bengali বাইবেল

যোব total 42 অধ্যায়গুলির

যোব

যোব অধ্যায় 34
যোব অধ্যায় 34

1. ইলীহূ আর‍ও বলিতে লাগিলেন,

2. হে বিজ্ঞেরা, আমার কথা শুনুন; হে জ্ঞানবানেরা, আমার বাক্যে কর্ণপাত করুন।

3. কেননা রসনা যেমন ভক্ষ্যের স্বাদ লয়, তদ্রূপ কর্ণ কথার পরীক্ষা করে।

4. আইসুন, যাহা ন্যায্য তাহাই মনোনীত করি, ভাল কি, আপনাদের মধ্যে নিশ্চয় করি।

5. দেখুন, ইয়োব বলিলেন, আমি ধার্ম্মিক, কিন্তু আমার যাহা ন্যায্য, ঈশ্বর তাহা হরণ করিয়াছেন;

6. আমি ন্যায়বান হইলেও মিথ্যাবাদী গণিত, বিনা দোষে আমি দারুণ আহত হইয়াছি।

যোব অধ্যায় 34

7. ইয়োবের সদৃশ কোন্‌ ব্যক্তি আছে? তিনি জলের ন্যায় উপহাস পান করেন,

8. অধর্ম্মাচারীদের সঙ্গে চলেন, দুষ্ট লোকদের পথে গমন করেন।

9. কেননা তিনি বলিয়াছেন, মনুষ্যের কিছুই লাভ নাই, যখন সে ঈশ্বরের সহিত প্রণয় রাখে।

10. অতএব, হে বুদ্ধিমানেরা, আমার কথা শুনুন, ইহা দূরে থাকুক যে, ঈশ্বর দুষ্কার্য্য করিবেন, সর্ব্বশক্তিমান্‌ অন্যায় করিবেন।

11. কারণ তিনি মনুষ্যের কর্ম্মের ফল তাহাকে দেন, মনুষ্যের গতি অনুসারে তাহার দশা ঘটান।

যোব অধ্যায় 34

12. ঈশ্বর ত কখনও দুষ্টাচরণ করেন না, সর্ব্বশক্তিমান্‌ কভু বিচার বিপরীত করেন না।

13. পৃথিবীর কর্ত্তৃত্বভার তাঁহাকে কে দিল? সমস্ত জগৎ [তাঁহাকে] কে সমর্পণ করিল?

14. যদি তিনি আপনাতেই নিবিষ্টমনা থাকেন, আপনার আত্মা ও নিঃশ্বাস আপনার কাছে সংগ্রহ করেন,

15. তবে মর্ত্ত্যমাত্র একেবারে মরিয়া যাইবে, মনুষ্য পুনর্ব্বার ধূলিতে প্রতিগমন করিবে।

16. যদি আপনার বিবেচনা থাকে, তবে ইহা শুনুন, আমার বাক্যের রবে কর্ণপাত করুন।

17. যে ন্যায়বিদ্বেষী, সে কি শাসন করিবে? আপনি কি ধর্ম্মময় পরাক্রমীকে দোষী করিবেন?

যোব অধ্যায় 34

18. রাজাকে কি বলা যায়, তুমি পাপাধম? রাজন্যবর্গকে কি বলা যায়, তোমরা দুষ্ট?

19. কিন্তু তিনি জনাধ্যক্ষদেরও মুখাপেক্ষা করেন না, দরিদ্রের কাছে ধনবানকেও বিশিষ্ট জ্ঞান করেন না, কেননা তাহারা সকলেই তাঁহার হস্তকৃত বস্তু।

20. তাহারা হঠাৎ মরে, মধ্যরাত্রে মরে, প্রজাসমূহ বিচলিত হইয়া চলিয়া যায়, পরাক্রমী বিনা হস্তক্ষেপে অপনীত হয়।

21. কেননা মানুষের পথে তাঁহার দৃষ্টি আছে; তিনি তাহার সমস্ত পাদসঞ্চার দেখেন;

22. এমন অন্ধকার কি মৃত্যুচ্ছায়া নাই, যেখানে অধর্ম্মাচারিগণ লুকাইতে পারে।

যোব অধ্যায় 34

23. তিনি মনুষ্যের বিষয়ে দীর্ঘকাল চিন্তা করেন না, যখন সে ঈশ্বরের সম্মুখে বিচারস্থানে আইসে।

24. তিনি বিনা সন্ধানে পরাক্রান্তদিগকে খণ্ড খণ্ড করেন, তাহাদের স্থানে অন্যদিগকে স্থাপন করেন।

25. তজ্জন্য তিনি তাহাদের ক্রিয়া সকল জ্ঞাত হন, রাত্রিতে তাহাদিগকে উল্টাইয়া ফেলেন, তাহাতে তাহারা চূর্ণ হয়।

26. তিনি তাহাদিগকে দুর্জ্জন বলিয়া প্রহার করেন, সকলের দৃষ্টিগোচরেই করেন;

27. কারণ তাহারা তাঁহার অনুগমন হইতে ফিরিল, তাঁহার সমস্ত পথ অবহেলা করিল;

যোব অধ্যায় 34

28. এইরূপে দরিদ্রের ক্রন্দন তাঁহার নিকট আনাইল; আর তিনি দুঃখীদের ক্রন্দন শ্রবণ করিলেন।

29. তিনি শান্তি দিলে কে দোষ দিতে পারে? তিনি মুখ ঢাকিলে তে তাঁহার দর্শন পাইতে পারে? জাতির বা ব্যক্তির কথা হউক, একই;

30. পামর যেন রাজত্ব না করে, প্রজাগণকে ফাঁদে ফেলিতে যেন কেহ না থাকে।

31. কেহ কি ঈশ্বরকে বলিয়াছে, আমি [শাস্তি] পাইয়াছি, আর পাপ করিব না,

32. যাহা দেখিতে পাই না, তাহা আমাকে শিখাও; যদি অন্যায় করিয়া থাকি, আর করিব না?

যোব অধ্যায় 34

33. তাঁহার প্রতিফল দান কি আপনার ইচ্ছামতে হইবে যে, আপনি তাহা অগ্রাহ্য করিলেন? মনোনীত করা আপনার কর্ম্ম, আমার নয়; অতএব আপনি যাহা জানেন, বলুন।

34. বুদ্ধিমান লোকেরা আমাকে বলিবেন, জ্ঞানবানেরা আমার কথা শুনিয়া বলিবেন,

35. ইয়োব জ্ঞানশূন্য হইয়া কথা কহিতেছেন, তাঁহার কথা বুদ্ধিবিবর্জ্জিত।

36. ইয়োবের পরীক্ষা শেষ পর্য্যন্ত হইলেই ভাল, কেননা তিনি অধার্ম্মিকদের ন্যায় উত্তর করিয়াছেন।

37. বস্তুতঃ তিনি পাপে অধর্ম্ম যোগ করেন, তিনি আমাদের মধ্যে হাততালি দেন, আর তিনি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলেন।