bengali বাইবেল
রাজাবলি ১ total 22 অধ্যায়গুলির
রাজাবলি ১
রাজাবলি ১ অধ্যায় 17
রাজাবলি ১ অধ্যায় 17
1. আর গিলিয়দ-প্রবাসীদের মধ্যবর্ত্তী তিশ্বীয় এলিয় আহাবকে কহিলেন, আমি যাঁহার সাক্ষাতে দণ্ডায়মান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সেই জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্য, এই কয়েক বৎসর শিশির কি বৃষ্টি পড়িবে না; কেবল আমার কথানুসারে পড়িবে।
2. পরে তাঁহার নিকটে সদাপ্রভুর এই বাক্য উপস্থিত হইল,
3. তুমি এই স্থান হইতে প্রস্থান করিয়া পূর্ব্বদিকে যাও, এবং যর্দ্দনের সম্মুখস্থ করীৎ স্রোতের ধারে লুকাইয়া থাক।
4. সে স্থানে তুমি স্রোতের জল পান করিতে পাইবে, আর আমি কাকদিগকে তোমার খাদ্য দ্রব্য যোগাইবার আজ্ঞা দিয়াছি।
রাজাবলি ১ অধ্যায় 17
5. তখন তিনি গিয়া সদাপ্রভুর বাক্যানুসারে কর্ম্ম করিলেন, যর্দ্দনের সম্মুখস্থ করীৎ স্রোতের ধারে গিয়া অবস্থিতি করিলেন।
6. আর কাকেরা তাঁহার জন্য প্রাতঃকালে রুটী ও মাংস, এবং সন্ধ্যাকালেও রুটী ও মাংস আনিয়া দিত; আর তিনি স্রোতের জল পান করিতেন।
7. কিছু কাল পরে দেশে বৃষ্টি না হওয়াতে ঐ স্রোত শুষ্ক হইয়া গেল।
8. পরে তাঁহার নিকটে সদাপ্রভুর এই বাক্য উপস্থিত হইল,
9. তুমি উঠ, সীদোনের অন্তঃপাতী সারিফতে গিয়া সেখানে বাস কর; দেখ, আমি তথায় এক বিধবাকে তোমার খাদ্য দ্রব্য যোগাইবার আজ্ঞা দিয়াছি।
রাজাবলি ১ অধ্যায় 17
10. তখন তিনি উঠিয়া সারিফতে যাত্রা করিলেন; আর যখন সেই নগরের দ্বারে উপস্থিত হইলেন, দেখ, সেই স্থানে এক বিধবা কাষ্ঠ কুড়াইতেছে। তিনি তাহাকে ডাকিয়া কহিলেন, বিনয় করি, তুমি একটী পাত্রে করিয়া কিঞ্চিৎ জল আন, আমি পান করিব।
11. সে স্ত্রীলোকটী তাহা আনিতে যাইতেছে, ইতিমধ্যে তিনি তাহাকে ডাকিয়া কহিলেন, বিনয় করি, আমার জন্য এক খণ্ড রুটী হাতে করিয়া আনিও।
12. সে কহিল, তোমার ঈশ্বর জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্য, আমার ঘরে একটী পিষ্টকও নাই; কেবল জালায় এক মুষ্টি ময়দা ও ভাঁড়ে কিঞ্চিৎ তৈল আছে; আর দেখ, আমি খান দুই কাষ্ঠ কুড়াইতেছি, তাহা লইয়া গিয়া আমার ও আমার ছেলেটীর জন্য উহা পাক করিব; পরে আমরা তাহা খাইয়া মরিব।
রাজাবলি ১ অধ্যায় 17
13. এলিয় তাহাকে কহিলেন, ভয় করিও না; যাহা বলিলে, তাহা কর গিয়া, কিন্তু প্রথমে তাহা হইতে আমার জন্য একটী ক্ষুদ্র পিষ্টক প্রস্তুত করিয়া আন; পরে আপনার ও ছেলেটীর জন্য প্রস্তুত করিও।
14. কেননা ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই কথা কহেন, যে দিন পর্য্যন্ত সদাপ্রভু ভূতলে বৃষ্টি না দেন, সেই দিন পর্য্যন্ত তোমার ময়দার জালা শূন্য হইবে না, ও তৈলের ভাঁড় শুকাইয়া যাইবে না।
15. তাহাতে সে গিয়া এলিয়ের বাক্যানুসারে করিল; আর সে এবং এলিয়, এবং সেই স্ত্রীলোকের পরিজন অনেক দিন পর্য্যন্ত ভোজন করিল।
রাজাবলি ১ অধ্যায় 17
16. সদাপ্রভু এলিয়ের দ্বারা যে বাক্য বলিয়াছিলেন, তদনুসারে ঐ ময়দার জালা শূন্য হইল না, তৈলের ভাঁড়ও শুকাইল না।
17. এই সকল ঘটনার পরে সেই স্ত্রীলোকের, সেই গৃহস্বামিনীর, পুত্র পীড়িত হইল, এবং তাহার পীড়া এমন উৎকট হইল যে, তাহার শরীরে আর শ্বাসবায়ু রহিল না।
18. তখন স্ত্রীলোকটী এলিয়কে কহিল, হে ঈশ্বরের লোক, আপনার সহিত আমার বিষয় কি? আপনি আমার অপরাধ স্মরণ করাইতে ও আমার পুত্রকে মারিয়া ফেলিতে আমার এখানে আসিয়াছেন।
19. তিনি তাহাকে কহিলেন, তোমার পুত্রটী আমাকে দেও। পরে তিনি তাহার ক্রোড় হইতে ছেলেটীকে লইয়া উপরে আপনার থাকিবার কুঠরীতে গিয়া আপন শয্যায় শোয়াইয়া দিলেন।
রাজাবলি ১ অধ্যায় 17
20. আর তিনি সদাপ্রভুকে ডাকিয়া কহিলেন, হে সদাপ্রভু, আমার ঈশ্বর, আমি যে বিধবার বাটীতে প্রবাস করিতেছি, তুমি কি তাহার পুত্রকে মারিয়া ফেলিয়া তাহারও উপরে অমঙ্গল উপস্থিত করিলে?
21. পরে তিনি বালকটীর উপরে তিন বার আপন শরীর লম্বমান করিয়া সদাপ্রভুকে ডাকিয়া কহিলেন, হে সদাপ্রভু, আমার ঈশ্বর, বিনয় করি, এই বালকের মধ্যে প্রাণ ফিরিয়া আসুক।
22. তখন সদাপ্রভু এলিয়ের রবে কর্ণপাত করিলেন, তাহাতে বালকটীর প্রাণ তাহার মধ্যে ফিরিয়া আসিল, সে পুনর্জীবিত হইল।
রাজাবলি ১ অধ্যায় 17
23. পরে এলিয় বালকটীকে লইয়া উপরিস্থ কুঠরী হইতে গৃহমধ্যে নামিয়া গিয়া তাহার মাতার কাছে সমর্পণ করিলেন; আর এলিয় কহিলেন, দেখ, তোমার পুত্র জীবিত।
24. তাহাতে সে স্ত্রী এলিয়কে কহিল, এখন আমি জানিতে পারিলাম, আপনি ঈশ্বরের লোক, এবং সদাপ্রভুর যে বাক্য আপনার মুখে আছে, তাহা সত্য।