Bengali বাইবেল
দ্বিতীয় বিবরণ total 34 অধ্যায়গুলির
দ্বিতীয় বিবরণ
দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 12
দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 12
1 তোমার পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ অধিকারার্থে দিয়াছেন, সেই দেশে এই সকল বিধি ও শাসন, যত দিন পৃথিবীতে জীবিত থাকিবে, যত্নপূর্ব্বক পালন করিতে হইবে।
2 তোমরা যে যে জাতিকে অধিকারচ্যুত করিবে, তাহারা উচ্চ পর্ব্বতের উপরে, পাহাড়ের উপরে ও হরিৎপর্ণ প্রত্যেক বৃক্ষের তলে যে যে স্থানে আপন আপন দেবতাদের সেবা করিয়াছে, সেই সকল স্থান তোমরা একেবারে বিনষ্ট করিবে।
দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 12
3 তোমরা তাহাদের যজ্ঞবেদি সকল উৎপাটন করিবে, তাহাদের স্তম্ভ সকল ভগ্ন করিবে, তাহাদের আশেরা-মূর্ত্তি সকল অগ্নিতে পোড়াইয়া দিবে, তাহাদের ক্ষোদিত দেবপ্রতিমা সকল ছেদন করিবে, এবং সেই স্থান হইতে তাহাদের নাম লোপ করিবে।
4 তোমরা আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি তদ্রূপ করিবে না।
5 কিন্তু তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আপন নাম স্থাপনার্থে তোমাদের সমস্ত বংশের মধ্যে যে স্থান মনোনীত করিবেন, তাঁহার সেই নিবাসস্থান তোমরা অন্বেষণ করিবে, ও সেই স্থানে উপস্থিত হইবে।
দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 12
6 আর আপন আপন হোম, বলি, দশমাংশ, হস্তের উত্তোলনীয় উপহার, মানতের দ্রব্য, স্ব-ইচ্ছায় দত্ত নৈবেদ্য ও গোমেষাদি পালের প্রথমজাতদিগকে সেই স্থানে আনয়ন করিবে;
7 আর সেই স্থানে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সম্মুখে ভোজন করিবে; এবং তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু হইতে প্রাপ্ত আশীর্ব্বাদানুসারে যে কিছুতে হস্তার্পণ করিবে, তাহাতেই সপরিবারে আনন্দ করিবে।
8 এই স্থানে আমরা এখন প্রত্যেকে আপন আপন দৃষ্টিতে যাহা ন্যায্য, তাহা করিতেছি, তোমরা তদ্রূপ করিবে না;
দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 12
9 কেননা তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে বিশ্রামস্থান ও অধিকার দিতেছেন, তথায় তোমরা এখনও উপস্থিত হও নাই।
10 কিন্তু যখন তোমরা যর্দ্দন পার হইয়া আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর দত্ত অধিকৃত দেশে বাস করিবে, এবং চারিদিকের সমস্ত শত্রু হইতে তিনি বিশ্রাম দিলে যখন তোমরা নির্ভয়ে বাস করিবে;
11 তৎকালে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আপন নামের বাসার্থে যে স্থান মনোনীত করিবেন, সেই স্থানে তোমরা আমার আদিষ্ট সমস্ত দ্রব্য, আপন আপন হোম, বলি, দশমাংশ, হস্তের উত্তোলনীয় উপহার ও সদাপ্রভুর উদ্দেশে প্রতিশ্রুত মানতের উৎকৃষ্ট দ্রব্য সকল আনিবে।
দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 12
12 আর তোমরা, তোমাদের পুত্রকন্যাগণ ও তোমাদের দাসদাসীগণ, আর তোমাদের নগরদ্বারের মধ্যবর্ত্তী লেবীয়, যাহার অংশ ও অধিকার তোমাদের মধ্যে নাই, তোমরা সকলে আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সম্মুখে আনন্দ করিবে।
13 সাবধান, যে কোন স্থান দেখ, সেই স্থানেই তোমার হোমবলি উৎসর্গ করিও না;
14 কিন্তু তোমার কোন এক বংশের মধ্যে যে স্থান সদাপ্রভু মনোনীত করিবেন, সেই স্থানেই তোমার হোমবলি উৎসর্গ করিবে ও সেই স্থানে আমার আদিষ্ট সকল কর্ম্ম করিবে।
দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 12
15 তথাপি যখন তোমার প্রাণের অভিলাষ হইবে, তখন তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর দত্ত আশীর্ব্বাদানুসারে আপনার সমস্ত নগর-দ্বারের ভিতরে পশু বধ করিয়া মাংস ভোজন করিতে পারিবে; অশুচি কি শুচি লোক সকলেই কৃষ্ণসারের ও হরিণের মাংসের মত তাহা ভোজন করিতে পারিবে।
16 কেবল তোমরা রক্ত ভোজন করিবে না; তুমি তাহা জলের ন্যায় ভূমিতে ঢালিয়া ফেলিবে।
17 তোমার শস্যের, দ্রাক্ষারসের ও তৈলের দশমাংশ, গোমেষাদির প্রথমজাত, এবং যাহা মানত করিবে, সেই মানত-দ্রব্য, স্ব-ইচ্ছায় দত্ত নৈবেদ্য ও হস্তের উত্তোলনীয় উপহার, এই সকল তুমি আপন নগর-দ্বারের মধ্যে ভোজন করিতে পারিবে না।
দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 12
18 কিন্তু তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যে স্থান মনোনীত করিবেন, সেই স্থানে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সম্মুখে তুমি, তোমার পুত্রকন্যা, তোমার দাসদাসী ও তোমার নগর-দ্বারের মধ্যবর্ত্তী লেবীয়, সকলে তাহা ভোজন করিবে, এবং তুমি যে কিছুতে হস্তার্পণ করিবে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সম্মুখে তাহাতেই আনন্দ করিবে।
19 সাবধান, তোমার দেশে যতকাল জীবিত থাক, লেবীয়কে ত্যাগ করিও না।
দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 12
20 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যেমন অঙ্গীকার করিয়াছেন, তদনুসারে যখন তোমার সীমা বিস্তার করিবেন, এবং মাংস ভক্ষণে তোমার প্রাণের অভিলাষ হইলে তুমি বলিবে, মাংস ভক্ষণ করিব, তখন তুমি প্রাণের অভিলাষানুসারে মাংস ভক্ষণ করিবে।
21 আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু আপন নাম স্থাপনার্থে যে স্থান মনোনীত করিবেন, তাহা যদি তোমা হইতে বহু দূর হয়, তবে আমি যেমন বলিয়াছি, তদনুসারে তুমি সদাপ্রভুর দত্ত গোমেষাদি পাল হইতে পশু লইয়া বধ করিবে, ও আপন প্রাণের অভিলাষানুসারে নগর-দ্বারের ভিতরে ভোজন করিতে পারিবে।
দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 12
22 যেমন কৃষ্ণসার ও হরিণ ভক্ষণ করা যায়, তেমনি তাহা ভক্ষণ করিবে; অশুচি কি শুচি লোক, সকলেই তাহা ভক্ষণ করিবে।
23 কেবল রক্তভোজন হইতে অতি সাবধান থাকিও, কেননা রক্তই প্রাণ; তুমি মাংসের সহিত প্রাণ ভোজন করিবে না।
24 তুমি তাহা ভোজন করিবে না, জলের ন্যায় ভূমিতে ঢালিয়া ফেলিবে।
25 তুমি তাহা ভোজন করিবে না; যেন সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যাহা ন্যায্য, তাহা করিলে তোমার মঙ্গল ও তোমার ভাবী সন্তানদের মঙ্গল হয়।
দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 12
26 কেবল তোমার যত পবিত্র বস্তু থাকে, এবং তোমার যত মানতের বস্তু থাকে, সেই সকল লইয়া সদাপ্রভুর মনোনীত স্থানে যাইবে;
27 আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যজ্ঞবেদির উপরে তোমার হোমবলি, মাংস ও রক্ত উৎসর্গ করিবে, আর তোমার বলিসমূহের রক্ত তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদির উপরে ঢালা যাইবে, পরে তাহার মাংস ভোজন করিতে পারিবে।
28 সাবধান হইয়া আমার আদিষ্ট এই সমস্ত বাক্য মান্য করিও, যেন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর গোচরে যাহা উত্তম ও ন্যায্য, তাহা করিলে তোমার ও যুগানুক্রমে তোমার ভাবী সন্তানদের মঙ্গল হয়।
দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 12
29 তুমি যে জাতিগণকে অধিকারচ্যুত করিতে যাইতেছ, তাহাদিগকে যখন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সম্মুখ হইতে উচ্ছিন্ন করিবেন, ও তুমি তাহাদিগকে অধিকারচ্যুত করিয়া তাহাদের দেশে বাস করিবে;
30 তখন সাবধান থাকিও, পাছে তোমার সম্মুখ হইতে তাহাদের বিনাশ হইলে পর তুমি তাহাদের অনুগামী হইয়া ফাঁদে পড়; এবং পাছে তাহাদের দেবগণের অন্বেষণ করিয়া বল, এই জাতিগণ আপন আপন দেবগণের সেবা কিরূপে করে? আমিও সেইরূপ করিব।
দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 12
31 তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি তদ্রূপ করিবে না; কেননা তাহারা আপন আপন দেবগণের উদ্দেশে সদাপ্রভুর ঘৃণিত যাবতীয় কুকার্য্য করিয়া আসিয়াছে; এমন কি, তাহারা সেই দেবগণের উদ্দেশে আপন আপন পুত্রকন্যাগণকেও অগ্নিতে পোড়ায়।
32 আমি যে কোন বিষয় তোমাদিগকে আজ্ঞা করি, তোমরা তাহাই যত্নপূর্ব্বক পালন করিবে; তুমি তাহাতে আর কিছু যোগ করিবে না, এবং তাহা হইতে কিছু হ্রাস করিবে না।
দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 12