Bengali বাইবেল
বিচারকচরিত total 21 অধ্যায়গুলির
বিচারকচরিত
বিচারকচরিত অধ্যায় 3
বিচারকচরিত অধ্যায় 3
1 ইস্রায়েলের মধ্যে যাহারা কনানের যুদ্ধ সকল জ্ঞাত ছিল না, সেই লোকদের পরীক্ষা লইবার নিমিত্তে,
2 এবং ইস্রায়েল-সন্তানগণের পুরুষপরম্পরাকে শিক্ষা দানার্থে, অর্থাৎ যাহারা অগ্রে যুদ্ধ জানিত না, তাহাদিগকে তাহা শিখাইবার নিমিত্তে সদাপ্রভু এই সকল জাতিকে অবশিষ্ট রাখিয়াছিলেন;
3 পলেষ্টীয়দের পাঁচ ভূপাল, এবং বাল্-হর্ম্মোণ পর্ব্বত অবধি হমাতে প্রবেশের পথ পর্য্যন্ত লিবানোন পর্ব্বত-নিবাসী সমস্ত কনানীয়, সীদোনীয় ও হিব্বীয়গণ।
বিচারকচরিত অধ্যায় 3
4 ইহারা ইস্রায়েলের পরীক্ষার্থে, অর্থাৎ সদাপ্রভু তাহাদের পিতৃপুরুষদিগকে মোশি দ্বারা যে সকল আজ্ঞা দিয়াছিলেন, সেই সকলেতে তাহারা কর্ণপাত করিবে কি না, তাহা যেন জানা যায়, এই জন্য অবশিষ্ট রহিল।
5 ফলে ইস্রায়েল-সন্তানগণ কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়গণের মধ্যে বসতি করিল;
6 আর তাহারা তাহাদের কন্যাগণকে বিবাহ করিত, তাহাদের পুত্রগণের সহিত আপন আপন কন্যাদের বিবাহ দিত ও তাহাদের দেবগণের সেবা করিত।
বিচারকচরিত অধ্যায় 3
7 আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যাহা মন্দ, তাহাই করিল, ও আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভুলিয়া গিয়া বাল দেবগণের ও আশেরা দেবীদের সেবা করিল।
8 অতএব ইস্রায়েলের প্রতি সদাপ্রভুর ক্রোধ প্রজ্বলিত হইল, আর তিনি অরাম-নহরয়িমের রাজা কূশন-রিশিয়াথয়িমের হস্তে তাহাদিগকে বিক্রয় করিলেন, আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ আট বৎসর পর্য্যন্ত কূশন-রিশিয়াথয়িমের দাসত্ব করিল।
9 পরে ইস্রায়েল-সন্তানগণ সদাপ্রভুর উদ্দেশে ক্রন্দন করিল। তাহাতে সদাপ্রভু ইস্রায়েল-সন্তানগণের জন্য এক নিস্তারকর্ত্তাকে-কালেবের কনিষ্ঠ ভ্রাতা কনসের পুত্র অৎনীয়েলকে-উৎপন্ন করিলেন; তিনি তাহাদিগকে নিস্তার করিলেন।
বিচারকচরিত অধ্যায় 3
10 সদাপ্রভুর আত্মা তাঁহার উপরে আসিলেন, আর তিনি ইস্রায়েলের বিচার করিতে লাগিলেন; তিনি যুদ্ধার্থে বাহির হইলেন, আর সদাপ্রভু অরাম-রাজ কূশন-রিশিয়াথয়িমকে তাঁহার হস্তে সমর্পণ করিলেন; আর কূশন-রিশিয়াথয়িমের বিরুদ্ধে তাঁহার হস্ত প্রবল থাকিল।
11 এইরূপে চল্লিশ বৎসর পর্য্যন্ত দেশ নিষ্কন্টকে রহিল; পরে কনসের পুত্র অৎনীয়েলের মৃত্যু হইল।
12 পরে ইস্রায়েল-সন্তানগণ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যাহা মন্দ, পুনর্ব্বার তাহা করিল; অতএব সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যাহা মন্দ, তাহা করায় সদাপ্রভু ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে মোয়াব-রাজ ইগ্লোনকে সবল করিলেন।
বিচারকচরিত অধ্যায় 3
13 রাজা অম্মোন-সন্তানগণকে ও অমালেককে আপনার নিকটে একত্র করিলেন, এবং যাত্রা করিয়া ইস্রায়েলকে আঘাত করিলেন ও খর্জ্জুরপুর অধিকার করিলেন।
14 আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ আঠার বৎসর পর্য্যন্ত মোয়াব-রাজ ইগ্লোনের দাসত্ব করিল।
15 পরে ইস্রায়েল-সন্তানগণ সদাপ্রভুর কাছে ক্রন্দন করিল; আর সদাপ্রভু তাহাদের জন্য এক নিস্তারকর্ত্তাকে, বিন্যামীন বংশীয় গেরার পুত্র এহূদকে, উৎপন্ন করিলেন; তিনি নেটা ছিলেন। ইস্রায়েল-সন্তানগণ তাঁহার দ্বারা মোয়াব-রাজ ইগ্লোনের নিকটে উপঢৌকন প্রেরণ করিল।
বিচারকচরিত অধ্যায় 3
16 এহূদ আপনার জন্য এক হস্ত দীর্ঘ একখানি দ্বিধার খড়গ নির্ম্মাণ করাইয়াছিলেন, তাহা আপন দক্ষিণ ঊরুদেশে বস্ত্রের ভিতরে বাঁধিয়া রাখিলেন।
17 পরে মোয়াব-রাজ ইগ্লোনের নিকটে উপঢৌকন লইয়া গেলেন; ঐ ইগ্লোন অতি স্থূলকায় লোক ছিলেন।
18 পরে উপঢৌকন দেওয়া হইয়া গেলে তিনি ঐ উপঢৌকনবাহক লোকদিগকে বিদায় করিলেন।
19 কিন্তু আপনি গিল্গলস্থ প্রস্তরাকর হইতে ফিরিয়া আসিয়া কহিলেন, হে রাজন্, আপনার নিকটে আমার একটী গোপনীয় কথা আছে। রাজা বলিলেন, চুপ চুপ; তখন যাহারা নিকটে দাঁড়াইয়াছিল, তাহারা সকলে তাঁহার নিকট হইতে বাহিরে গেল।
বিচারকচরিত অধ্যায় 3
20 আর এহূদ তাঁহার নিকটে আসিলেন; তখন রাজা একাকী আপনার উপর তালার শীতল বাটিকাতে বসিয়াছিলেন; এহূদ কহিলেন, আপনার কাছে ঈশ্বরের একটী বাক্য আমার বক্তব্য আছে; তাহাতে তিনি আপন আসন হইতে উঠিলেন।
21 তখন এহূদ আপন বাম হস্ত বাড়াইয়া দক্ষিণ ঊরু হইতে ঐ খড়গ লইয়া তাঁহার উদর বিদ্ধ করিলেন,
22 আর খড়েগর সহিত বাঁটও উদরে প্রবিষ্ট হইল, এবং খড়গ মেদে রুদ্ধ হইল, কেননা তিনি উদর হইতে তাহা বাহির করিলেন না; আর তাহা পশ্চাৎ-দেশে বাহির হইল।
বিচারকচরিত অধ্যায় 3
23 পরে এহূদ বাহির হইয়া বারাণ্ডায় আসিলেন; এবং পশ্চাতে শীতল বাটিকার কবাট বন্ধ করিয়া কুলুপ লাগাইয়া দিলেন।
24 তিনি বাহির হইয়া গেলে রাজার দাসগণ উপস্থিত হইল, ও চাহিয়া দেখিল, আর দেখ, ঐ শীতল বাটিকার কবাট বন্ধ। তাহারা বলিল, রাজা অবশ্য শীতল বাটিকার কুঠরীতে পা ঢাকিতেছেন।
25 পরে তাহারা লজ্জিত হওয়া পর্য্যন্ত বিলম্ব করিল; আর দেখ, তিনি শীতল বাটিকার কবাট খুলিলেন না; অতএব তাহারা চাবি লইয়া দ্বার খুলিল, আর দেখ, তাহাদের প্রভু মরিয়া ভূতলে পতিত রহিয়াছেন।
বিচারকচরিত অধ্যায় 3
26 তাহারা যখন বিলম্ব করিতেছিল, তখন এহূদ পলাইয়া সেই প্রস্তরাকর পশ্চাতে ফেলিয়া সিয়ীরাতে উপস্থিত হইয়াছিলেন।
27 তিনি উপস্থিত হইয়া পর্ব্বতময় ইফ্রয়িম প্রদেশে তূরী বাজাইলেন; আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ তাঁহার সহিত পর্ব্বতময় দেশ হইতে নামিয়া গেল, তিনি তাহাদের অগ্রগামী হইয়া চলিলেন।
28 তিনি তাহাদিগকে কহিলেন, আমার পশ্চাৎ পশ্চাৎ আইস, কেননা সদাপ্রভু তোমাদের শত্রু মোয়াবীয়দিগকে তোমাদের হস্তে সমর্পণ করিয়াছেন। তখন তাহারা তাঁহার পশ্চাতে পশ্চাতে নামিয়া মোয়াবের বিরুদ্ধে যর্দ্দনের পারঘাটা সকল হস্তগত করিল, এক প্রাণীকেও পার হইতে দিল না।
বিচারকচরিত অধ্যায় 3
29 আর ঐ সময়ে তাহারা মোয়াবের অনুমান দশ সহস্র লোককে আঘাত করিল; তাহারা সকলে বৃহৎকায় ও বলবান বীর, কিন্তু তাহাদের কেহ নিস্তার পাইল না।
30 এই প্রকারে মোয়াব সেই দিন ইস্রায়েলের হস্তের বশীভূত হইল। আর আশী বৎসর দেশ নিষ্কন্টকে থাকিল।
31 তাঁহার পরে অনাতের পুত্র শম্গর গোচারণের পাঁচনী দ্বারা পলেষ্টীয়দের ছয় শত লোককে আঘাত করিলেন; ইনিও ইস্রায়েলকে নিস্তার করিলেন।