যীশু আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, পিতঃ, তোমার ধন্যবাদ দিই যে, তুমি আমার কথা শুনেছ।

42 আমি জানতাম তুমি সবদিন আমার কথা শোন কিন্তু এই যে সব মানুষের দল আমার চারপাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে এদের জন্য এই কথা বললাম, যেন তারা বিশ্বাস করে যে তুমিই আমাকে পাঠিয়েছ।

যোহন অধ্যায় 11

43 এই সব বলার পরে তিনি চিত্কার করে ডেকে বললেন লাসার, বাইরে এস।

44 তাতে সেই মৃত মানুষটি বেরিয়ে আসলেন; তাঁর পা ও হাত কবর কাপড়ে জড়ানো ছিল এবং মুখ গামছা দিয়ে বাঁধা ছিল। যীশু তাদেরকে বললেন, “তাকে খুলে দাও এবং যেতে দাও।”

45 {যীশুকে হত্যার ষড়যন্ত্র। } তখন ইহূদিদের অনেকে যারা মরিয়মের কাছে এসেছিল এবং দেখেছিল যীশু যা করেছিলেন, তারা তাঁতে বিশ্বাস করল।

যোহন অধ্যায় 11

46 কিন্তু তাদের কয়েক জন ফরীশীদের কাছে গেল এবং যীশু যা কিছু করেছিলেন তাদেরকে বলল।

47 তখন প্রধান যাজকগণ ও ফরীশীরা মহাসভা করে বলতে লাগল আমরা এখন কি করব? এ মানুষটি ত অনেক আশ্চর্য্য কাজ করছে।

48 আমরা যদি তাঁকে এই ভাবে চলতে দিই, তবে সবাই তাঁকেই বিশ্বাস করবে; আর রোমীয়েরা এসে আমাদের দেশ এবং আমাদের জাতি উভয়ই কেড়ে নেবে।

49 কিন্তু তাদের মধ্যে একজন যার নাম কায়াফা, সেই বছরের মহাযাজক ছিলেন তাদেরকে বললেন, তোমরা কিছুই জানো না।

যোহন অধ্যায় 11

50 আর ভেবেও দেখ না যে, তোমাদের জন্য এটি ভাল, আমাদের সব জাতি নষ্ট হওয়ার থেকে বরং সব মানুষের জন্য একজন মরা ভালো।

51 এই সব কথা যে তিনি নিজের থেকে বললেন, তা নয়, কিন্তু সেই বৎসরের মহাযাজক হওয়াতে তিনি এই ভবিষ্যৎ বাণী বললেন যে, আমাদের জাতির জন্য যীশু মরবেন।

52 আর শুধুমাত্র সেই জাতির জন্য নয় কিন্তু ঈশ্বরের যে সব সন্তানরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল, সেই সবাইকে যেন জড়ো করে এক করেন।

যোহন অধ্যায় 11

53 সুতরাং সেই দিন থেকে তারা তাঁকে মেরে ফেলার জন্য ষড়যন্ত্র করতে লাগলো।

54 তখন যীশু আর খোলাখুলি ভাবে ইহূদিদের মধ্যে চলাফেরা করলেন না, কিন্তু সেখান থেকে দূরে মরূপ্রান্তের কাছে এক নিরাপদ জায়গা ইফ্রয়িম নামক শহরে গেলেন, আর সেখানে শিষ্যদের সঙ্গে থাকলেন।

55 {যীশু উদ্ধার পর্ব্বে যিরূশালেমে যান ও উপদেশ দেন। } তখন ইহূদিদের নিস্তারপর্ব্ব কাছে এসেছিল এবং অনেক মানুষ নিজেদেরকে শুচি করবার জন্য উদ্ধারপর্ব্বের আগে দেশ ও গ্রাম থেকে যিরূশালেমে গেল।

যোহন অধ্যায় 11

56 তারা যীশুর খোঁজ করতে লাগল এবং মন্দিরে দাঁড়িয়ে একে অপরকে বলতে লাগলো, তোমরা কি মনে কর? তিনি কি এই পর্ব্বে আসবেন না?

57 আর প্রধান যাজকেরা ও ফরীশীরা আদেশ দিয়েছিল যে, যদি কেউ জানে যীশু কোথায় আছেন, সে যেন খবর দেয় যেন তারা তাঁকে ধরতে পারে।